নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে দ্বৈত কর পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধে নতুন চুক্তি

বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং নেদারল্যান্ডসের রাজস্ববিষয়ক মন্ত্রী এম এল এ ভ্যান রিজ আজ মঙ্গলবার ঢাকায় অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি চুক্তিতে সই করেনছবি: অর্থ মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে

নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশের মধ্যে ৩১ বছর আগে সম্পাদিত চুক্তিতে কোনো ধরনের কারিগরি সেবার বিপরীতে কর দেওয়া-নেওয়ার বিধান ছিল না। এখন এ ধরনের সেবার বিপরীতে ১০ শতাংশ কর আরোপের বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া আগের চুক্তিতে উভয় দেশের রাষ্ট্রমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর সুদ আয় ছিল করমুক্ত। এখন শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আয়কে করমুক্ত রাখা হয়েছে। এ ধরনের ৩৩টি আর্টিকেল যুক্ত করে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে দ্বৈত কর পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধ বিষয়ে নতুন চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ।

৩১ আর্টিকেলের আগের চুক্তিটি সই হয়েছিল ১৯৯৩ সালের ১৩ জুলাই। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং নেদারল্যান্ডসের রাজস্ববিষয়ক মন্ত্রী এম এল এ ভ্যান রিজ আজ মঙ্গলবার ঢাকায় অর্থ মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজ নিজ দেশের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন। এ সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, ঢাকায় নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স সঞ্জা কুইপ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত দ্বৈত কর পরিহারবিষয়ক চুক্তিগুলোতে অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। তা দূর করতে এবং বাংলাদেশের স্বার্থ সমুন্নত রাখতে চুক্তিগুলো সংশোধন করা হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে নতুন চুক্তিটি হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কোম্পানি বিক্রি করে চলে গেলে বা শেয়ার হস্তান্তরের ফলে মূলধনি মুনাফা অর্জিত হলে নেদারল্যান্ডসের কোম্পানির ক্ষেত্রে এত দিন কর আরোপ করা ছিল না। নতুন চুক্তিতে কর আরোপ করা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, খেলাপি কোম্পানি থেকে কর দাবি আদায়ে উভয় দেশ পরস্পরকে সহযোগিতা করবে।

অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ডসের স্থান চতুর্থ। আর দেশটি বাংলাদেশের নবম বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ২০০ কোটি ডলারের বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ ২৫৬ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি এফডিআই পায়। এর মধ্যে ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ, অর্থাৎ ৪০ কোটি ডলারের বিনিয়োগই আসে নেদারল্যান্ডস থেকে। তাদের বিনিয়োগের অন্যতম খাত হলো জ্বালানি, চামড়া, সিমেন্ট ইত্যাদি।

বাংলাদেশ থেকে নেদারল্যান্ডসে রপ্তানি করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে নিটওয়্যার, ওভেন, গার্মেন্টস, গলদা চিংড়ি, জুতা, বস্ত্র, চামড়াজাত পণ্য, বাইসাইকেল ইত্যাদি। আর সেই দেশ থেকে আমদানি করা হয় মূলধনি যন্ত্রপাতি, শাকসবজি, জীবিত প্রাণী (পশু ও পাখি), খনিজ দ্রব্য, ওষুধ, প্লাস্টিক, রাবার ইত্যাদি।