ঈদের বিক্রি এবারও জমল না

প্রথম আলোর ফাইল ছবি

এবারও জমল না রংপুর বেনারসিপল্লির ঈদের বাজার। গত কয়েক দিনে সেখানে ক্রেতাদের ভিড় নেই বললেই চলে। ফলে পরপর দুই বছরের দুই ঈদুল ফিতরের ব্যবসা মার খাওয়ায় অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন পল্লির ব্যবসায়ীরা।

রংপুরে বেনারসিপল্লিতে তৈরি রাঙুলি, চুন্দরি, নেট, ঝুট, কোটাসহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ির কদর নারীদের কাছে থাকলেও বেনারসির বাজার জমল না। দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে বিক্রি কমে গেছে। ফলে বিনিয়োগও উঠে আসবে না বলে তাঁদের শঙ্কা।

রংপুর শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে গঙ্গাচড়া উপজেলার হাবু বেনারসিপল্লিতে গত বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, অধিকাংশ ব্যবসায়ী হাত গুটিয়ে বসে আছেন। ঈদের আগে পল্লি যেখানে নারী ক্রেতাদের উপস্থিতিতে গমগম করত, এবার তেমনটি চোখে পড়ল না। ক্রেতা যে কজন ছিলেন, তাঁদের হাতে গোনা সম্ভব।

তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কেনাকাটা চলছে বেনারসিপল্লিতে। প্রায় সব ক্রেতা-বিক্রেতার মুখেই মাস্ক ছিল।

তাঁতিরা জানান, ক্রেতাদের পছন্দ ও চাহিদার ওপর গুরুত্ব দিয়ে শাড়ি তৈরি করা হলেও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকা দামের শাড়ি আগে যে পরিমাণে বিক্রি হতো, গত দুই মৌসুমে সেই তুলনায় বিক্রি অনেক কম। তাঁরা আরও জানান, আগে সারা বছর টুকটাক খুচরা ও পাইকারি বিক্রি হতো। এখন সেটিও নেই। কোভিডের আগে রংপুর শহর ছাড়াও আশপাশের জেলা শহর থেকে লোকজন বেনারসিপল্লিতে শাড়ি-থ্রিপিস কিনতে আসতেন, কিন্তু এবার সেই ক্রেতারা আসেননি।

এ ছাড়া বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত এক বছরে সরকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের জন্য যে প্রণোদনা দিয়েছে, পল্লির বিক্রেতারা তা পাননি। সরকারের তরফ থেকে কোনো ধরনের সহায়তাও মেলেনি। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে অনেকেই বাজারের প্রচলিত হারে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। ফলে এবার ব্যবসা ঘুরে দাঁড়াবে, সেই প্রত্যাশায় ছিলেন তাঁরা। কিন্তু সে আশায় গুড়ে বালি। উল্টো এখন তাঁরা ব্যাংকঋণ পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।