দেশের বাজারে ৭ ব্র্যান্ডের সবচেয়ে দামি মোটরসাইকেল কোনগুলো

দীর্ঘদিনের অপেক্ষা শেষে অবশেষে বাংলাদেশের সড়কে ৩৫০ সিসি (ইঞ্জিনক্ষমতা) পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। এত দিন পর্যন্ত দেশে ১৬৫ সিসির ওপর মোটরসাইকেল বাজারে ছাড়ার সুযোগ ছিল না। তবে ১৬৫ সিসির মধ্যেই বর্তমানে দেশের বাজারে রয়েছে বেশ কিছু দামি মোটরসাইকেল।

বর্তমানে দেশে ইয়ামাহা, কেটিএম, হোন্ডা, সুজুকি, বাজাজ, টিভিএস, হিরো ইত্যাদি ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল পাওয়া যাচ্ছে। ব্র্যান্ডগুলোর নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র বা তাদের অনুমোদিত বিভিন্ন বিক্রয়কেন্দ্রে মিলছে এসব বাইক। ব্র্যান্ডভেদে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৬ লাখ টাকার বেশি মূল্যের মোটরসাইকেলও রয়েছে।

দেশের বাজারে চলতি বছরে দামের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে, এমন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এমন সাতটি মোটরসাইকেলের বিবরণ থাকছে এ প্রতিবেদনে।

ইয়ামাহার আর-১৫ এম মডেলের মোটরসাইকেল
ছবি এসিআই মোটরসের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

ইয়ামাহা আর-১৫ এম

জাপানি ব্র্যান্ড ইয়ামাহার রয়েছে বেশ কিছু দামি মোটরসাইকেল। রেসিং ধরনের এসব মোটরসাইকেল তরুণ-যুবক সব বয়সীর কাছেই বেশ জনপ্রিয়। ইয়ামাহার দেশীয় একমাত্র পরিবেশক ও যৌথ কারিগরি সহযোগী এসিআই মোটরস।

ইয়ামাহার মোটরসাইকেলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দামি হচ্ছে ইয়ামাহা আর-১৫ এম। ২০২২ সালের মে মাসে এটি বাজারে আসে। ছয় গিয়ারের এই মোটরসাইকেলটি প্রতি লিটার জ্বালানি খরচ করে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার পথ (মাইলেজ) পাড়ি দিতে সক্ষম। এ ছাড়া চার ভালভসমৃদ্ধ মোটরসাইকেলটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৪০ কিলোমিটার গতিতে ছুটে চলতে পারে।

ইয়ামাহার আর-১৫ এম মোটরসাইকেলটি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬ লাখ ১০ হাজার টাকায়।

কেটিএমের ডিউক ১২৫ মডেলের মোটরসাইকেল
ছবি– কেটিএমের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

কেটিএম ডিউক ১২৫

দেশে কেটিএম ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল বাজারজাত করছে রানার অটোমোবাইলস। রেসিং ধরনের মোটরসাইকেলের জন্য অস্ট্রিয়ান ব্র্যান্ড কেটিএম বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশি মোটরসাইকেলপ্রেমীদের কাছেও বেশ পছন্দের।

বর্তমানে কেটিএম ডিউক ১২৫ মডেলের বাইকটি সবচেয়ে দামি। ১২৫ সিসির স্ট্রিট রেসিং ধরনের এই মোটরসাইকেলটিকে কেটিএমের ৩৯০ সিসি বাইকের একটি মিনি এডিশনও বলেন অনেকে।

সাড়ে ১৩ লিটারের ফুয়েল ট্যাংকের মোটরসাইকেলটিতে গড়ে ৪২ কিলোমিটার মাইলেজ পাওয়া যায়, অর্থাৎ প্রতি লিটার তেলে গড়ে এতটা পথ পাড়ি দিতে পারে। মোটরসাইকেলটির দাম রাখা হচ্ছে ৬ লাখ ৫ হাজার টাকা।

হোন্ডার সিবিআর ১৫০ আর মডেলের মোটরসাইকেল
ছবি হোন্ডা বাংলাদেশের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া।

হোন্ডা সিবিআর রেপসল ১৫০ আর

জাপানি কোম্পানি হোন্ডার রয়েছে বেশ কিছু মডেলের মোটরসাইকেল। একসময় দেশের প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে হোন্ডার এত প্রচলন ছিল যে সাধারণ মানুষ মোটরসাইকেলকে হোন্ডা নামেই চিনতে শুরু করে।  

বর্তমানে হোন্ডার যেসব মোটরসাইকেল বাজারে রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে দামি একটি মডেল হলো সিবিআর রেপসল ১৫০ আর। মোটরবাইকটিতে লিকুইড কুলড ইঞ্জিনে দ্রুতগতি তোলার জন্য রয়েছে ওয়েট স্লিপার ক্লাচ। ফলে এটি নিরাপদে পথচলার পাশাপাশি স্পোর্টস বাইকের অভিজ্ঞতাও দিচ্ছে।

