চালান জমা দেওয়া যাবে অনলাইনেও

স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু

যে চালান এত দিন করা যেত বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকে

এখন থেকে দেওয়া যাবে সব ব্যাংকে

জমা নেওয়া হবে ভ্যাট, জমি, গাড়ি নিবন্ধনের ফি

ব্যাংক লেনদেন
ছবি। প্রথম আলো

রাজস্ব ফাঁকিবাজদের জন্য যা দুঃসংবাদ, সেটাই আবার সুসংবাদ হচ্ছে গ্রাহকদের জন্য। খবরটি হচ্ছে, স্বয়ংক্রিয় চালান পদ্ধতি চালু হয়ে গেছে। আর এর মাধ্যমে শেষ হয়ে গেছে ভুয়া ট্রেজারি চালান জমা দেওয়ার দিন। যে চালান এত দিন করা যেত শুধু বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকে, তা করা যাবে এখন সব ব্যাংকে।

পদ্ধতিটি চালু করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এবং অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার যৌথভাবে আজ বৃহস্পতিবার ভার্চ্যুয়ালি স্বয়ংক্রিয় চালান পদ্ধতির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, হিসাব মহানিয়ন্ত্রক মো. জহুরুল ইসলাম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মো. আলমগীর হোসেন, অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান প্রমুখ। অর্থ বিভাগ এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়।

১ম পর্যায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি ঢাকা মহানগরীর সোনালী ব্যাংক, রূপালী, অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকের সব শাখার মাধ্যমে চালানের অর্থ দেওয়া যাবে। ২য় পর্যায়ে ঢাকা মহানগরীর অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের সব শাখা এবং ৩য় পর্যায়ে দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখায় বাস্তবায়ন করা হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৯ শাখা এবং সোনালী ব্যাংকের ১ হাজার ২২৪ শাখা ট্রেজারি চালান নেয়। অর্থ বিভাগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলেছে, উদ্বোধন হলেও স্বয়ংক্রিয় চালান পদ্ধতি সারা দেশে বাস্তবায়ন করা হবে মূলত তিন পর্যায়ে। আপাতত, অর্থাৎ ১ম পর্যায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি ঢাকা মহানগরীর সোনালী ব্যাংক, রূপালী, অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকের সব শাখার মাধ্যমে চালানের অর্থ দেওয়া যাবে। ২য় পর্যায়ে ঢাকা মহানগরীর অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের সব শাখা এবং ৩য় পর্যায়ে দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখায় বাস্তবায়ন করা হবে।

স্বয়ংক্রিয় চালান পদ্ধতিতে ব্যাংকের শাখার কাউন্টারে নগদ, চেক ও অ্যাকাউন্ট ডেবিটের মাধ্যমে অর্থ জমা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। গ্রাহকেরা অনলাইন ব্যাংকিং ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমেও চালানের অর্থ জমা দিতে পারবেন বলে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নগদে জমা দেওয়া হলে গ্রাহক তাৎক্ষণিকভাবে চালানের কপি পেয়ে যাবেন। আর চেকের মাধ্যমে দেওয়া হলে গ্রাহক চেক জমার স্লিপ পাবেন এবং পরে চেক ক্লিয়ার হলে গ্রাহককে পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী চালান দেওয়া হবে। চেক গ্রহণ থেকে চালান ইস্যু—প্রতিটি স্তরেই গ্রাহক তাঁর মুঠোফোনে খুদে বার্তা (এসএমএস) পাবেন।

এ ছাড়া অনলাইন ব্যাংকিং ও এমএফএসের মাধ্যমে অর্থ জমা দেওয়া হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের আরটিজিএসের (রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট) মাধ্যমে চালানের অর্থ তাৎক্ষণিকভাবে সরকারি কোষাগারে জমা হবে। আর নগদ ও অ্যাকাউন্ট ডেবিটের মাধ্যমে অর্থ জমা দেওয়া হলে ট্রেজারি চালানের অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা হবে একই দিন। চেকের ক্ষেত্রে চালানের অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা হবে চেক ক্লিয়ারিং হওয়ার দিন।

ঢাকা কর অঞ্চল-৪-এর আওতায় যেসব ব্যক্তি ও কোম্পানি আয়কর জমা দেবেন, তাঁদের দিয়েই শুরু করা হয় ঢাকা মহানগরীতে ‘স্বয়ংক্রিয় চালান পদ্ধতি’ বাস্তবায়নের কার্যক্রম। শিগগির ভ্যাট, জমি, গাড়ি নিবন্ধনের ফিসহ সরকারি ১৯৬ ধরনের রাজস্ব ও ফির অর্থ জমা নেওয়া হবে।