অমীমাংসিত বিষয়ে দরকারি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ওয়ার্কশপ

‘বিজনেস অর ব্র্যান্ড’ বিষয়ে ওয়ার্কশপে ফটোসেশন। ছবি: সংগৃহীত
‘বিজনেস অর ব্র্যান্ড’ বিষয়ে ওয়ার্কশপে ফটোসেশন। ছবি: সংগৃহীত

কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ—ব্যবসা, নাকি ব্র্যান্ড? এই অমীমাংসিত বিষয়ের দরকারি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ‘বিজনেস অর ব্র্যান্ড’ বিষয়ে ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্র্যান্ড ও মার্কেটিং পেশাজীবীদের কমিউনিটি ‘ব্র্যান্ড প্র্যাক্টিসনার্স বাংলাদেশ’-এর আয়োজনে এবং প্রথম আলো ডটকমের সহায়তায় গত শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সিএ ভবনে এই ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়। এতে পাওয়ার্ড বাই স্পনসর হিসেবে ছিল এস্কিমি ও মেট্রোসেম।

বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ক্যাটালিস্ট আফতাব মাহমুদ খুরশীদ ওয়ার্কশপের মূল সেশন পরিচালনা করেন। পরিকল্পিত ব্র্যান্ডিং দীর্ঘ সময়ে ব্যবসাকে বাজারে টিকে থাকার এবং এগিয়ে যাওয়ার জন্য কীভাবে সাহায্য করে ও ব্র্যান্ডিং ছাড়া ব্যবসা শুধুই পণ্য বেচাকেনার কারবার হয়ে ওঠে, এ বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি।

দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের উদাহরণসহ আলোচনায় বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আফতাব মাহমুদ। ক্রেতারা আসলে ব্র্যান্ড কিনে থাকেন, প্রমিজ কিনে থাকেন, শুধু পণ্য কেনেন না। তাই এসব ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের ব্র্যান্ডের পার্সোনালিটি এবং টার্গেট গ্রুপ বুঝে এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেন তিনি।

ওয়ার্কশপ শুরু হয় মেট্রোসেমের সিনিয়র ব্র্যান্ড ম্যানেজার হুমায়ন মোর্শেদের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গল্প দিয়ে। তিনি ব্র্যান্ড নিয়ে ভুল ধারণা, চিফ অফিসারদের এই যুগের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা এবং সময়ের সঙ্গে টিকে থাকতে না পারলে ব্র্যান্ডকে বাজার থেকে বাদ পড়ে যাওয়ার মতো বিভিন্ন প্রয়োজনীয় বিষয়ে আলোচনা করেন। তাঁর মতে, সমসাময়িক ব্র্যান্ড ও মার্কেটিংয়ের বই পড়ার পাশাপাশি অভিজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করা, বিভিন্ন ইভেন্টে যোগ দেওয়া, মেলা ভিজিট করা এবং প্রতিনিয়ত নিজেকে আপডেট রাখা জরুরি।

ইনসাইট স্পিকার হিসেবে ডেকো ফুডসের হেড অব মার্কেটিং আহাম্মদ আলী হাসান বিশ্বের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এগিয়ে যাওয়ার পেছনের কারণগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘যুগের চাহিদার সঙ্গে মিলিয়ে ব্র্যান্ডের টোন এবং পার্সোনালিটি বদলে ফেলার দরকার হলে বদল করাই ভালো। অনেক ব্র্যান্ড দু-তিন যুগ যে যে সেবা দিত, ইনোভেশন এবং ভ্যালু যোগ করে তা থেকে বের হয়ে আরও ক্রেতামুখী হয়েছে।’ ব্র্যান্ডের ব্যাপারে ইনসাইট পেতে তিনটি উপায় নিয়েও আলোচনা করেন তিনি। বেশি দাম দিয়ে হলেও ক্রেতারা কেন ব্র্যান্ডের পণ্য ক্রয় করেন, সেটা ভেবে দেখার জন্যও পরামর্শ দেন।

তিনটি সেশন শেষে ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণকারীদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন বক্তারা। এ আয়োজন নিয়ে প্রথম আলো ডটকমের হেড অব বিজনেস জাবেদ সুলতান বলেন, ‘প্রথম আলো দেশের পেশাজীবী এবং তরুণদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য নানা ধরনের কাজ করে করে যাচ্ছে। তারই আলোকে ব্র্যান্ড প্র্যাক্টিসনার্স বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যদের দরকারি বিষয়ে আরও দক্ষ করে তুলতে অভিজ্ঞ মার্কেটিয়ার এবং ব্র্যান্ড এক্সপার্টদের এই আয়োজনে যুক্ত করা হয়েছে।’

ব্র্যান্ড প্র্যাক্টিসনার্স বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা মির্জা মুহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, ‘পরপর দুই মাসে দুটি প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রের ওপরে সেশন আয়োজন করতে পেরে আমরা খুশি।’ ডিসেম্বর মাসে এ ধরনের আরও প্রোগ্রাম আয়োজনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। অনুষ্ঠানের বক্তা, স্পনসরসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

প্রথম আলো ডটকমের আমিনুর রহমান তাঁর সূচনা বক্তব্যে বলেন, ‘যা কিছু ভালো, তার সাথে প্রথম আলো’—এই স্লোগানের ধারাবাহিকতায় ব্র্যান্ড পেশাজীবীদের জন্য ট্রেইনিং ও ওয়ার্কশপ আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে প্রথম আলো। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভরা এই যুগে টিকে থাকার জন্য ইনসাইট এবং কৌশলের কোনো বিকল্প নেই বলেও মনে করেন তিনি।

ব্যান্ড প্র্যাক্টিসনার্স বাংলাদেশ গ্রুপের অ্যাডমিন মুহাম্মদ আবদুল্লাহ এই আয়োজনের সমাপনী বক্তব্যে আরও নতুন নতুন বিষয়ে ওয়ার্কশপের ঘোষণা দেন।

ছয় ঘণ্টাব্যাপী প্রথম আলো ডটকম প্রেজেন্টস ‘বিজনেস অর ব্র্যান্ড’ ওয়ার্কশপে ৭৩ জন ব্র্যান্ড, মার্কেটিং ক্ষেত্রের পেশাজীবী এবং উদ্যোক্তা অংশ নেন। নলেজ পার্টনার হিসেবে এডস অব বাংলাদেশ এবং ক্রিয়েটিভ পার্টনার হিসেবে বাযুকা কমিউনিকেশনস এই অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিল।