আগাম কর পুরোপুরি প্রত্যাহার চান ব্যবসায়ীরা

এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন
ফাইল ছবি


বিনিয়োগ বাড়াতে হলে ঘন ঘন নীতি পরিবর্তন থেকে সরে আসা, আগাম কর প্রত্যাহারসহ কর ব্যবস্থা সংস্কারের তাগিদ দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম চেম্বার ও বাংলাদেশ সেন্টার অব এক্সিলেন্সের উদ্যোগে বাজেট-পরবর্তী সংলাপে এ তাগিদ দেন তাঁরা।

সংলাপ সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম। এতে অন্যান্য ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। সংলাপে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, দেশীয় শিল্প খাতকে বাজেটে বেশি কিছু সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এটা ইতিবাচক। তবে আগাম কর এখনো রয়ে গেছে। এই কর ব্যবসার খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাই এটি প্রত্যাহার করা দরকার।

ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রূপালী চৌধুরী বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলে উদ্যোক্তারা জমি নেওয়ার সময় ভ্যাট দেওয়ার বিধান ছিল না। এখন রাজস্ব বোর্ড বলছে, ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। তাহলে তো নীতির ধারাবাহিকতা থাকল না। প্রতিযোগী দেশের তুলনায় দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ খুবই কম উল্লেখ করে নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি। প্রশাসনিক জটিলতা ও কর ব্যবস্থা সংস্কারের তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় এখানে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা কম থাকলে বিনিয়োগ বাড়বে না।

বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, বিশ্বে কৃত্রিম তন্তুর পোশাকের রপ্তানিবাজার বাড়ছে। এই বাজার ধরতে এ খাতের উদ্যোক্তাদের ১০ বছরের প্রণোদনা দেওয়া উচিত। তাহলে বিনিয়োগ যেমন বাড়বে, তেমনি দ্রুত কর্মসংস্থানও তৈরি হবে। বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে ব্যবসার নীতিসহায়তা বছর বছর পরিবর্তন না করে ন্যূনতম পাঁচ বছর মেয়াদি করার দাবি জানান তিনি।

সংলাপে সিমেন্ট প্রস্তুতকারক সমিতির সভাপতি আলমগীর কবির বলেন, বাজেটে আগাম কর ২ শতাংশ চূড়ান্ত দায় হিসেবে রেখে দেওয়া হয়েছে। এটা এই শিল্পের জন্য বড় বোঝা। আবার টনপ্রতি ক্লিংকারে ৫০০ টাকা শুল্ক দিতে হচ্ছে। তাতে সিমেন্টের কাঁচামালের ওপর ১০-১১ শতাংশ আমদানি শুল্ক দিতে হয়, যেটা শিল্পের কাঁচামালের জন্য অনেক বেশি। এই খাতে একই পণ্যে দুবার কর দিতে হচ্ছে। আগাম কর প্রত্যাহার ও কাঁচামালের শুল্ক যৌক্তিক না করলে এই খাতে উদ্যোক্তাদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, রাজস্ব আয় বাড়াতে করের আওতা বাড়ানো দরকার। চট্টগ্রাম বন্দরের সম্প্রসারিত প্রকল্প বে টার্মিনাল দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বে টার্মিনাল না হলে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে সামনে বড় সমস্যা তৈরি হবে।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতি আসিফ ইব্রাহীম বলেন, করপোরেট কর কমানোর সিদ্ধান্তটি ইতিবাচক। তবে তালিকাভুক্ত কোম্পানির চেয়ে অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করের ব্যবধান বাড়ালে পুঁজিবাজারে অনেক ভালো কোম্পানি আসবে।

ইসলামী ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, রাজস্ব কম আদায় হলে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নেওয়ার চাপ বাড়বে।

সংলাপের সঞ্চালক চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, রাজস্ব আয় বাড়াতে করের আওতা বাড়ানো দরকার। চট্টগ্রাম বন্দরের সম্প্রসারিত প্রকল্প বে টার্মিনাল দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বে টার্মিনাল না হলে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে সামনে বড় সমস্যা তৈরি হবে।