আমদানি কমেছে ৭৭%, রপ্তানি কমে অর্ধেক

আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি কমেছে
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের বাণিজ্যে ধস নেমেছে। সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ স্থলবন্দরের পণ্য আমদানি প্রায় ৭৭ শতাংশ কমে গেছে। আর রপ্তানি কমে প্রায় অর্ধেকে নেমেছে।

স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ বন্দর দিয়ে প্রায় ৬৬ কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২২২ কোটি টাকা কম। একই অর্থবছরে এ বন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়েছে ৩৭৬ কোটি ২৩ লাখ টাকার পণ্য, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৩০৪ কোটি টাকা কম। এক বছরের ব্যবধানে আমদানি-রপ্তানি কমেছে ৫২৬ কোটি টাকার।

এ বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, ডলার-সংকট, মাছসহ বিভিন্ন রপ্তানি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, রপ্তানিবিমুখতা ও সিন্ডিকেটের কারণে এ বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ধস নেমেছে।

ডলার-সংকট, পূর্ব ভারতের আসাম ও গুয়াহাটির সঙ্গে ত্রিপুরার রেলযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি এবং বাংলাদেশে পণের দাম বেড়ে যাওয়ায় স্থলবন্দরকেন্দ্রিক আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ধস নেমেছে।
মো. শফিকুল ইসলাম, আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক

আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ডলার-সংকট, পূর্ব ভারতের আসাম ও গুয়াহাটির সঙ্গে ত্রিপুরার রেলযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি এবং বাংলাদেশে পণের দাম বেড়ে যাওয়ায় স্থলবন্দরকেন্দ্রিক আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ধস নেমেছে।

জানা গেছে, সর্বশেষ অর্থবছরে আমদানির বিপরীতে প্রায় ৫৬ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। অথচ এর আগের অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাতে শুল্ক আদায় হয়েছিল প্রায় ৮ কোটি টাকা। এ স্থলবন্দর দিয়ে মূলত গম, পাথর, ভুট্টা ও পেঁয়াজ আমদানি হয়। তবে রপ্তানির তুলনায় আমদানির পরিমাণ খুবই কম।

২০১৬-১৭ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত অর্থাৎ ছয় বছরে ৩৫৯ কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়। তার বিপরীতে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকা। গত ছয় অর্থবছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি হয়েছিল ২০২১-২২ অর্থবছরে। ওই বছর প্রায় ২৮৮ কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়েছিল।

অন্যদিকে এ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি হওয়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে মাছ, পাথর, সিমেন্ট, শুঁটকি, প্লাস্টিক পণ্য, পানীয়, তুলা, প্লাস্টিকের ফার্নিচার, মেলামাইন সামগ্রী, পিভিসি পাইপ, পিভিসি দরজা, ডিরফরমেট বার ধরনের পণ্য। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে এ স্থলবন্দর দিয়ে ৩৭৬ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়। আগের অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৬৮০ কোটি টাকা।

আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক আতিকুল ইসলাম বলেন, এ বন্দরে রাজস্ব আয় নির্ভর করে আমদানির বাণিজ্যের ওপর। সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ বন্দরে আমদানি কম হয়েছে। তাই রাজস্ব আদায়ও কমে গেছে। আমদানি বাড়াতে বন্দরের ব্যবসায়ীদের দেওয়া তালিকা ধরে সংশ্লিষ্ট দপ্তর কাজ করছে। তিনি জানান, এই বন্দর দিয়ে ১৯৯৪ সালে আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়।