বিশ্বে প্রতি ৫ জনে ১ জন বেকার দক্ষিণ এশীয়

বেকার
বেকার

চলতি বছরে সারা বিশ্বে বেকার লোকের সংখ্যা বাড়বে। ২০১৯ সালে সারা বিশ্বে ১৮ কোটি ৮০ লাখ বেকার ছিল। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়াবে ১৯ কোটি ৩ লাখে। এক বছরের ব্যবধানে সারা বিশ্বে প্রায় ২৩ লাখ বেকার বাড়বে।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ২০২০ সালের ‘ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল আউটলুক’ প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

আইএলওর প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২০ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ লোক বেকার থেকে যাবে। এর মানে, সারা বিশ্বের বেকারদের মধ্যে প্রতি পাঁচজনে একজন দক্ষিণ এশীয়। যথেষ্ট দক্ষতা সত্ত্বেও মনমতো কাজ পাচ্ছেন না দক্ষিণ এশিয়ার ৭ কোটি ৮৯ লাখ তরুণ-তরুণী। তাঁরা জীবিকার তাগিদে অপেক্ষাকৃত কম মজুরির কাজ করেন। তাঁদের ‘আন্ডারইউটিলাইজেশন’ শ্রমশক্তি বলা হয়।

সার্বিকভাবে বিশ্বের বেকার পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। ২০১৯ সালে সারা বিশ্বে বেকার ছিল ১৮ কোটি ৮০ লাখ। আইএলওর পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ বছর তা বেড়ে হবে ১৯ কোটি ৩ লাখ। আগামী বছর তা হবে ১৯ কোটি ৪৬ লাখ।

আইএলওর বেকারের সংজ্ঞা হলো কাজ খুঁজছেন, কিন্তু সপ্তাহে এক ঘণ্টাও মজুরির বিনিময়ে কাজ করতে পারেন না, এমন ব্যক্তিকে বেকার হিসেবে ধরা হয়।

আইএলও বলছে, প্রতি পাঁচজন কর্মোপযোগী মানুষের মধ্যে তিনজন মজুরির বিনিময়ে কাজ করেন। তবে তাঁদের মধ্যে ৪৫ শতাংশ কর্মজীবী মানুষ পর্যাপ্ত মজুরি পান না। তাঁরা নিজ নিজ দেশের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধাও চাহিদামতো পান না। আইএলও আরও বলছে, পছন্দমতো ও শোভন কাজের সুযোগ সৃষ্টি করাই এখন বিশ্বজুড়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

আইএলওর প্রতিবেদনে বিশ্বের কোন অঞ্চলে এ বছর বেকার কত থাকবে, তার বিবরণও দেওয়া হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি বেকার থাকবে এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে। এই অঞ্চলে ৮ কোটি ৮৭ লাখ বেকার থেকে যাবে। এই হিসাবে দক্ষিণ এশিয়ার বেকাররাও আছেন। এরপর আফ্রিকায় ৩ কোটি ৪১ লাখ বেকার থাকবেন। এ ছাড়া লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ২ কোটি ৬৪ লাখ, ইউরোপে ২ কোটি ২০ লাখ, উত্তর আমেরিকায় ৭৬ লাখ, আরব দেশে ৪৮ লাখ, কেন্দ্রীয় ও পশ্চিম এশিয়ায় ৭৩ লাখ বেকার থাকবেন।

আইএলওর প্রতিবেদনে দেশভিত্তিক শ্রমশক্তি, কর্মজীবী ও বেকারের হিসাব দেওয়া হয়নি। তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ (২০১৬-১৭) অনুযায়ী, সারা দেশে তখন ২৬ লাখ ৭৭ হাজার বেকার লোক ছিলেন। এই বেকারদের মধ্যে ১০ লাখ ৪৩ হাজার তরুণ-তরুণী উচ্চমাধ্যমিক কিংবা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেও চাকরি পাচ্ছেন না। বেকারদের মধ্যে ৩৯ শতাংশই এমন শিক্ষিত বেকার। অন্যদিকে যাঁরা পড়াশোনা করতে পারেননি, মোট বেকারদের মধ্যে তাঁদের হার সবচেয়ে কম, মাত্র ১১ দশমিক ২ শতাংশ।