৮ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে টপকে যাবে চীন

২০২৮ সালের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রকে টপকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতি হয়ে উঠবে চীন।
ছবি: রয়টার্স

২০২৮ সালের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রকে টপকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতি হয়ে উঠবে চীন। অর্থাৎ আগে যা ধারণা করা হচ্ছিল, চীনের উত্থানটা হচ্ছে তার চেয়েও অনেক দ্রুত। এর আগে মনে করা হচ্ছিল, ২০৩৩ সালে এই শীর্ষ অবস্থান আসবে চীনের।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর) বলছে, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় চীনের ‘দক্ষ’ পরিচালন আগামী বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের তুলনায় দেশটির তুলনামূলক প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে দেবে। এ ছাড়া ভারতও এগোবে তরতর করে। ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত হয়ে উঠবে বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতি। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।  

প্রতিবছরের ২৬ ডিসেম্বর বিশ্ব অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ প্রকাশ করে সিইবিআর। যদিও কোভিড-১৯–এ বিশ্বের প্রথম আক্রান্ত দেশ চীন। তবে তারা দ্রুত এবং অত্যন্ত কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে এই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করে। অন্যদিকে ইউরোপের দেশগুলো তা পারেনি। চীনের ইউরোপের দেশগুলোর মতো দ্বিতীয়বারের মতো লকডাউনে যেতে হয়নি। লকডাউন পদক্ষেপ একটি দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত করে দেয়।
চীনের এই সাফল্যের কারণে অন্য বড় অর্থনীতির চেয়ে এটি ২০২০ সালে অর্থনৈতিক মন্দা এড়াতে পেরেছে। এ বছর ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির মুখ দেখবে বলেও আশা করা হচ্ছে। অপর দিকে মার্কিন অর্থনীতি মহামারির কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। নিশ্চিত আক্রান্তের সংখ্যাও প্রায় ২ কোটি।  

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে একটি মহামারি পুনরুদ্ধারের পরে মার্কিন অর্থনীতি ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ১ দশমিক ৯ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে এবং তার পরের বছরগুলোতে ধীরে ধীরে প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৬ শতাংশ হয়ে যাবে। অন্যদিকে চীনা অর্থনীতি ২০২৫ সাল পর্যন্ত বছরে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ হারে বাড়বে।

নানা ধরনের আর্থিক নীতি এবং একটি বিশাল প্রণোদনার আকার দেখেই দেশটির অর্থনৈতিক ক্ষতি অনুমান করা যায়। আবার নতুন প্রণোদনা প্যাকেজের কথা বলা হচ্ছে। যদিও এটি নিয়ে রাজনৈতিক মতবিরোধ চলছে। আর মতবিরোধ নতুন বছরে দেশটির প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষকে বেকারত্বের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
বরাবরই বিশ্ব আলোচনায় থাকত যুক্তরাষ্ট্র ও চীন এই দুই মহারথীর দ্বৈরথ। সিইবিআরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারি ও এর সঙ্গে সম্পর্কিত অর্থনৈতিক পরিণতি প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে চীনের পক্ষে নিয়ে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে একটি মহামারি পুনরুদ্ধারের পরে মার্কিন অর্থনীতি ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ১ দশমিক ৯ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে এবং তার পরের বছরগুলোতে ধীরে ধীরে প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৬ শতাংশ হয়ে যাবে। অন্যদিকে চীনা অর্থনীতি ২০২৫ সাল পর্যন্ত বছরে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ হারে বাড়বে। ২০২৬ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হবে গড়ে সাড়ে ৪ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষেত্রে চীনের অংশীদারত্ব ২০০০ সালে মাত্র ৩ দশমিক ৬ ছিল। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০২৩ সালের মধ্যে দেশটি একটি ‘উচ্চ-আয়ের অর্থনীতি’ হয়ে উঠবে। চীনা অর্থনীতি কেবল করোনা প্রথমে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেই লাভবান হয়নি, এর আগ্রাসী নীতিনির্ধারণী পদক্ষেপ উৎপাদন বাড়াচ্ছে।