অর্গানিক চায়ে সাফল্য

ফাইল ছবি

দ্রুত সময়ে জৈব কৃষি চালু করতে গিয়ে শ্রীলঙ্কায় ফলন বিপর্যয় হয়েছে। উৎপাদন কমেছে অর্গানিক চায়েরও। পরিমাণে কম হলেও আমাদের দেশে অর্গানিক চায়ে সাফল্য এসেছে কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেটের হাত ধরে। দেশের এই বাগানের অর্গানিক চা শোভা পাচ্ছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সুপারস্টোরে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের জৈব কৃষি গবেষক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন মনে করেন, শ্রীলঙ্কা প্রস্তুতি ছাড়াই রাতারাতি অর্গানিক কৃষির বাস্তবায়ন করতে চেয়েছে। প্রণোদনার টাকা নিয়ে উৎপাদন করেনি অনেকেই। সে কারণে ফলন বিপর্যয় হয়েছে।

রপ্তানির পাশাপাশি দেশেও ১৮ ধরনের অর্গানিক চা বাজারজাত করছে কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেট। মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যসচেতনতা বাড়ায় অর্গানিক চায়ের চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে।
সৈয়দ শোয়েব আহমেদ, কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা

বাংলাদেশ চা বোর্ডের হিসাবে, কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেটে ২০১৯ সালে উৎপাদিত হয় ৪ লাখ ৯২ হাজার কেজি চা। ২০২০ সালে চায়ের উৎপাদন বেড়ে দাঁড়ায় ৫ লাখ ৯ হাজার কেজিতে। গত বছর উৎপাদন আরও বেড়ে হয় ৫ লাখ ৩৯ হাজার কেজি। এক বছরে দেশে উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ৬ শতাংশ।

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ২০০০ সালে প্রথম অর্গানিক চায়ের আবাদ শুরু করে কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেট। চা–পাতা তোলা ও চায়ের উৎপাদন শুরু হয় ২০০৪ সালে। কৃত্রিম সার ও কীটনাশক ব্যবহার না করেই চায়ের আবাদ হচ্ছে এই বাগানে। অর্গানিক চা উৎপাদনের জন্য শুরু থেকেই ব্যবহার করা হচ্ছে জৈব সার এবং ভেষজ ও ঔষধি পাতার মিশ্রণে তৈরি বায়োপেস্টিসাইড।

কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেট উৎপাদিত চা যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি দপ্তর (ইউএসডিএ), দেশটির খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন দপ্তরের (এফডিএ) খাদ্যের মান দেখভালকারী প্রতিষ্ঠান হ্যাজার্ড অ্যানালাইসিস ক্রিটিক্যাল কন্ট্রোল পয়েন্টের (এইচএসিসিপি) কাছ থেকে স্বীকৃতি পেয়েছে। পরিবেশবান্ধব উৎপাদনের স্বীকৃতি হিসেবে পরিবেশ নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন রেইনফরেস্ট অ্যালায়েন্সের বিশেষ সনদ পেয়েছে এ প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া ইউরোপীয় অর্গানিক স্ট্যান্ডার্ড এবং জাপানিজ অ্যাগ্রিকালচার স্ট্যান্ডার্ডের আটটি আন্তর্জাতিক সনদ পেয়েছে এ প্রতিষ্ঠান।

কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শোয়েব আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, রপ্তানির পাশাপাশি দেশেও ১৮ ধরনের অর্গানিক চা বাজারজাত করছে কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেট। মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যসচেতনতা বাড়ায় অর্গানিক চায়ের চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। দেশের বাইরে ‘টিটুলিয়া’ ব্র্যান্ডের নামে অর্গানিক চা বাজারজাত করা হচ্ছে।