ঘরে বসে বন্দরে থাকা পণ্য কেনার প্রতিযোগিতা

৮৭ হাজার কেজি রসুনের একটি চালান কেনার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগিতা হয়েছে
ছবি: সংগৃহীত

পণ্য পড়ে আছে চট্টগ্রাম বন্দরে। আমদানিকারক ছাড় না করায় নিলামে তুলেছে কাস্টমস। আর ঘরে বসে অনলাইনে সেই পণ্য কেনার জন্য প্রতিযোগিতামূলক দর দিয়েছেন নানা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে প্রথমবারের মতো অনলাইনে নিলামের সামগ্রিক চিত্র ছিল এটি।

অনলাইনে পণ্য কেনার জন্য দর জমা দেওয়ার এই প্রতিযোগিতা শেষ হয়েছে আজ বুধবার বিকেল পাঁচটায়। নির্ধারিত সময়সীমা শেষে অনলাইন নিলামে অংশগ্রহণকারী ও সর্বোচ্চ দরদাতার তালিকা প্রকাশ করা হয়। নিলামে অংশগ্রহণ থেকে সর্বোচ্চ দর জানার জন্য দরদাতাদের আগের মতো সশরীর যেতে হয়নি কাস্টম হাউসে।

ই-অকশন বা অনলাইন নিলামে পরীক্ষামূলকভাবে ১৬টি চালান নিলামে তোলা হয়।

গত রবি ও সোমবার বন্দর ও ডিপোতে নিলামে তোলা পণ্য আগ্রহীদের জন্য প্রদর্শন করা হয়। পরে আগ্রহী দরদাতারা কাস্টমসের ঠিকানায় অনলাইনে নিবন্ধন করে বিকেল পাঁচটার মধ্যে নিজেদের প্রস্তাবিত দর জমা দেন। সময়সীমা শেষ হওয়ার পর নিলাম শেষে দেখা যায়, নিলামে ১৬টি চালানের মধ্যে ৮টিতে ৪১টি দর জমা পড়েছে। একজন দরদাতা একাধিক চালান কেনার জন্য পৃথক পৃথক দর দিয়েছেন।

নিলামে অংশগ্রহণকারী মো. সাইফুদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এবারই প্রথম ঘরে বসে নিলাম কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পেরেছি। যানজট ঠেলে ছোটাছুটি করে কাস্টম হাউসে গিয়ে নিলামে অংশ নিতে হয়নি। এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। তবে শুরুতে নিবন্ধনের সময় কিছুটা সমস্যা হয়েছে। এগুলো কাটানো গেলে অনলাইন নিলামে সাড়া পড়বে।’

নিলামের তালিকায় দেখা যায়, প্রথম নিলামে ৮৭ হাজার কেজি রসুনের একটি চালান কেনার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগিতা হয়েছে। চালানটি কেনার জন্য অনলাইনে ১৪ জন দর জমা দেন। সবাইকে ছাড়িয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা হন এস ই এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এই চালানের সংরক্ষিত মূল্য ৬৪ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। নিয়মানুযায়ী, সংরক্ষিত মূল্যের ৬০ শতাংশের বেশি দর পাওয়া গেলে বিক্রির অনুমোদন দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

নিলামে সবচেয়ে দামি পণ্য ছিলো পুরোনো লোহার টুকরার তিনটি চালান। তিনটিই কেনার জন্য সাতটি দর জমা পড়েছে। এর মধ্যে ১৬৮ টনের ৮ কনটেইনারের একটি চালানের সংরক্ষিত মূল্য ছিল ২ কোটি ২৯ লাখ টাকা। এই চালানে সর্বোচ্চ দরদাতা হয় আই এন ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠান। নিলামে খেজুর, বিভিন্ন ধরনের কাপড়, হ্যাঙ্গারের মতো চালান তোলা হলেও কেউ অংশ নেয়নি।

সর্বোচ্চ দরদাতা হলেই পণ্য পাওয়ার নিশ্চয়তা নেই। নিলাম কমিটি যাচাই-বাছাই শেষে অনুমোদন দেওয়ার পরই খালাস নিতে পারবেন সর্বোচ্চ দরদাতারা।

নিলামের দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার ফয়সাল বিন রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রথমবার অনলাইনে নিলাম হিসেবে ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। প্রথম নিলামে যেসব সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে, তা দূর করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনলাইন নিলামের বড় সুবিধা হলো দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে নিয়ম মেনে যে কেউ অংশ নিতে পারবেন।

অনলাইনের পাশাপাশি সনাতন পদ্ধতিতেও নিলাম অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। অনলাইনে ত্রুটি–বিচ্যুতি দূর করার পর সনাতন পদ্ধতি উঠিয়ে পুরোপুরি অনলাইনে নিলাম করার লক্ষ্য কাস্টম হাউসের।