এক দিনেই কর আদায় করতে চান অর্থমন্ত্রী!
বছরে একটি নির্দিষ্ট দিন থাকবে, যেদিন দেশের সব করদাতা তাঁদের বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা দিয়ে কর দেবেন। এভাবেই এক দিনেই সারা দেশের করদাতাদের কাছ থেকে কর আদায় করতে চান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তাই বছরের একটি নির্দিষ্ট দিনে ‘কর দিবস’ পালন করার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) নির্দেশ দেন তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার শীতকালীন কর মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে এ কর মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়।
প্রথমবারের মতো তিন দিনব্যাপী শীতকালীন আয়কর মেলার আয়োজন করেছে এনবিআর। রাজধানী ঢাকাসহ সাতটি বিভাগীয় শহরে দিনব্যাপী এ মেলা হচ্ছে। রাজধানীতে বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাব এবং উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের কর অঞ্চল-৯ প্রাঙ্গণে মেলা চলছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, খুলনা, রাজশাহী ও বরিশালের বিভাগীয় শহরে শীতকালীন আয়কর মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বছরে এক দিন “কর দিবস” পালন করতে চাই। সেদিন সারা দেশের করদাতারা কর দেবেন। আগে থেকেই সব কাগজপত্র তৈরি করে রাখবেন। তাহলে প্রতিবছর বারবার সময় বাড়াতে হবে না। আমি ২০১৮ সালে এ কর দিবসের ঘোষণা দিতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘আমি যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক বছর কর দিয়েছি। সেখানেও ১ এপ্রিল কর দিবস।’ তিনি বলেন, আয়করের ফরম আরও সহজ ও সরল করা উচিত, যেন করদাতারা নিজেরাই এ ফরম পূরণ করতে পারেন।
অনুষ্ঠানে একটি গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে সাংসদ নাজমুল হাসান জানান, বাংলাদেশে ৭ শতাংশ মানুষের মাসিক আয় ৪০০ ডলারের বেশি। এর মানে ১ কোটি ২০ লাখ লোকের কর দেওয়ার সামর্থ্য রয়েছে। কিন্তু মাত্র ২০ লাখ লোকের কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) রয়েছে। তিনি কর প্রদানে ওয়ান স্টপ সার্ভিস বা একীভূত সেবা দেওয়ার ওপর তাগিদ দেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, সদস্য আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো চারজন করদাতাকে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সিআইপি কার্ড দেওয়া হয়। এবার সিআইপি পেলেন জয়নুল হক সিকদার, মনোয়ারা হক সিকদার, ঋক হক সিকদার ও আফতাব হোসেন। এর প্রথম তিনজন সিকদার গ্রুপের উদ্যোক্তা।
শীতকালীন কর মেলায় বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা দিতে পারবেন। এ ছাড়া নতুন ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) এবং পুরোনো ই-টিআইএনধারীরা পুনর্নিবন্ধন নিতে পারবেন। হরতাল থাকায় প্রথম দিনে মেলায় খুব বেশি ভিড় দেখা যায়নি। বেইলি রোডের মেলায় ৩১টি স্টলের মাধ্যমে করদাতাদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মেলা চলবে।
৩০ নভেম্বর বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমার সময় শেষ হচ্ছে। শেষ সময়ে করদাতারা যাতে সহজেই বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা দিতে পারেন, সে জন্য এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।