আড়ংয়ে অনলাইন নিবন্ধনে চলবে ঈদের কেনাকাটা

অনলাইনে নিবন্ধন করে নির্ধারিত সময়ে গিয়ে ঈদ শপিং করা যাবে দেশের সবচেয়ে বড় লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড আড়ংয়ের আউটলেটগুলোতে। এ ক্ষেত্রে যথাযথভাবে সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি অনুসৃত হবে। আজ শনিবার সকালে ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামারা আবেদ।

আড়ংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ৬৫ হাজার কারুশিল্পীর কথা বিবেচনায় রেখেই শাখা খোলার সিদ্ধান্ত আড়ংয়ের। কারণ, এখন কিছু বিক্রি হলে পুনরায় অর্ডার দেওয়া যাবে। তাহলে সেই অর্থে তাঁদের সংসার চলবে বলে জানান তামারা আবেদ। তিনি জানান, স্টোরে প্রচুর পণ্যসামগ্রী জমা হয়ে আছে। এমনকি আগে অর্ডার দেওয়া সব পণ্যও বুঝে নেওয়া হয়নি। সেগুলোও নিতে হবে। ফলে স্টোর খালি করাও প্রয়োজন। তিনি আরও যোগ করেন, উৎপাদকদের দেওয়া অর্ডারের সব পণ্যই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আড়ং।

কাল রোববার থেকে ২১টির মধ্যে ১৪টি আউটলেট খোলার পরিকল্পনা করেছে আড়ং। বসুন্ধরা শপিং মল আর যমুনা ফিউচার পার্কের আউটলেট, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, কুমিল্লাসহ মোট ৭টি আউটলেট বন্ধ রাখছে।

প্রতিটি আউটলেটের পরিসর অনুযায়ী নিজেদের কর্মচারীর সংখ্যা বিবেচনায় রেখে সামাজিক দূরত্ব অনুসরণ করে যে কয়জন ক্রেতার স্থান সংকুলান করা যায়, আড়ং সেটাই করবে। এ ছাড়া সরকারি বিধি সুনির্দিষ্টভাবে অনুসরণের পাশাপাশি নিজেরাও যথেষ্টভাবে সতর্ক থাকছে।

ডিজিটাল মূল্য পরিশোধে উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি কাগজের টাকা ব্যবহারে নিরুৎসাহী করা হচ্ছে। তবে কেউ দিলে তা টিসু দিয়ে নেওয়া এবং ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে বলেও জানানো হয়। স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয়টিও সম্যক গুরুত্ব দিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৩০ শতাংশের বেশি কর্মচারীকে এই সময়ে কাজে যোগদান না করানোর সিদ্ধান্তের কথাও জানানো হয়েছে।

বর্তমানে কোনো পণ্য কেনার সময় ট্রায়াল দেওয়া যাবে না। আর বদলের প্রয়োজন হলেও সেটা এখন সম্ভব হবে না। বরং সবকিছু স্বাভাবিক হলে সেই সময় থেকে ৩০ দিনের মধ্যে সেটা করা যাবে বলেও স্পষ্ট করা হয়েছে।

আড়ংয়ের পণ্য কিনতে হলে ওয়েবসাইটে গিয়ে আগে থেকে নিবন্ধন করতে হবে। সেখানেই সবকিছু উল্লেখ করা আছে। নিবন্ধন শেষে যে টেক্সট বার্তা মিলবে, সেটাই আড়ংয়ে এসে দেখালে প্রবেশানুমতি মিলবে। এ ক্ষেত্রে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। কোনো পরিবারের সর্বোচ্চ দুজন আসতে পারবেন; তবে ১০ বছরের নিচে শিশু এবং বয়স্কদের সঙ্গে আনা যাবে না। আর কেনাকাটার জন্য এক ঘণ্টা সময় আউটলেটে থাকা যাবে।

এক ঘণ্টা পর পরিষ্কার করা এবং এলিভেটর ও ক্যাশ কাউন্টারে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আড়ংয়ের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আশরাফুল আলম।
কেনাকাটায় বাংলাদেশের জন্য এই ধরনের উদ্ভাবনী ব্যবস্থা একেবারেই নতুন। এ জন্য সার্বিক সহায়তা করার এবং ধৈর্যধারণের জন্য ক্রেতাদের অনুরোধ করেছেন তামারা আবেদ।
তবে অনলাইনে কেনাকাটাকে প্রাধান্য দিচ্ছে আড়ং। সেখানেও পণ্যের প্যাকিং ও ডেলিভারিতে প্রয়োজনীয় পরিচ্ছন্নতা ও সতর্কতা অনুসরণ করা হচ্ছে বলেও আশ্বস্ত করা হয়।

এদিকে ফ্যাশন এন্ট্রাপ্রেনিউরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এফইএবি) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকারি বিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে তাদের সদস্যরা নিজ নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলতে পারবেন। তবে কতগুলো প্রতিষ্ঠান কাল রোববার থেকে খুলছে, সেটা নিশ্চিত করতে পারেননি সংস্থার সভাপতি শাহীন আহম্মেদ।

এদিকে সেইলর, লা রিভ, জেন্টল পার্কের মতো বেশ কিছু ফ্যাশন হাউজ তাদের শাখা খুললেও দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোর বেশির ভাগই কাল আউটলেট খুলছে না। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য সময় নিতে চায় বলে নাম না প্রকাশ না করে এক উদ্যোক্তা জানিয়েছেন।

এদিকে ঢাকার তেজগাঁও-গুলশান লিঙ্ক রোডের দেশী দশ ছাড়া অন্যগুলো খোলা সম্ভব নয়। তা সত্ত্বেও কাল দেশী দশের এই শাখাও খোলা না রাখার সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।