ফোর ভালভ ইঞ্জিন সুবিধার মোটরসাইকেলটিতে ৫০ কিলোমিটারের মতো মাইলেজ পাওয়া যায়। ১৫০ সিসির এই মোটরসাইকেলটির দাম রাখা হচ্ছে ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা।  

সুজুকির জিএসএক্সআর ১৫০ মডেলের মোটরসাইকেল
ছবি– সুজুকি বাংলাদেশের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া।

সুজুকি জিএসএক্সআর ১৫০

জাপানি গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সুজুকি মোটরসের রয়েছে বেশ কিছু ভালো মানের ও বৈচিত্র্যময় মোটরসাইকেল। দেশে সুজুকির মোটরসাইকেল বাজারজাতকরণ করছে র‍্যানকন মোটরবাইক লিমিটেড।

দেশের বাজারে সুজুকির সবচেয়ে দামি মোটরসাইকেলের একটি হলো সুজুকি জিএসএক্সআর ১৫০ ডুয়েল এবিএস মডেলের বাইকটি।

কালোর মধ্যে লাল, হলুদ ও নীলের মিশেলে মোট চারটি রঙের জিএসএক্সআর ১৫০ পাওয়া যায়। ১৪৭ সিসির (ইঞ্জিনক্ষমতার) মোটরসাইকেলটির ফুয়েল ট্যাংক ১১ লিটারের। আর এটিতে মাইলেজ পাওয়া যায় ৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। মোটরসাইকেলটির দাম রাখা হচ্ছে ৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।  

বাজাজের অ্যাভেঞ্জার স্ট্রিট ১৬০
ছবি– বাজাজের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

বাজাজ অ্যাভেঞ্জার স্ট্রিট ১৬০

বাংলাদেশে ভারতীয় ব্র্যান্ড বাজাজের মোটরসাইকেল বাজারজাত করে উত্তরা মোটরস লিমিটেড। বর্তমানে বাজাজের পালসার, অ্যাভেঞ্জার, প্লাটিনা, সিটি ১০০ ও ডিসকভার মডেলের ১১ ধরনের মোটরসাইকেল রয়েছে।

দেশে বাজাজের সবচেয়ে দামি মোটরসাইকেলের একটি অ্যাভেঞ্জার স্ট্রিট ১৬০। মোটরসাইকেলটি আরামদায়ক ও লম্বা সময়ের যাত্রার জন্য এটি বেশ ভালো। এটির রয়েছে ১৩ লিটারের ফুয়েল ট্যাংক ও সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস পদ্ধতি।

বর্তমানে স্পাইসি রেড ও এবনি ব্ল্যাক—এই দুই রঙে অ্যাভেঞ্জার স্ট্রিট ১৬০ বাইকটি বাজারে পাওয়া যায়। ১৬০ সিসির এই মোটরসাইকেলটির দাম ২ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।

টিভিএসের অ্যাপাচি আরটিআর ১৬০
ছবি– টিভিএসের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

টিভিএস অ্যাপাচি আরটিআর ১৬০

বাংলাদেশের বাজারে ভারতের টিভিএস ব্র্যান্ডের বেশ কিছু মডেলের মোটরসাইকেল চলছে। ক্রয়ক্ষমতার নাগালের মধ্যে থাকায় টিভিএসের কয়েকটি মডেল বেশ জনপ্রিয়।
টিভিএসের মোটরসাইকেলগুলোর মধ্যে অ্যাপাচি আরটিআর ১৬০ মডেলের বাইকটি সবচেয়ে দামি। ইঞ্জিনে ৪-ভালভ সুবিধার মোটরসাইকেলটির রয়েছে ডুয়েল ডিস্ক এবিএস ব্রেকিং পদ্ধতি এবং ১২ লিটারের ফুয়েল ট্যাংক। এটিতে ৪০ কিলোমিটারের মতো মাইলেজ পাওয়া যায়।

১৬০ সিসির এই মোটরসাইকেলটির দাম পড়ছে ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।

হিরোর থ্রিলার ১৬০ আর মডেলের মোটরসাইকেল
ছবি হিরো মোটরসের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

হিরো থ্রিলার ১৬০ আর

ভারতের হিরো ব্র্যান্ডের বেশ কিছু মডেলের মোটরসাইকেল বাংলাদেশের বাজারে চলছে। বাংলাদেশে হিরোর মোটরসাইকেল বাজারজাত করছে নিটল-নিলয় গ্রুপের প্রতিষ্ঠান নিলয় মোটরস।

বিক্রয়কেন্দ্রগুলোয় হিরোর যেসব মোটরসাইকেল পাওয়া যায়, তার মধ্যে সবচেয়ে দামি হচ্ছে হিরোর থ্রিলার ১৬০ আর মডেলটি। ১৬০ সিসি ক্ষমতার ডাবল ডিস্কের বাইকটিতে রয়েছে সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস পদ্ধতি। এ ছাড়া রয়েছে ১২ লিটারের ফুয়েল ট্যাংক।
থ্রিলার ১৬০ আর মোটরসাইকেলটির দাম পড়ছে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা।