চায়ের রপ্তানি বেড়েছে সাড়ে তিন গুণ

ফাইল ছবি

করোনাঝুঁকি নিয়ে চা-বাগান খোলা রেখেও উৎপাদনের প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ধরে রাখা যায়নি বিদায়ী বছরে। প্রতিকূল আবহাওয়ায় চায়ের উৎপাদন কমেছে। তবে উৎপাদন কমলেও এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি বেড়েছে সাড়ে তিন গুণ।

বৃহস্পতিবার চা বোর্ড উৎপাদনের তথ্য প্রকাশ করেছে। তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে দেশের ১৬৭টি চা-বাগান থেকে উৎপাদিত হয়েছে ৮ কোটি ৬৩ লাখ কেজি চা। এই উৎপাদন ২০১৯ সালের তুলনায় ১০ শতাংশ বা ৯৭ লাখ কেজি কম। তবে উৎপাদন কম হলেও চাহিদা কম থাকায় ঘাটতি হয়নি বাজারে। তাতে আমদানিও খুব বেশি করতে হয়নি।

চা বোর্ড বলছে, গতবারের তুলনায় উৎপাদন কমলেও লক্ষ্যমাত্রার হিসাবে উৎপাদন বেশি হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে সাত কোটি কেজি। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় উৎপাদন এক কোটি কেজি বেশি।

চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, কোভিড পরিস্থিতিতেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশের সব চা-বাগানের সার্বিক কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। উৎপাদনের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চা নিলাম কেন্দ্র চালু রাখা, সঠিক সময়ে ভর্তুকি মূল্যে সার বিতরণ, চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, রেশন ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করায় চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দেশের চা-শিল্প উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম।

কেনিয়া ছাড়া এবার বিশ্বের চা উৎপাদনকারী দেশগুলোতে উৎপাদন কমেছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চা উৎপাদনকারী দেশ ভারতে উৎপাদন কমেছে ১৪ কোটি ২১ লাখ কেজি। শ্রীলঙ্কায় উৎপাদন কমেছে ২ কোটি ৮৩ লাখ কেজি। দুই দেশেই উৎপাদন কমার হার ১০ শতাংশের বেশি। সে তুলনায় ভালো অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।

দেশে উৎপাদিত চায়ের বড় অংশই আসে মৌলভীবাজার জেলার বাগান থেকে। মোট উৎপাদিত চায়ের ৫৫ শতাংশ উৎপাদন হয় এই জেলায়। এরপর আছে হবিগঞ্জ জেলা, যেখানে উৎপাদিত হয় ২২ শতাংশ। এ ছাড়া উত্তরবঙ্গে ১০ শতাংশ, সিলেট জেলায় ৭ শতাংশ ও চট্টগ্রামে ৬ শতাংশ উৎপাদন হয়।

চা-বাগানমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শাহ আলম বলেন, চায়ের উৎপাদন কমার কারণ হলো প্রতিকূল আবহাওয়া। আবহাওয়া বা প্রকৃতির ওপর কারও হাত নেই। করোনার কারণে সেভাবে উৎপাদন ব্যাহত হয়নি।

দেশে চায়ের চাহিদা বাড়তে থাকায় দীর্ঘদিন ধরে রপ্তানি কমছিল। রপ্তানি কমতে কমতে ২০১৯ সালে ছয় লাখ কেজিতে নেমে আসে। ২০২০ সালে আবার বাড়তে শুরু করে রপ্তানি। দেশীয় রপ্তানিকারকেরা গত বছর ২১ লাখ ৭০ হাজার কেজি চা রপ্তানি করেছে। এ থেকে আয় হয়েছে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। গত দুই দশকে চা রপ্তানি আয় সবচেয়ে বেশি ছিল ২০০৮ সালে—৮৪ লাখ কেজি থেকে ৯৭ কোটি টাকা।