টিকার সুখবরে ১২৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে ডাও জোন্স

ছবি: রয়টার্স

৩০ হাজার পয়েন্টের মাইলফলক ছুঁয়েছে ওয়াল স্ট্রিটের (যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজার) ডাও জোন্স সূচক। প্রতিষ্ঠা হওয়ার প্রায় ১২৫ বছর পর সূচকটি এই অবস্থানে এল। ১৮৯৬ সালে যাত্রা শুরু করে ডাও জোন্স সূচকটি। মার্কিন অর্থনীতির নানা চড়াই-উতরাইয়ের অন্যতম নিয়ন্ত্রক এই সূচক। এমনকি ১৯৩০ সালের মহামন্দার সূচনাই হয় এই সূচক পতনের মধ্য দিয়ে। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ডাও জোন্স সূচক প্রথম ১০ হাজার পয়েন্টের মাইলফলক স্পর্শ করে ১৯৯৯ সালের ২৯ মার্চ। এক মাসেই সূচকটি আরও ১ হাজার পয়েন্ট বেড়ে যায়। ২০১৭ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণ করার পর সূচকটি ২০ হাজার পয়েন্টে উঠে আসে। মাত্র এক বছরের মধ্যে, অর্থাৎ ২০১৮ সালের ৪ জানুয়ারি ২৫ হাজার পয়েন্টের মাইলফলক স্পর্শ করে ডাও জোন্স। তবে এরপর থেকেই ব্যাপক ঘুরপাক খাচ্ছে সূচকটি।

২০১৮ সালের শেষে ডাও জোন্স ও আরেক সূচক এসঅ্যান্ডপি ৫০০ দুটোই বেশ কমে যায়। ২০১৯ সালে এসে আবার ব্যাপক উত্থান দেখা যায়। ২০২০ সালে সারা বিশ্বের পুঁজিবাজারেই ব্যাপক প্রভাব রেখেছে কোভিড-১৯। মাঝ পর্যন্ত ব্যাপক দরপতন হয় ডাও জোন্সের। তবে সবশেষ গতকাল মঙ্গলবার সূচকটি ৩০ হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়ে যায়। কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন শিগগিরই পাওয়া যাবে এবং প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়ে আর তেমন বাধা নেই—এমন আশায় গতকাল সাড়ে ৪০০ পয়েন্ট বেড়ে এটি প্রথমবারের মতো ৩০ হাজার পয়েন্টের ঐতিহাসিক ধাপ পেরোল।

ডাও জোন্সের পাশাপাশি গতকাল বেড়েছে ওয়াল স্ট্রিটের বাকি দুটো সূচকও। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ বেড়েছে ১ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং নাসডাক সূচকটি বেড়েছে ১ দশমিক ৩১ শতাংশ। ডাও জোন্স সূচকের বৃদ্ধির পেছনে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে টেসলার শেয়ারের দর বৃদ্ধি। আর এর ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির কোম্পানি টেসলার সহপ্রতিষ্ঠাতা এলন মাস্কের সম্পদের পরিমাণও বাড়ছে হু হু করে। গতকাল বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন এলন মাস্ক।

অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের পুঁজিবাজারেও সূচক বেড়েছে গতকাল। যুক্তরাজ্যের এফটিএসই ১০০ সূচকটি ১ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। মার্কিন কোম্পানি ফাইজার, মডার্নার পর এবার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়-অ্যাস্ট্রাজেনেকা জুটির টিকার কার্যকারিতা নিয়ে আশাব্যঞ্জক ফলাফল জানা গেছে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন প্রকাশ করে তারা জানিয়েছে, ব্রিটেন ও ব্রাজিলের ট্রায়ালে করোনা প্রতিরোধে গড়ে ৭০ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে তাদের ভ্যাকসিন। আর এ খবরে ইতিবাচক ছিল যুক্তরাজ্যের পুঁজিবাজার।

আজ বুধবার এশিয়ার পুঁজিবাজারে কিছুটা মিশ্র প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। বেড়েছে জাপানের নিকেই, হংকংয়ের হ্যাংসেং ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধান সূচক। অন্যদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি ও চীনের সাংহাই কম্পোজিট সূচক কিছুটা কমেছে।