‘আমাদের চিন্তা সুইফট ও ক্রেডিট কার্ড নিয়ে’

‘বিগল বয়েজ’ নামে একটি হ্যাকার দল ব্যাংকগুলোতে আক্রমণ করবে-এমন আশঙ্কায় সতর্ক ইউরোপ-আমেরিকার ব্যাংকগুলো। বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোও হ্যাকারদের আক্রমণ রোধে নানা ব্যবস্থা নিয়েছে। কেউ এটিএম বন্ধ রাখছে, কেউ অনলাইন ব্যাংকিং সীমিত করেছে। বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর উদ্যোগ নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল কাশেম মো. শিরিন। অনুলিখন করেছেন সানাউল্লাহ সাকিব

আবুল কাশেম মো. শিরিন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), ডাচ্-বাংলা ব্যাংক

অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি সুইফট, ক্রেডিট কার্ড, এটিএম ও পয়েন্ট অফ সেলসের মাধ্যমে হ্যাকিং হতে পারে। হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে সুইফটের মাধ্যমে ডলার চুরি করেছিল। মূলত ম্যালওয়্যার প্রবেশ করে তারা পুরো সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এই চুরি করেছিল। আর কয়েকটি ব্যাংক থেকে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ডলার চুরি করা হয়। এর বাইরে টাকা চুরি হয় এটিএম ও পয়েন্ট অফ সেলস থেকে। এটা বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে করতে হবে, তাই এ নিয়ে আমরা বেশি চিন্তিত না। কারণ দেশে কেউ এমন অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লে তাঁকে আটকানো যাবে। এরপরও আমরা এটিএম থেকে কারা বেশি টাকা উত্তোলন করছে, তা নজরদারি করছি। রাতে এটিএম সেবা বন্ধ রেখেছি।

আরও পড়ুন
আমাদের চিন্তা সুইফট ও ক্রেডিট কার্ড নিয়ে। কারণ, এই দুই পদ্ধতি হ্যাক করে ডলার চুরি করা যায়। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশ পাওয়ার পরই সুইফট ব্যবহারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।

আমাদের চিন্তা সুইফট ও ক্রেডিট কার্ড নিয়ে। কারণ, এই দুই পদ্ধতি হ্যাক করে ডলার চুরি করা যায়। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশ পাওয়ার পরই সুইফট ব্যবহারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। সুইফটের মাধ্যমে কোনো বার্তা পাঠাতে হলে আগে লেখা হচ্ছে, এরপর মেশিন চালু করে পাঠানো হয়। এরপর সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয়। আবার কোনো বার্তা আসলে মেশিন চালু করে আবার বন্ধ রাখা হচ্ছে।

ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক লেনদেন আমরা সীমিত করে দিয়েছি। কয়েকটি দেশে লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আবার কিছু কিছু দেশে কতটি লেনদেন করা যাবে, তাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে কয়েকটি দেশে নির্দিষ্ট লেনদেনের পর আর কোনো লেনদেন হবে না। এতে করে কোনো হ্যাকার গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ নিলেও নির্দিষ্ট লেনদেনের বেশি করতে পারবে না। যেসব দেশ থেকে এর আগে চুরির ঘটনা ঘটেছে, ওই দেশগুলোতে লেনদেন সীমিত ও বন্ধ করা হয়েছে। পরবর্তী কোণ নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত এসব পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।

আরও পড়ুন

সবচেয়ে বড় আতঙ্ক ম্যালওয়্যার নিয়ে। আমরা কর্মকর্তাদের জানিয়েছি, অপরিচিত মেইল না খুলতে। আর অপ্রয়োজনে কোনো ফাইলে ক্লিক না করতে। অনেক সময় হ্যাকাররা ছিন্ন ভিন্ন ভাবে একে একে ফাইল পাঠায়। এরপর তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে জোড়া হয়ে কার্যকর হয়। ম্যালওয়্যার কার্যকর হলে তাকে ঠেকানো কঠিন। তারা পাসওয়ার্ড, সীমা সব ভেঙে ফেলে। যতই পদক্ষেপ নেওয়া হোক না কেন, এটা ঠেকানো বেশ কঠিন। এ জন্য প্রয়োজন সবার সচেতনতা ও আমাদের ব্যবস্থা।

আবুল কাশেম মো. শিরিন: ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক

আরও পড়ুন