করোনার কারণে আয় কমেছে রবির

  • প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে বেসরকারি মোবাইল অপারেটর রবির আয় সাড়ে ৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৬৩ কোটি টাকা।

  • গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৫ দশমিক ২ শতাংশ রাজস্ব আয় কমেছে রবির।

  • প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে রবির সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা ১৭ লাখ কমে ৪ কোটি ৮০ লাখ হয়েছে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে আয় কমে গেছে বেসরকারি মোবাইল অপারেটর ও ডিজিটাল সার্ভিসেস কোম্পানি রবির। প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় সাড়ে ৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৬৩ কোটি টাকায়। তবে করোনার এই সময়ে পরিচালন ব্যয় কমিয়ে আনার উদ্যোগের ফলে দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৫৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা কর-পরবর্তী মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে রবি।
কোম্পানিটির পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। কোম্পানিটি জানায়, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৫ দশমিক ২ শতাংশ রাজস্ব আয় কমেছে তাদের।

রাজস্ব আয় কমার পাশাপাশি করোনার কারণে সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যাও কমেছে রবির। প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা ১৭ লাখ কমে ৪ কোটি ৮০ লাখ হয়েছে, যা দেশের মোট গ্রাহকের ২৯ দশমিক ৭ শতাংশ। এই গ্রাহকের মধ্যে ৩ কোটি ২২ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী, যা রবির মোট গ্রাহকসংখ্যার ৬৭ শতাংশ। অবশ্য গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের চেয়ে গ্রাহকসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ। ভয়েস সেবা থেকে রাজস্ব আয় কমেছে আগের প্রান্তিকের চেয়ে ১৪ দশমিক ২ শতাংশ এবং গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ। গত প্রান্তিকের চেয়ে ইন্টারনেট ডেটা ব্যবহার ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ বাড়লেও করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে তা কমে গেছে। এ কারণে ডেটা বিক্রি থেকে আয়ও প্রথম প্রান্তিকের চেয়ে দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। তবে গত বছরের একই প্রান্তিকের চেয়ে ডেটা রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ।

২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রবি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ৮০৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা জমা দিয়েছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে রবির মূলধনী বিনিয়োগ ৩১১ কোটি টাকা।
মাহতাব উদ্দিন আহমেদ
ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, রবি

কোম্পানির আর্থিক কার্যক্রম ও সক্ষমতা সম্পর্কে রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের জীবনকালের যেকোনো প্রান্তিকের চেয়ে ২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিক আলাদা। মহামারির কারণে আমাদের ব্যবসা কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হবে, সে সম্পর্কে আমাদের সুস্পষ্ট কোনো ধারণা ছিল না। কঠিন এ সময়েও এসএমপি নীতিমালা নিয়ে বিটিআরসি কার্যকর কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যা আমাদের জন্য আশাব্যঞ্জক, যত শিগগির সম্ভব এসএমপি নীতিমালার পূর্ণ বাস্তবায়ন আমরা দেখতে চাই।’

কঠিন ব্যবসায়িক পরিস্থিতির মধ্যেও অংশীজনদের পাশে আমরা সবটুকু নিয়ে দাঁড়িয়েছি। ডেটা অ্যানালিটিকসের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবস্থাপনায় সরকারকে সাফল্যের সঙ্গে সহযোগিতা করেছি।
মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও

করোনা ছাড়াও জাতীয় বাজেটে সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে জানান মাহতাব উদ্দিন।

মহামারি মোকাবিলায় রবির সামাজিক বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কে মাহতাব উদ্দিন বলেন, ‘কঠিন ব্যবসায়িক পরিস্থিতির মধ্যেও অংশীজনদের পাশে আমরা সবটুকু নিয়ে দাঁড়িয়েছি। ডেটা অ্যানালিটিকসের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবস্থাপনায় সরকারকে সাফল্যের সঙ্গে সহযোগিতা করেছি। এ পুরো প্রান্তিক আমাদের কর্মীরা ঘরে থেকে কাজ করেছেন। এ সময় উদ্ভাবনী নানা উদ্যোগের মাধ্যমে গ্রাহকসেবা অব্যাহত রেখেছি। এটি একটি দুঃস্বপ্নময় অভিজ্ঞতা হলেও এ প্রান্তিক ভবিষ্যতের ডিজিটাল বিশ্বের আগাম চেহারা আমাদের দেখিয়েছে।’