কর, ‘টেক জায়ান্টদের’ ব্যবসা ও বাংলাদেশ

বহুজাতিক ‘টেক জায়ান্টরা’ বাংলাদেশ থেকে আয় করেছে। কিন্তু আয়কর পাচ্ছে না সরকার।

সূত্র: সিএনবিসি ও কেপিএমজি

যুক্তরাষ্ট্রের ১০০ ডলারের নোটে যে ব্যক্তির ছবি রয়েছে, তাঁর নাম বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন। রাজনীতিবিদ, বিজ্ঞানী, লেখক, দার্শনিক, চিত্রশিল্পী—তাঁর পরিচয়ের শেষ নেই। তবে সবচেয়ে বড় পরিচয়, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফাউন্ডিং ফাদারসদের’ একজন। ১৭৮৯ সালে ফ্রাঙ্কলিন ফ্রান্সের চিকিৎসক জ্যঁ-বাতিস্ত লু হুয়াকে একটি চিঠি লেখেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘এই পৃথিবীতে কোনো কিছুই নিশ্চিত নয়, শুধু মৃত্যু আর কর ছাড়া।’

হ্যাঁ, কর আমাদের দিতেই হয়। তবে বহুজাতিক টেক জায়ান্টের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। তারা বিভিন্ন দেশে ব্যবসা করছে। আয় করছে। কিন্তু কর দিতে হচ্ছে না। যেমন করোনা মহামারির বছরে অ্যালফাবেট প্রায় সাড়ে ১৫ লাখ কোটি টাকা আয় করেছে, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি। এই টাকা বাংলাদেশের প্রায় তিনটি বাজেটের ব্যয়ের সমান (সংশোধিত বাজেট)। বাংলাদেশ থেকেও আয় করেছে অ্যালফাবেট। কিন্তু এক টাকাও আয়কর পায়নি বাংলাদেশ সরকার।

সাধারণ পাঠক হয়তো অ্যালফাবেটকে চেনেন না। তবে অ্যালফাবেটের সেবা আপনি নেন। যে ইউটিউবে আপনি ভিডিও দেখেন, সেটির মালিক অ্যালফাবেট। যে গুগলের ম্যাপ দেখে আপনি উবার ডাকেন, সেটার মালিকও অ্যালফাবেট। সোজা কথা হলো, গুগল-ইউটিউবের মূল কোম্পানি হলো অ্যালফাবেট।

শুধু অ্যালফাবেট নয়, ফেসবুক, ইয়াহু, নেটফ্লিক্স, আমাজন—এই টেক জায়ান্টরা সুদূরে বসে এ দেশের মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে যাচ্ছে, এ দেশে তাদের সেবা আসছে, এ দেশ থেকে তারা বিজ্ঞাপনের বিল নিচ্ছে, কিন্তু এ দেশকে কোনো আয়কর দিতে হচ্ছে না।

অবশ্য এই সমস্যায় শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো বিশ্ব ভুগছে। টেক জায়ান্টদের ওপর কীভাবে কর আরোপ করা যায়, তা নিয়ে চিন্তিত এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপসহ সবাই। এ নিয়ে নানা দেশ নানাভাবে এগোচ্ছিল। অবশেষে জি-৭ নামে পরিচিত বিশ্বের শীর্ষ সাতটি অর্থনীতির দেশ এক ঐতিহাসিক মতৈক্যে পৌঁছায়, সেটি হলো বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে ন্যূনতম ১৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।

জি-৭ সদস্যদেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালি। এই দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীরা ৫ জুন লন্ডনে এক বৈঠকে মিলিত হয়ে বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানির ওপর কর আরোপের বিষয়ে সম্মত হন। তা ফলাও করে প্রচার করা হয় বিশ্বের গণমাধ্যমগুলোতে। বিবিসির এক খবরে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে চুক্তি হলে সরকারগুলোর হাতে শত শত কোটি ডলার আসবে, যা মহামারি নিয়ন্ত্রণে ব্যয় করা ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে।

এই ন্যূনতম করের প্রয়োজন হলো কেন, সেটা সাধারণ পাঠকদের জেনে রাখা দরকার। উত্তর হলো বিভিন্ন দেশে করপোরেট করের হার

