চলতি মূলধনে টান পড়লে ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই

সারোয়ার হোসেন
সংগৃহীত

দক্ষিণ কোরিয়ায় ১৩ বছরের প্রবাসজীবন শেষে দেশে ফেরেন মাদারীপুরের সারোয়ার হোসেন। সেখানে প্রকৌশলীর কাজ করার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নাট-বল্টু তৈরির কারখানা দেন শ্যামপুরে।

নাম রোজ স্টিল করপোরেশন। সময়টা ২০০৮ সাল। এর আগে অবশ্য অন্য ব্যবসারও চেষ্টা করেন। তবে সফল না হওয়ায় নাট-বল্টু উৎপাদনেই থিতু হন এই এসএমই উদ্যোক্তা।

প্রবাসে জমানো প্রায় দেড় কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করেন সারোয়ার হোসেন। তখন কর্মীর সংখ্যা ছিল ৮-১০। শুরুর দিকে বছরখানেক ব্যবসা তেমন ভালো হয়নি। তারপর ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে থাকে ব্যবসা।

মুঠোফোনে গতকাল রোববার সারোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রথমেই আমরা আমদানি বিকল্প নাট-বল্টু উৎপাদন শুরু করি। একপর্যায়ে চলতি মূলধনে টান পড়লে ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। এ জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসির সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওই সময় আমার ব্যবসাও নতুন এবং ঋণ নেওয়ার পূর্ব অভিজ্ঞতাও ছিল না। তারপরও আমি কোনো জামানত ছাড়াই ১০ লাখ টাকা এসএমই ঋণ পেলাম।’ ব্যবসা করে সেই ঋণ শোধ করে নতুন করে আবার ঋণ নিয়েছেন সারোয়ার হোসেন।

গত এক যুগে সর্বোচ্চ একবার ৩ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। ২০২০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণের সুদের হার এক অঙ্কের ঘরে নামিয়ে আনে। তখন ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া শুরু করেন তিনি। বর্তমানে সব মিলিয়ে চার-পাঁচটি ব্যাংকের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন আছে এই উদ্যোক্তার।

বললেন, ‘আর্থিক প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যাংক যেখান থেকেই ঋণ নিয়েছি, সময়মতো পরিশোধ করেছি। করোনার সময়েও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করেছি। সে কারণে যখনই ঋণ চেয়েছি, তখনই পেয়েছি। ঋণ পেতে কখনোই সমস্যা হয়নি।’

ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের একটা অংশ হিসাব-নিকাশ না রাখার কারণে ঋণ পেতে ভোগান্তিতে পড়ে। এ বিষয়ে সারোয়ার বলেন, ‘আমি ব্যবসার শুরু থেকেই রড কেনা, কর্মীদের বেতন-ভাতা, কারখানা ভাড়া পরিশোধসহ সব হিসাব-নিকাশ মাসেরটা মাসে করেছি। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংরক্ষণ করেছি। ফলে হিসাব-নিকাশ নিয়ে কোনো ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়নি।’

চলতি বছরের শুরুর দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে প্রায় এক বিঘা জমির ওপর নতুন কারখানা করেন সারোয়ার হোসেন। সেখানে কাজ করেন ৪৫ জন কর্মী। এমন তথ্য জানিয়ে সারোয়ার হোসেন বলেন, ‘হালকা প্রকৌশল খাতের সম্ভাবনা অনেক। প্রথম দিকে আমরা আমদানি বিকল্প নাট-বল্টু তৈরি করেছি।

একপর্যায়ে ভালো ব্যবসা করেছি। তবে অন্যরা সেসব অনুকরণ করায় আবার নতুন ধরনের পণ্য উৎপাদন শুরু করি আমরা। সে কারণে আমাদের বর্তমানে আরও অর্থায়ন দরকার। তবে আমরা নতুন করে বিনিয়োগে কিছুটা ধীরে চলো নীতি নিয়েছি।’