যুক্তরাষ্ট্রকে হটিয়ে চীন এখন বিশ্বের বৃহত্তম জিডিপি

বিদায়ী বছরে করোনাজনিত মন্দা বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের সংকোচন ঘটিয়েছে। এটাকে বিশ্বব্যাংক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ–পরবর্তীকালে বৃহত্তম অর্থনৈতিক মন্দা হিসেবে চিহ্নিত করেছে, যা ছোট–বড়নির্বিশেষে সব অর্থনীতির ওপর কমবেশি প্রভাব ফেলেছে। এতে দেশগুলোর মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) হেরফের হয়েছে। বিশেষ করে শীর্ষ দশ অর্থনীতিতে কিছু উত্থান–পতন দেখা গেছে। যেমন চার দশক পরে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির আসনটি হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় থেকে এক নম্বর অবস্থানে উঠে এসেছে চীন। চীন–যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শীর্ষ দশের বাকি আট দেশও যেভাবে ২০২০ সাল পার করল, তা ২০২১ সালেও অব্যাহত থাকবে।

২০২০ সালে চীনের জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৪৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপির আকার দাঁড়ায় ২২ দশমিক ৩২ ট্রিলিয়ন ডলার। নতুন বছর মানে ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপির আকার হবে ২৩ দশমিক ১৮ ট্রিলিয়ন ডলার। এ বছরে চীনা জিডিপি প্রাক্কলন করা হয়েছে ৩১ দশমিক ৮৫ ট্রিলিয়ন ডলার। উল্লেখ্য, এক লাখ কোটিতে এক ট্রিলিয়ন হয়।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ১৯৮০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৪০ বছরের ঐতিহাসিক তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণের ভিত্তিতে বিশ্বের শীর্ষ দশ জিডিপি নিয়ে ২০২১ সালের জন্য পূর্বাভাস দিয়েছে হাউমাচ ডট নেট নামে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। ১৯৮০ সালের প্রথম তালিকায় শীর্ষস্থান পায় যুক্তরাষ্ট্র। তখন দেশটির জিডিপির আকার ছিল ২ দশমিক ৮৬ ট্রিলিয়ন ডলার। চীন তখন শীর্ষ দশেই ছিল না। পরের দশকে, অর্থাৎ ১৯৯০ সালে চীন শীর্ষ দশে উঠে আসে।

গত কয়েক দশকে জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে এশিয়ার অনেকগুলো উন্নয়নশীল দেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটেছে। এর মধ্যে চীন ছাড়া ভারত ও ইন্দোনেশিয়া শীর্ষ দশে রয়েছে। এশিয়ার উন্নতশীল দেশ জাপান ১৯৮০ ও ১৯৯০ সালে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। ২০১০ সাল থেকে এটি চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। ইন্দোনেশিয়া প্রথমবারের মতো ২০২০ সালে সপ্তম স্থানে ওঠে এবং ২০২১ সালেও এখানেই থাকবে। নতুন বছরে ভারত, জাপান ও ইন্দোনেশিয়ার জিডিপির আকার হবে যথাক্রমে ১৩ দশমিক ৫৬ ট্রিলিয়ন, ৬ দশমিক শূন্য ৪ ট্রিলিয়ন ও ৪ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার।

বিগত চার দশকে বিশ্বের শীর্ষ ১০ জিডিপি তালিকা থেকে তিনটি দেশ বাদ পড়েছে। দেশগুলো হচ্ছে এশিয়ার সৌদি আরব, ইউরোপের ইতালি ও উত্তর আমেরিকার মেক্সিকো। সৌদি আরব ১৯৮০ সালে দশম স্থানে ছিল এবং পরের দশকেই, অর্থাৎ ১৯৯০ সালে বাদ পড়ে। মেক্সিকো বাদ পড়ে ২০০০ সালে। সেই বছর তালিকায় স্থান পায় রাশিয়া (সপ্তম)। ২০২০ সালে বাদ পড়ে ইতালি, আর তালিকায় ঢোকে ইন্দোনেশিয়া (সপ্তম)। ক্রমাবনতির ধারায় ফ্রান্স করোনার বছরে দশম স্থানে নেমে গেছে, যা ২০২১ সালেও অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া ২০১০ থেকে যুক্তরাজ্য নবম ও জার্মানি পঞ্চম স্থানে আটকে আছে।