বিভিন্ন রকম। কোনো কোনো দেশ একেবারেই কমিয়ে রেখেছে, যেগুলোকে বলা হয় ট্যাক্স হেভেন বা করস্বর্গ। বহুজাতিকেরা সেসব দেশে নিবন্ধন নিয়ে সেখানে আয় দেখায়। লুক্সেমবার্গ, কেম্যান আইল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশ/অঞ্চল করস্বর্গ নামে পরিচিত।

জি-৭ সম্মেলনের আগে ফেয়ার ট্যাক্স ফাউন্ডেশন নামের একটি বৈশ্বিক সংস্থা তাদের একটি প্রতিবেদন তুলে ধরে। এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ‘সিলিকন-৬’ নামে পরিচিত ছয় টেক জায়ান্ট বিগত এক দশকে ৯ হাজার ৬০০ কোটি ডলার কর এড়িয়েছে।

যাহোক, জি-৭-এর ঐকমত্যের প্রভাব কী কী হতে পারে, তার একটি বিশ্লেষণ তুলে ধরেছে ভারতের নিউজ১৮ নামের একটি অনলাইন গণমাধ্যম। তারা বলছে, এ বিষয়ে চুক্তি হলে কোম্পানিগুলো যেসব দেশে ব্যবসা করবে, সেসব দেশে কর আদায় নিশ্চিত করার বিধিমালা হবে। এটি বাংলাদেশের জন্য খুব জরুরি। কেন, সে আলোচনায় পরে আসছি।

মিনিটে আয় লাখ লাখ ডলার

মার্কিন গণমাধ্যম সিএনবিসি গত ১ মে টেক জায়ান্টরা কত আয় করে, তার একটি তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেছে। তাদের হিসাবে, মহামারির মধ্যেও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আমাজনের প্রতি মিনিটে আয় ছিল ৮ লাখ ডলারের বেশি। অ্যাপলের আয় সে তুলনায় একটু কম, ৭ লাখ ডলারের মতো। মাইক্রোসফট ৩ লাখ, ফেসবুক ২ লাখ, টেসলা ৮০ হাজার ও নেটফ্লিক্স ৫৫ হাজার ডলার করে আয় করেছে, সেটাও মিনিটে। এই আয় আসে বিশ্বের প্রায় সব দেশ থেকে, বাংলাদেশও তাদের কাছে ছোট বাজার নয়। এ দেশ থেকে তারা বিজ্ঞাপন থেকে আয় করে, মাসে মাসে গ্রাহক ফি নেয়, বিভিন্ন সেবা বিক্রি করে, তাদের আয়ের মাধ্যম অনেক। বাংলাদেশে কোনো কোম্পানি এভাবে আয় করলে মুনাফার ওপর সাড়ে ২২ থেকে ৪৫ শতাংশ করপোরেট কর দিতে হয়।

বাংলাদেশে নেটফ্লিক্স, আমাজন প্রাইমের গ্রাহক কত, কতজন ক্রেডিট কার্ড দিয়ে অনলাইনে বিদেশি পণ্য ও সেবা কেনেন—এসব তথ্য জানা যায় না। সরকারের কোনো সংস্থাও আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি যে তারা এসব তথ্য সংগ্রহ করছে। ফলে জানা সম্ভব নয় যে ঠিক কত টাকা বাংলাদেশ থেকে টেক জায়ান্টরা আয় করছে। অবশ্য এটা আমরা জানতে পারি যে দেশে সিনেমা হলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু নেটফ্লিক্সের কল্যাণে সিনেমা হাতের মুঠোয় এসেছে।

কর আরোপ কেন দরকার

সনাতন কর ব্যবস্থায় কোনো পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করলে উচ্চ হারে কর দিতে হয়। দেশে উৎপাদন করলে করের হার কম হয়, এটা মানুষের কর্মসংস্থানের স্বার্থে। মোটরসাইকেল দিয়ে উদাহরণ দিই। বিদেশ থেকে একটি মোটরসাইকেল সংযুক্ত অবস্থায় আমদানি করলে মোট করভার ১৫২ শতাংশের মতো। দেশে উৎপাদন করলে তা নেমে আসে ৩৮ শতাংশে। কেন দেশে এত কর ছাড়, আমদানি করলে বেশি, এটা সবার জানা। তবু বলছি, দেশে উৎপাদনকারীরা যাতে আমদানিকারকদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে, সে জন্য বিদেশি পণ্যে বাড়তি কর।

