টিকা আসছে—এমন আশায় এখন জ্বালানি তেলের বাজারও

রয়টার্স ফাইল ছবি

আশায় আশায় বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। গতকাল বুধবার ফাইজার ও বায়োএনটেকের যৌথ উদ্যোগে তৈরি করোনার টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দেয় যুক্তরাজ্য। এতে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়বে—এমনটা আশা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো আগামী বছরও উৎপাদন সীমাবদ্ধ রাখবে—এমন আশায় বেড়েছে দাম।

অপরিশোধিত তেলের দাম ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারেলের দাম দাঁড়িয়েছে ৪৮ দশমিক ২৫ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক তেলের দাম ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়ে হয়েছে প্রতি ব্যারেল ৪৫ দশমিক ২৮ পয়েন্ট। সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, রাশিয়া ও মিত্ররা ২০২১ সালের উৎপাদন নীতি নিয়ে আলোচনা স্থগিত করেছে। গত মঙ্গলবার থেকে আজ বৃহস্পতিবার এই আলোচনা হওয়ার কথা ছিল।

বিনিয়োগকারীদের নজর এখন অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ (ওপেক) ও ওপেক প্লাসের দিকে। করোনার কারণে বছরের শুরুতে বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জ্বালানির চাহিদা ব্যাপক কমে যায়। হু হু করে কমতে থাকে দাম। পরে চলাচল কিছুটা শুরু হলেও চাহিদার আগের অবস্থায় ফিরতে এখনো অনেক দেরি। এই অবস্থায় এ বছর ৭৭ লাখ ব্যারেল করে দৈনিক উৎপাদন কম রেখেছে ওপেক দেশগুলো। আবার করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এটি অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

গত ১৯ অক্টোবর ওপেক প্লাস জোটের দেশগুলোর মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জ্বালানি তেলের বাজারে ভবিষ্যৎ সরবরাহ নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে ওপেক প্লাস সিদ্ধান্ত নেয়, ডিসেম্বর পর্যন্ত দৈনিক ৭৭ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল কম উত্তোলন করা হবে, যা পরে জানুয়ারি থেকে কমানো হবে ৫৮ লাখ ব্যারেল। এসব সিদ্ধান্তের পরেও ২ নভেম্বর বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের ব্যাপক দরপতন হয়। বিশ্বব্যাপী করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়া এবং লিবিয়ায় তেল উত্তোলন বেড়ে যাওয়া এ দরপতনের অন্যতম কারণ বলে জানান বিশ্লেষকেরা।

এক বছর ধরে করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত বিশ্ব অর্থনীতি। একটি কার্যকর টিকার দিকে তাকিয়ে রয়েছে বিশ্ব। গত মাসে টিকার বিষয়ে বেশ কয়েকটি অগ্রগতি হয়। প্রথমে মার্কিন কোম্পানি ফাইজার ও জার্মান কোম্পানি বায়োএনটেক জানায়, তাদের টিকা ৯০ শতাংশ কার্যকর। এরপর সুখবর দেয় আরেক মার্কিন কোম্পানি মডার্না। এরপর ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানায়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মিলে তাদের তৈরি করা করোনাভাইরাসের টিকা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর হতে পারে।

এর মধ্যে গতকাল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পরের সপ্তাহে রাশিয়াজুড়ে কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে একটি বড় আকারে স্বেচ্ছাসেবী টিকাদান কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। ফাইজারের টিকার অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্য। সব মিলিয়ে তেলের বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। অনিশ্চয়তা কাটছে স্বর্ণের বাজারে।