চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের কথা বললেন জনসন

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন
ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাজ্যের দুর্গতি যেন শেষ হচ্ছে না, একদিকে উন্নত দেশগুলোর মধ্যে কোভিডের আঘাতে সবচেয়ে বেশি জিডিপি তাদেরই কমেছে, অন্যদিকে ব্রেক্সিট নিয়ে অনিশ্চয়তা যেন কাটছে না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা ভেস্তে যেতে বসেছে। এই পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে: তিনি কি ইউরোপের সঙ্গে একত্রে থাকার জন্য ঐকমত্য খুঁজে পাবেন, নাকি উল্টো দিকে হাঁটতে শুরু করবেন।

২০২০ সাল তো মোটেও ভালো গেল না ব্রিটেনের। ২০২১ সালও যে ভালো যাবে, তেমন ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নতুন চুক্তি করতে না পারলে বিপদেই পড়বে তারা।

এই পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের হুমকি দিয়েছেন বরিস জনসন। এতে বড় বিপদেই পড়বে দেশটি। সিএনএনের বিশ্লেষণ অনুসারে সীমিত পরিসরে চুক্তি না করে ব্রিটেন যদি চুক্তি ছাড়াই বেরিয়ে যায়, তাহলে বছরে ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের ক্ষতি হবে দেশটির। এতে কোভিডের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।

এদিকে ওইসিডি বা অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের প্রধান অর্থনীতিবিদ লরেন্স বুন বলেছেন, কোভিড-১৯ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের একক বাজার থেকে বেরিয়ে যাওয়া যুক্তরাজ্যের ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত। মহামারি মোকাবিলায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং ভবিষ্যৎ বাণিজ্য নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। দেশটির আগামী কয়েক বছরের পরিস্থিতি নির্ভর করছে এই দুটি সিদ্ধান্তের ওপর।

ব্রাসেলস কয়েক মাস ধরে ব্রিটেনের সঙ্গে আন্তরিকভাবে আলোচনা করছে না। তাই তিনি মনে করছেন যে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের সময় সবার প্রস্তুত হওয়ার সময় এসেছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন

সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। ব্রিটেন এখন যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনুকূল শর্ত পাচ্ছে, এই ডিসেম্বরে তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। চলতি সপ্তাহে এ নিয়ে বৈঠকও হয়েছে, কিন্তু তাতে ফল আসেনি। এই পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন শুক্রবার বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বর্তমান যে সম্পর্ক, সে রকম সম্পর্কের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ইউনিয়নের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য চুক্তি নেই। বাণিজ্যের সিংহভাগই হয় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মৌলিক আইনের আলোকে।

বরিস জনসন বলেছেন, ব্রাসেলস কয়েক মাস ধরে ব্রিটেনের সঙ্গে আন্তরিকভাবে আলোচনা করছে না। তাই তিনি মনে করছেন যে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের সময় সবার প্রস্তুত হওয়ার সময় এসেছে।

তা সত্ত্বেও নতুন চুক্তির সম্ভাবনা এখনো আছে। এ নিয়ে যে আর আলোচনা হবে না, তেমন কথাও বলেননি জনসন। এদিকে ইইউ কমিশন প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেয়েন শুক্রবার টুইট করেছেন, তাঁর দল আগামী সপ্তাহে আরও নিবিড় আলোচনার জন্য লন্ডনে যাবে।