কিন্তু নেটফ্লিক্স কোনো ধরনের কর ছাড়াই তার সিনেমা বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। কোনো আমদানি শুল্ক নেই, নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক নেই, অগ্রিম আয়কর কিংবা ভ্যাট নেই। বাংলাদেশে যেসব অনলাইন স্ট্রিমিং উদ্যোগ তৈরি হয়েছে, তারা কীভাবে শত শত কোটি ডলারের কোম্পানি নেটফ্লিক্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পারবে। তাদের সুরক্ষার কী হবে?

কর আদায়ের ক্ষেত্রে দেশীয়দের মোটামুটি গলা চেপে ধরা হচ্ছে। আর দেশের বাইরে থেকে এ দেশে ব্যবসা করা বহুজাতিক টেক জায়ান্টদের আয়কর দিতে হচ্ছে না। এটা বড় ধরনের বৈষম্য। দেশীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পণ্যের কাঁচামাল আমদানির সময় অগ্রিম আয়কর কেটে রাখা হয়। লাভ হোক, লোকসান হোক—এই টাকা আয়কর হিসেবেই নিয়ে নেয় সরকার। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের প্রভাবশালী সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বারের সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুরসহ অনেকে আপত্তি করেছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, আয় না হলে আয়কর কেন দেব। কেউ তাঁদের কথা শোনেনি। কর রয়ে গেছে। কিন্তু গুগল, ফেসবুক, নেটফ্লিক্সদের কাছ থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কিন্তু অগ্রিম আয়কর কেটে রাখে না।

বিলাস পণ্য ও ক্ষতিকর পণ্যের ওপরে সরকার উচ্চ হারে কর আরোপ করে। সব দেশেই এটা করা হয়। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের সামাজিকভাবে ক্ষতিকর অ্যাপ, আসক্তি তৈরি হয় এমন গেমস ইত্যাদি সেবার ওপর কি নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপের কথা ভাবা শুরু হয়েছে?

দেশে দেশে ডিজিটাল কর

বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ডিজিটাল অর্থনীতির আকার বিশ্বের মোট জিডিপির (মোট উৎপাদন) সাড়ে ১৫ শতাংশ। এই অর্থনীতি এগিয়ে যাওয়ার গতি বিশ্ব জিডিপির গতির আড়াই গুণ। ভবিষ্যতে ডিজিটাল অর্থনীতি বৈশ্বিক জিডিপিতে তার হিস্যা বাড়াবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই ডিজিটাল অর্থনীতিকে করের আওতায় আনতে ধনী-গরিব সব দেশই তৎপর। অনেক ক্ষেত্রে কৌশল না পেয়ে সরাসরি একটি কর বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

যেমন ফ্রান্স। দেশটিতে গত ডিসেম্বর থেকে ৩ শতাংশ হারে তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানির ওপর ডিজিটাল সার্ভিস ট্যাক্স (ডিএসটি) আরোপ করা হয়। এর আগেই ২০১৯ সালে দেশটি এই কর আরোপের বিধান রেখে আইন পাস করে। যদিও বিরোধিতা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তাদের বক্তব্য ছিল, এই কর ন্যায্য নয়।

বহুজাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেপিএমজির সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে কোন কোন দেশে ডিএসটি আরোপ করা হয়েছে, তা তুলে ধরা হয়। তাদের তথ্য অনুযায়ী, ১৮টি দেশ ডিজিটাল কর আরোপ করেছে বা প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে আছে পাশের দেশ ভারত। সমপর্যায়ের অর্থনীতির দেশ কেনিয়া। ভারতে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২ শতাংশ হারে ডিজিটাল কর কার্যকর হয়েছে। কেনিয়া দেড় শতাংশ হারে আরোপ করে গত জানুয়ারি থেকে।

