রিটার্ন জমার শেষ দিন আজ, সময় বাড়ানোর চাপ

আয়কর রিটার্ন দাখিল
ফাইল ছবি

ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা বা রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে আজ বুধবার। কিন্তু বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও পেশাজীবী সংগঠন সময় বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছে। গতকাল মঙ্গলবার দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় আরও এক মাস বাড়ানোর অনুরোধ করেছে। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন জমার সময় বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছে সংগঠনটি। 

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, করোনার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ও চলমান বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটময় পরিস্থিতি এবং শিল্প উৎপাদন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও সেবা খাত বিরাট চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করছে। আর্থিক খাতে বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে সময়মতো রিটার্ন দাখিল করা অনেকের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তাই রিটার্ন জমার সময় এক মাস বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করে এফবিসিসিআই। 

এর আগে বিভিন্ন চেম্বার ও সমিতি এবং আয়কর আইনজীবীরা সময় বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে এনবিআরে চিঠি দিয়েছেন। জানা গেছে, এবার অন্যবারের তুলনায় রিটার্ন কম জমা পড়েছে। এনবিআরের সর্বশেষ হিসাব অনুসারে, গত সপ্তাহ পর্যন্ত ৯ লাখ রিটার্ন জমা পড়েছে। 

সরেজমিন

গতকাল সকাল থেকেই রাজধানীর সেগুনবাগিচার বিভিন্ন কর কার্যালয়ে করদাতাদের ভিড় দেখা গেছে। এ সময় কর জমা দিতে ব্যাংকের লাইনে না দাঁড়িয়ে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা বা এমএফএস প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও অনেকে আয়কর জমা দিচ্ছেন। 

সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের নিজাম টেলিকমের মালিক মো. মুহিউদ্দীন বলেন, ‘অনেকে ব্যাংকে গিয়ে লাইনে দাঁড়াতে চান না। সে ক্ষেত্রে করের টাকার পরিমাণ জানালে আমরা পরিশোধ করে দিই। তবে আমরা শুধু পেমেন্ট সেবা দিচ্ছি। আমাদের এখানে রিটার্ন পূরণ করে দেওয়ার কোনো সেবা নেই।’

সেগুনবাগিচায় কর অঞ্চল-১০-এ আয়কর রিটার্ন জমা দিতে আসেন তরুণ ব্যবসায়ী হাসিবুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে রিটার্ন দেওয়ার অভিজ্ঞতা ছিল। টাকাপয়সা মোবাইলে জমা দিয়েছি, তাতে কাজ কিছুটা সহজ হয়েছে।’

অনেকে এখনো সনাতন পদ্ধতিতে বিশ্বাসী। রাজধানীর মিরপুর থেকে আসা আবুল খায়ের বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা সবাই বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত। পরিবারের সবার রিটার্ন জমা দিতে যানজট ঠেলে আমাকে আসতে হলো। বাসা থেকে ফরম পূরণ করে এনেছি।’

গতকাল দিনভর আয়কর রিটার্ন জমা দিতে সেগুনবাগিচা এলাকার বিভিন্ন কর অঞ্চলে বেশ ভিড় দেখা গেছে। দিনভর পুরো এলাকায় ছিল যানজট। আয়কর কর্মকর্তাদেরও বেশ ব্যস্ত দেখা গেল। ভিড় বেশি থাকায় লম্বা সারিতে দাঁড়িয়ে রিটার্ন জমা দিয়েছেন অনেকে।