যুক্তরাষ্ট্রে খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোয় এখন নিত্যপণ্যের সংকট

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিটেইলার বা খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো মন্দা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। বরং পণ্যের অভাবে তাদের সংকট বেড়েছে। এসব দোকান আগে যেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীতে পরিপূর্ণ থাকত সেখানে এখন বেশ ফাঁকা। এতে ক্রেতাদের অসন্তোষ বাড়ছে। অসন্তুষ্ট ক্রেতাদের অনেকেই টুইটারে বিভিন্ন দোকানের খালি তাকের ছবি শেয়ার করে নিজেদের ক্ষোভের কথা জানাচ্ছেন। খবর সিএনএনর।

করোনার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে রিটেইলার বা খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বর্তমানে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী দুধ, রুটি, মাংস ও বোতলজাত স্যুপের মতো দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মিলছে না। প্রতিষ্ঠানগুলো দোকানের খালি তাক পরিষ্কার করে নতুন পণ্য তোলার অপেক্ষায় আছে। সে জন্য কিছুদিন ধরে অসন্তুষ্ট ক্রেতারা টুইটারে ট্রেডার জো, জায়ান্ট ফুডস বা পাবলিক্সের মতো সুপারমার্কেট তথা খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর খালি তাকের ছবি টুইটারে শেয়ার করে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

সিএনএন জানায়, করোনাভাইরাসের নতুন ধরন অমিক্রনের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় পণ্য সরবরাহকারী কর্মী ও পরিবহনসংকট, বিরূপ আবহাওয়া ও মানুষের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনের কারণে নিত্যপণ্যের ব্যবসায়ে মন্দাবস্থা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে অমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে অনেক সরবরাহকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়ায় পণ্য পরিবহনের সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে। এ খাতে কর্মীর ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ কারণে সারা দেশে ঠিকভাবে পণ্য সরবরাহ হচ্ছে না। তাই খুচরা বিক্রেতাদের তাকগুলো আবার নিত্যপণ্যে ভরে উঠছে না।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল গ্রোসার অ্যাসোসিয়েশন জানায়, দেশটির খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম জনশক্তি নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে অনেক দোকানে কর্মীসংখ্যা অর্ধেকে নেমে গেছে।
দেশটির অন্যতম গ্রোসারি স্টোর অ্যালবার্ট সন্সের প্রধান নির্বাহী বিবেক শঙ্করন বলেন, পণ্যের ঘাটতি সত্ত্বেও আমাদের বিক্রয়কেন্দ্রগুলো ক্রেতাদের পছন্দমতো পণ্য দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু অমিক্রণের কারণে আগামী চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে পণ্য সরবরাহের সংকট আরও তীব্র হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে পণ্য পরিবহনে সাম্প্রতিক সময়ের আবহাওয়া বিপর্যয়ের প্রভাব পড়েছে। দেশটির ভোক্তা–প্রবণতা বিশ্লেষক ও সুপারমার্কেটগুরু ডটকমের সম্পাদক ফিল লেম্পার্ট বলেন, ওই সব অঞ্চলে আবহাওয়ার বিপর্যয় পণ্য পরিবহন আরও কঠিন করে তুলেছে। ফলে পণ্যের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন ও খরার কারণে গম, ভুট্টা ও সয়াবিন এবং ব্রাজিলে কফি উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ফিল লেম্পার্ট আরও বলেন, লকডাউনের মধ্যে অনেক মানুষের বাড়িতে রান্নাবান্না করা এবং খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়েছে। তাঁরা সব সময় বাড়িতে একই জিনিস খেতে চান না, রান্নায় ভিন্নতা আনার চেষ্টা করেন। এ জন্য আরও বেশি খাদ্যপণ্য কিনতে চান তাঁরা। এটাও খাদ্যপণ্যের ঘাটতি তৈরি করছে।