বাংলাদেশ কী করছে

কয়েক বছর ধরেই ফেসবুক, গুগলের মতো তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে করের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে আসছে সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। এ নিয়ে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে দুই দফায় তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে চিঠি দেয় নোয়াব। দেশে সর্বোচ্চ আদালতও টেক জায়ান্টদের কাছ থেকে কর আদায়ে বিভিন্ন সময়ে নির্দেশনা দিয়েছেন।

এরপর সরকার এসব প্রতিষ্ঠানকে করের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়। তবে সেটা শুধু ভ্যাটের ক্ষেত্রেই এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান। ফেসবুক-গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে ভ্যাট নিবন্ধন নিতে শুরু করেছে। এর আগে দেশে ২০১৯-২০ অর্থবছরে নতুন ভ্যাট আইনের আওতায় আলাদা সেবা কোড ‘ইলেকট্রনিক সেবা’ সৃষ্টি করা হয়। এর আওতায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছরের জুনে অনলাইন স্ট্রিমিং সাইটগুলোর বিলের বিপরীতে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট কেটে রাখার নির্দেশ দেয় ব্যাংকগুলোকে।

প্রশ্ন হলো, কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে আয়কর আদায় করা যাবে কীভাবে ও সেটা আদায় করা হবে কি না।

সহজ পথে হাঁটা কি এখানেও ইউনিভার্সিটি পেলসিলভানিয়ার জার্নাল অ্যালামনাকে প্রকাশিত ‘আদিকালে কর’ শিরোনামের এক লেখায় জানা যায়, বিশ্বে প্রথম আনুষ্ঠানিক কর ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল প্রাচীন মিসরে। যুগে যুগে নানাভাবে কর ব্যবস্থার বিবর্তন ঘটেছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে করের রূপান্তর হয়েছে। বাংলাদেশে ভ্যাট ব্যবস্থার প্রচলন হয় ১৯৯১ সালে। যুগ পাল্টালে কর আদায়কারীদেরও বদলাতে হয়, দক্ষতা-সক্ষমতা বাড়াতে হয়। নতুন ধরনের ব্যবসার ক্ষেত্রে কর আদায় সহজ করতে প্রয়োজনে নিয়ম বদলাতে হবে।

অবশ্য বাংলাদেশে কর আদায়কারী সংস্থা এনবিআর কর আদায়ে সহজ পথে হাঁটতে অভ্যস্ত। দেশে এখন ৩৮ লাখ টিআইএনধারী (কর শনাক্তকরণ নম্বর) রয়েছেন। তাঁদের ৪৫ শতাংশই রিটার্ন জমা দেন না। তাঁদের ধরতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। এনবিআর যত কর আদায় করে, তার বেশির ভাগই উৎসে। এ কারণে ব্যবসায়ী তাঁর আয়করও মানুষের ওপর চাপিয়ে দেন।

উদাহরণ, আপেল, কমলা, আঙুর ইত্যাদি ফল আমদানিতে করভার ৮৯ শতাংশ। ব্যবসায়ীরা আমদানির সময় হিসাব করেন, করসহ মোট কত খরচ পড়বে। এর সঙ্গে মুনাফা যোগ করে দাম নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে ব্যক্তির অগ্রিম আয়কর ৫ শতাংশ রয়েছে। ফলে আয়করটিও ক্রেতাদের দিতে হয়।

যাহোক, টেক জায়ান্টদের কাছ থেকে কর আদায়ে সহজ পথে হাঁটার সুযোগ নেই। এ জন্য কৌশল বের করতে হবে। আরোপ করতে সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আদায় করতে প্রযুক্তি ও প্রযুক্তিগত ব্যবস্থায় নিরীক্ষায় দক্ষ হতে হবে। যে দেশে ঢাকা থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরের উপজেলার ধনীদের কাছ থেকে যথাযথ কর আদায় করা যায় না, সে দেশে কি ঢাকা থেকে ১২ হাজার ৫৮০ কিলোমিটার দূরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় থাকা গুগলের কাছ থেকে কর আদায় করা যাবে? নাকি আমরা এক লিটার সয়াবিন তেলে ২৬ টাকা, এক কেজি চিনিতে ২৫ টাকা, মুঠোফোনে ১০০ টাকা কথা বলায় ২৫ টাকা কর দিয়ে যাব, আর বিদেশি টেক জায়ান্টরা ছাড় পেয়েই যাবে।