মার্কিন ধনীর মাত্র ১ শতাংশের আয়কর ফাঁকির পরিমাণ এত

নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, গত বছর ২০ শতাংশের বেশি মার্কিন ধনীর পুরো আয় অভ্যন্তরীণ রাজস্ব পরিষেবায় প্রদর্শন করা হয়নি, যা অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। অন্যতম শীর্ষ এই ধনীদের ১ শতাংশ যে আয়কর ফাঁকি দেন, তার পরিমাণ হিসাব করলে বছরে দাঁড়ায় ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১৪ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। তাঁরা তাদের আয়ের এক–পঞ্চমাংশ ইন্টারনাল রেভিনিউ সার্ভিসকে (আইআরএস) প্রদর্শন করেন না।

গবেষকেরা বলেন, যদিও বেতনসহ আয়ের অনেক ধরনের তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে আইআরএসে চলে যায় এবং সহজেই নিরীক্ষণ করা যায়। তবে ব্যক্তিগত ব্যবসায়ের লাভ এবং বিনিয়োগ অংশীদারত্বের লাভ নির্ণয় করা বেশ কঠিন। আর এভাবেই চালাকি করেন ধনীরা।

গবেষণাটি আইআরএস গবেষক জন গায়টন ও প্যাট্রিক ল্যাঙ্গিয়েইগ এবং তিনজন অধ্যাপক দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। এই অধ্যাপকেরা হলেন লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের ড্যানিয়েল রেক, কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাক রিখ এবং বার্কলেতে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যাব্রিয়েল জুকম্যান। তাঁরা মনে করছেন মার্কিন ধনীরা কর ফাঁকি দেওয়ার নতুন উপায় খুঁজে বের করেছেন।

গবেষকেরা পরামর্শ দেন যে আয়কর ফাঁকি ঠেকাতে আইআরএসকে আরও গভীর নিরীক্ষণ করতে হবে এবং সংস্থার সক্ষমতা বাড়াতে হবে। সম্প্রতি প্রকাশিত ফেডারেল রিজার্ভের তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালে এই ১ শতাংশের সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ৪ ট্রিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের পারিবারিক আয় বেড়েছে বছরে ৪৭ হাজার ১০০ কোটি ডলার, যা তার আগের বছরের চেয়ে ৪ শতাংশ বেশি।

গত বছর উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ। ট্রাম্প ১৫ বছরের মধ্যে ১০ বছর মোটেও কোনো আয়কর দেননি। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ২ বছরে মাত্র ৭৫০ ডলার ফেডারেল আয়কর দেন তিনি। দুই দশকের বেশি সময়ের ট্যাক্সের বিবরণী থেকে তথ্য নিয়ে এটি ফাঁস করে ‘নিউইয়র্ক টাইমস’। ট্রাম্পের মতো অনেক ধনী মার্কিন নাগরিকই কর ফাঁকি দেওয়ার নিত্যনতুন পন্থা নেন।

কর ফাঁকি দেওয়া যে দেশটিতে অবৈধ, এতে কোনো বিভ্রান্তি নেই, তবে কর এড়িয়ে যাওয়া সেভাবে অবৈধ নয়, যদিও অনেকেই এটিকে অন্যায্য বলে মনে করেন। আসলে কর এড়াতে সাধারণ মার্কিন নাগরিকদের চেয়ে ধনী করদাতাদের বেশি উপায় থাকে। গবেষকেরা আইআরএসের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, ধনী আমেরিকানরা হলেন অপ্রদর্শিত আয়ের বৃহত্তম উৎস। ন্যাশনাল ট্যাক্স জার্নালে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, শীর্ষস্থানীয় আমেরিকান করদাতাদের মধ্যে প্রায় ১ শতাংশের কাছে অপ্রদর্শিত আয়ের ৩৪ শতাংশ রয়েছে। সূত্র: ফরচুন