টিকা নিলেই ১০০০ ডলার ভাতা

কোভিডের টিকা নিয়ে সারা পৃথিবীতে চরম বৈষম্য শুরু হয়েছে। উন্নত দেশগুলোর হাতে বিপুল পরিমাণ টিকা মজুত থাকলেও এখনো তারা শতভাগ মানুষকে টিকাও আ্ওতায় নিয়ে আসতে পারেনি। সেই সব দেশের অনেক মানুষ টিকা নিতে চায় না। অথচ উন্নয়নশীল বা নিম্ন আয়ের মানুষেরা টিকা পাচ্ছে না।এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগ কোম্পানি ভ্যানগার্ড ঘোষণা দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কর্মীরা টিকা নিলে ১ হাজার ডলার ভাতা দেওয়া হবে। সে জন্য কর্মীদের অক্টোবর মাসের মধ্যে টিকা নিতে হবে। আবার এই ঘোষণার আগে যারা টিকা নিয়েছেন, তাঁরাও এই পুরস্কারের আওতায় পড়বেন।

এদিকে গুগল ও মাইক্রোসফটের মতো কোম্পানি কর্মীদের টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করছে। ওয়ালমার্ট ও উবার অবশ্য সম্মুখ সারির কর্মী নয়, ব্যবস্থাপনা কর্মীদের টিকা নিতে বলেছে। আমাজন ও অ্যাপল এখন পর্যন্ত এ বিষয়ক নীতি করেনি। যুক্তরাষ্ট্রে ভ্যানগার্ডের ১৬ হাজার ৫০০ কর্মী আছে। তারা বলেছে, কোভিড ঠেকানোর সবচেয়ে কার্যকর অস্ত্র হচ্ছে টিকা। এই পরিস্থিতিতে তারা কর্মীদের টিকা গ্রহণে জোর দিচ্ছে। তাদের মুখপাত্রের ভাষ্যমতে, এই পরিস্থিতিতে কর্মীরা টিকা নেওয়ার প্রমাণ দিলে প্রণোদনা দেওয়া হবে।

করোনা ভাইরাসের ডেল্টা প্রজাতি সারা পৃথিবীতে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাস খানেক আগে যুক্তরাষ্ট্রে টিকাপ্রাপ্ত মানুষের জন্য স্বাস্থ্যবিধিতে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই যুক্তরাষ্ট্রে আবার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। ফলে দেশটির সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন আবারও কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। তারা বলছে, টিকা পাওয়া ও না-পাওয়া মানুষদের আবারও বদ্ধ স্থানে মাস্ক পরতে হবে।

নিউ ইয়র্ক নগর কর্তৃপক্ষ বলেছে, রেস্তোরাঁ ও জিমনেসিয়ামের মতো স্থানে সেবা নিতে গ্রাহক ও সেবাদাতা উভয়েরই টিকা নিতে হবে। সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই নিয়ম চালু হবে। যুক্তরাষ্ট্রে টিকাদানের গতি কমে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে রাজ্য ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর চাপ বাড়ছে। কিন্তু কিছু শ্রমিক ইউনিয়ন আবার টিকাদানের ব্যাপার বাদ সেধেছে। তাদের বক্তব্য, টিকা নেওয়া বা না নেওয়া শ্রমিকের অধিকার।

এ ব্যাপাওে তাদের জোর করা যাবে না। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে মানুষকে নানা প্রণোদনা দিয়ে টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কিন্তু অনেক মানুষ টিকা নিতে অনাগ্রহী। এমনকি তারা মাস্কও পরতে চায় না। সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের সময় দেশটির অনেক স্থানে লকডাউন বিরোধী মিছিলও হয়েছে। অথচ দেশটির হাতে বিপুল পরিমাণ টিকা মজুত আছে। অনেক দেশ যেখানে টিকা পাচ্ছে না, সেখানে তাদের এই বিপুল মজুত নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ অনেকেই প্রশ্ন তুলেছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দেশটির মানুষের টিকা নিয়ে অনাগ্রহ।