বিশ্ব জিডিপিতে বাংলাদেশের অংশ দশমিক ৩৪%

বিশ্বের মোট জিডিপিতে বাংলাদেশের অংশ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ ও ভারতের অর্থনীতি নিয়ে খুব আলোচনা হচ্ছে। মাথাপিছু মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ভারতকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) অনুমান নিয়েই এই আলোচনা। ভারত বড় অর্থনীতির দেশ। সে তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার বেশ ছোট। তারপরও বড় অর্থনীতির একটি দেশকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকের মধ্যেই বেশ কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।

বিশ্ব অর্থনীতিতে অবশ্য ভারত একটি বড় অর্থনীতির দেশ হিসেবেই পরিচিত। সে তুলনায় বাংলাদেশ অনেক পেছনে। যেমন বিশ্বের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ভারতের অংশ হচ্ছে ৩ দশমিক ২৮ শতাংশ। দেশটির মোট জিডিপি ২ দশমিক ৮৮ ট্রিলিয়ন ডলার। এক ট্রিলিয়ন হচ্ছে এক হাজার বিলিয়ন। আর এক বিলিয়ন ১০০ কোটি। অন্যদিকে বাংলাদেশের জিডিপি দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার। আর বিশ্বের মোট জিডিপিতে বাংলাদেশের অংশ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এই হিসাব ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী।

হাউমাচ ডটনেট নামের একটি প্রতিষ্ঠান বিশ্ব জিডিপির একটি হিসাব নিয়মিতভাবে প্রকাশ করে। ২০১৯ সালের জুলাই পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশিত তথ্য তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে, এই ৬ মাসে বাংলাদেশ খানিকটা এগিয়েছে। যেমন ৬ মাস আগের বিশ্ব জিডিপিতে বাংলাদেশের অবদান ছিল দশমিক ২৭ ট্রিলিয়ন ডলার, যা মোট বিশ্ব জিডিপির দশমিক ৩২ শতাংশ। তখন অবশ্য বাংলাদেশ সামান্য পিছিয়ে ছিল পাকিস্তান থেকে। যেমন সে সময় বিশ্ব অর্থনীতিতে পাকিস্তানের অংশ ছিল দশমিক ৩৬ শতাংশ। এবার তারা কমে হয়েছে দশমিক ৩২ শতাংশ।

৮৮ ট্রিলিয়ন ডলারের বিশ্ব

বিশ্ব অর্থনীতি এখন ৮৮ ট্রিলিয়ন ডলারের, ৬ মাস আগে যা ছিল ৮৬ ট্রিলিয়ন ডলারের। অবশ্য পরের ৬ মাসে যে বিশ্ব জিডিপি কমেছে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ, করোনার প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতির জিডিপি সাড়ে ৪ শতাংশ কমবে বলে প্রাক্কলন করা হচ্ছে।

শীর্ষ ১৫ দেশের দখলে

জিডিপির দিক থেকে বিশ্ব অর্থনীতিতে সবচেয়ে দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাদের অংশ ২৪ দশমিক ৪২ শতাংশ। আর পরিমাণ হচ্ছে ২১ দশমিক ৪৩ ট্রিলিয়ন ডলার। আর পরের স্থানে থাকা চীনের অংশ ১৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ (১৪ দশমিক ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার)।

এবার সম্পদ ও আয়বৈষম্যের একটি হিসাবে দেখা যাচ্ছে, উচ্চ আয়ের দেশগুলোর মোট জিডিপি পরিমাণ ৫৪ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন ডলার, যা বিশ্বের মোট জিডিপির ৬৩ দশমিক ১ শতাংশ। অন্যদিকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জিডিপি ২৪ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার বা ২৮ দশমিক ৪ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পরেই শীর্ষ ১০ বড় অর্থনীতির দেশের তালিকা করলে তা হবে যথাক্রমে জাপান (৫.৭৯%), জার্মানি (৪.৩৮%), ভারত (৩.২৮%), যুক্তরাজ্য (৩.২২%), ফ্রান্স (৩.০৯%), ইতালি (২.২৮%), ব্রাজিল (২.১%) এবং কানাডা (১.৯৮%)। এখন এর সঙ্গে যদি রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন ও মেক্সিকোকে যুক্ত করা হয়, তাহলে বিশ্ব অর্থনীতিতে এ ১৫টি দেশের অংশ হচ্ছে ৭৫ শতাংশ।

ধনীদের হাতেই সব

এবার সম্পদ ও আয়বৈষম্যের একটি হিসাবে দেখা যাচ্ছে, উচ্চ আয়ের দেশগুলোর মোট জিডিপি পরিমাণ ৫৪ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন ডলার, যা বিশ্বের মোট জিডিপির ৬৩ দশমিক ১ শতাংশ। অন্যদিকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জিডিপি ২৪ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার বা ২৮ দশমিক ৪ শতাংশ। নিম্নমধ্যম আয়ের দেশগুলোর জিডিপি ৬ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার বা ৭ দশমিক ৮ শতাংশ।

আর নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জিডিপি দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলার, যা মোট বিশ্ব জিডিপির দশমিক ৭ শতাংশ। তাহলে দেখা যাচ্ছে, বিশ্ব জিডিপিতে দরিদ্র ৭০ কোটি ৫০ লাখ মানুষের অবদান মাত্র দশমিক ৬ শতাংশ।