ভারতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার হুমকি দিল ব্রিটিশ জ্বালানি সংস্থা

ভারতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার হুমকি দিল ব্রিটিশ জ্বালানি সংস্থা কেয়ার্ন এনার্জি।
ছবি: রয়টার্স

ভারতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার হুমকি দিল ব্রিটিশ জ্বালানি সংস্থা কেয়ার্ন এনার্জি। দীর্ঘদিন ধরে চলা করপোরেট কর মামলায় জিতে এই হুমকি দিল জ্বালানি সংস্থাটি। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

অন্যায়ভাবে পুরোনো লেনদেনের ওপর কর চাপানোর অভিযোগে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা আদালতে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল কেয়ার্ন এনার্জি। ২৪ হাজার ৫০০ কোটি রুপি দাবির ওই মামলায় আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা আদালতে (আইসিজে) হেরেছে ভারত। যার জেরে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার কোটি রুপি বা ১২০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ভারতকে। ওই ক্ষতিপূরণ না দিলে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে বলে এবার হুমকি দিল কেয়ার্ন। ইতিমধ্যে বাজেয়াপ্ত করা যায়, এমন সম্পদ চিহ্নিত করতে শুরু করেছ তারা।

ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, দুই পক্ষের এই বিতর্কের সূত্রপাত ২০০৬-০৭ সালে। সংস্থার অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া চলার সময় কেয়ার্ন ইন্ডিয়ার হাতে কেয়ার্ন ইন্ডিয়া হোল্ডিংসের শেয়ার তুলে দিয়েছিল মূল সংস্থা কেয়ার্ন এনার্জি। এই প্রক্রিয়ায় মূলধনী আয়ের ওপর কর এড়িয়ে গেছে কেয়ার্ন এনার্জি—এ অভিযোগে সংস্থার কাছে ২৪ হাজার ৫০০ কোটি রুপি কর দাবি করে আয়কর বিভাগ। কর দিতে অস্বীকার করে ইনকাম ট্যাক্স অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল (আইটিএটি) এবং দিল্লি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে কেয়ার্ন সংস্থা। আইটিএটিতে চলতে থাকা মামলায় কেয়ার্ন হেরে যায়।

২০১১ সালে কেয়ার্ন ইন্ডিয়াকে অধিকাংশ শেয়ার বেদান্তের কাছে বিক্রি করে দেয় কেয়ার্ন এনার্জি। তবে প্রায় ১০ শতাংশ শেয়ার নিজেদের হাতে রেখেছিল তারা। বকেয়া কর নিয়ে আইনি লড়াই চলার মধ্যেই ২০১৪ সালে ওই শেয়ার এবং ডিভিডেন্ড বাজেয়াপ্ত করে ভারতের আয়কর দপ্তর। তারপরই আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতের দ্বারস্থ হয় কেয়ার্ন। কাগজপত্র যাচাই, ভারত সরকারের আইন ও চুক্তিপত্র বিশ্লেষণ করে সর্বসম্মতিক্রমে কেয়ার্নকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

রায়ে বলা হয়েছে, ব্রিটেন-ভারত দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ চুক্তির বিধি ভেঙেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এই রায়ের ফলে ভারত সরকার ব্রিটিশ কোম্পানি কেয়ার্নের কাছে দাবি করা ২৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলার পাওয়ার কোনো পথ থাকে না; বরং ভারতকে ৮ হাজার কোটি রুপি জরিমানা করেন আদালত।