আমানতের কম সুদ নিয়ে অর্থমন্ত্রী বললেন, ‘এতে কী অসুবিধা হচ্ছে?’

ব্যাংকে টাকা আমানত রেখে গ্রাহকেরা ভালো সুদ পাচ্ছেন না—এটা ছিল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে তুলে ধরা সাংবাদিকদের প্রসঙ্গ। সাংবাদিকদের কাছে অর্থমন্ত্রীর পাল্টা প্রশ্ন, ‘এতে কী অসুবিধা হচ্ছে?’

আজ বৃহস্পতিবার অনলাইনে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী ব্রিফিং করছিলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির হার স্থিতিশীল। গত সাত বছরের গড় মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশের মতো। আর বিশ্বের কোনো ব্যাংকে টাকা আমানত রাখলে খুব বেশি সুদ পাওয়া যায় না। বরং টাকা রাখলে উল্টো ব্যাংককে সুদ দিতে হয়। এ জন্য আমাদের দেশের যাঁরা বিদেশে আছেন, তাঁরা অফিশিয়াল ব্যবসা করলে বিদেশে টাকা রেখে কিছু পান না। তাঁরা এখন দেশে অর্থ নিয়ে আসছেন। দেশে টাকা এনে বিনিয়োগ করে তাঁরা লাভবান হতে পারেন।’

সার্বিক বিবেচনায় দেশে ঋণের সুদহার বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। বলেন, ‘আমি মনে করি, এটা বাস্তবধর্মী হওয়া উচিত, হয়েছেও। ২০ থেকে ২২ শতাংশ সুদ দিয়ে কী হবে, যদি আপনি না পান? এখন অবলোপনের পরিমাণ কম। খেলাপির হারও কমে গেছে।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তো কোনো না কোনোভাবে বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমানতের সুদ ৬ শতাংশ ও ঋণের সুদ ৯ শতাংশ—সারা বিশ্বের বিবেচনায় এটি করা হয়েছে। কম সুদের ঋণ নিয়ে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা ব্যবসা করে বলে তাদের উৎপাদন খরচ কম হয়। তারা তখন প্রতিযোগিতায় আমাদের চেয়ে এগিয়ে যায়।’

দেশের ব্যাংক খাত ভালো অবস্থানে এসেছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগে সরকারি ব্যাংকগুলো সরকারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পুনঃঅর্থায়ন করত। দুই থেকে তিন বছর ধরে এই কাজ করতে হচ্ছে না তাদের। সরকারি ব্যাংকগুলোকে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, আয় করতে হবে এবং আয় করেই ব্যয় করতে হবে। সেটি তারা করে যাচ্ছে।

বেসরকারি ব্যাংকগুলো প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের আগে কী অবস্থা ছিল? এ বছর তাদের আর্থিক বিবরণী দেখলে খুব স্বাস্থ্যবান মনে হয়। মোটা দাগে বেশির ভাগ ব্যাংকেরই আর্থিক বিবরণী ভালো। লাভ না থাকলে তো তারা লভ্যাংশ দিতে পারবে না। আগে আপনারা (সাংবাদিকেরা) সব সময় বলতেন যে ব্যাংকগুলো লভ্যাংশ দেয় না এবং নানাভাবে লভ্যাংশ না দেওয়ার চেষ্টা করে।’

পুঁজিবাজার প্রসঙ্গ
শেয়ারবাজারের সূচক এখন ভালো অবস্থানে এবং তা আট হাজার ছাড়িয়ে না যাওয়া পর্যন্ত সর্বোচ্চ ঋণসুবিধা দেওয়া হবে বলে সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনীতি ভালো থাকলে শেয়ারবাজারের অবস্থাও চাঙা থাকবে—এটাই শেয়ারবাজারের মূল ভিত্তি।

যেসব কোম্পানি উৎপাদনে নেই, সেগুলোর শেয়ারের দামও বাড়ছে, এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘যে অসংগতিগুলো আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, সেগুলো আমি বিএসইসির চেয়ারম্যানের কাছে তুলে ধরব।'

দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) লোকবল নিয়োগ আটকে আছে কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এটি নিয়েও তিনি এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলবেন।