জসিম উদ্দিনের পর্ষদ এফবিসিসিআইয়ের দায়িত্ব নেবে বুধবার

দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন আসছে। নবনির্বাচিত সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন নতুন পর্ষদ আগামী দুই বছরের জন্য সংগঠনটির দায়িত্ব নেবে আগামী বুধবার।

এফবিসিসিআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহফুজুল হক গত বুধবার সংগঠনটির ২০২১-২৩ মেয়াদের জন্য নির্বাচিত পর্ষদের চূড়ান্ত ফলাফল জানান। এতে বলা হয়, এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম ও তাঁর পর্ষদ ১৯ মে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন সভাপতি ও পরিচালনা পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন।

আগের মেয়াদের মতো এবারও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক থেকে শুরু করে সভাপতি ও সহসভাপতি পদে সাধারণ সদস্যদের ভোট ছাড়াই সমঝোতার ভিত্তিতে প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা জায়গা করে নিয়েছেন। স্থান পেয়েছেন সরকার দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা।

এফবিসিসিআইয়ের নতুন সভাপতি জসিম উদ্দিন ২০১০-১২ সালে সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ছিলেন। তাঁর মালিকানাধীন বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের প্লাস্টিক পণ্য, আবাসন, গণমাধ্যম, তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা রয়েছে। বেঙ্গল কমার্শিয়াল নামে একটি নতুন ব্যাংকেরও অনুমোদন পেয়েছেন জসিম উদ্দিন। তিনিই ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। তাঁর ভাই বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম একজন সাংসদ, যিনি এখন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চেয়ারম্যান।

সভাপতি পদের জন্য সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে কয়েক মাস আগেই সবুজসংকেত পান জসিম উদ্দিন। ফলে সভাপতি পদে তাঁর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। তবে সহসভাপতি পদ নিয়ে বেশ দর-কষাকষি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হয়েছেন মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে সহসভাপতি হয়েছেন এম এ মোমেন, মো. আমিন হেলালী ও মো. হাবিব উল্লাহ ডন। আর চেম্বার গ্রুপ থেকে সহসভাপতি হয়েছেন মো. আমিনুল হক শামীম, সালাহউদ্দিন আলমগীর ও এম এ রাজ্জাক খান।

এখানে উল্লেখ্য, ২০২১-২৩ মেয়াদের জন্য সংগঠনটিতে মোট পরিচালক পদ ৮০টি। এসব পদ আবার দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে জেলাভিত্তিক বাণিজ্য সংগঠন বা চেম্বার থেকে ৪০ জন পরিচালক হন। বাকি পদ পণ্যভিত্তিক ব্যবসায়ী সংগঠনের জন্য সংরক্ষিত।

চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে ৩৪ জন মনোনীত পরিচালক পদের বিপরীতে আবেদন করেন ৩২ জন ব্যবসায়ী। অন্যদিকে সরাসরি ভোটের জন্য চেম্বার গ্রুপের ২৩ পরিচালক পদের বিপরীতে ২৫ জন প্রার্থী হয়েছিলেন। আর অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে ২৩ পদের বিপরীতে প্রার্থী হন ২৬ জন। তবে খেলাপি হওয়ায় অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের একজন প্রার্থিতা হারান। এরপরও চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপে ২ জন করে ৪ জন বেশি প্রার্থী ছিলেন। পরে সমঝোতার মাধ্যমে ৪ জন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এ জন্য সাধারণ সদস্যরা গত ৫ মে আর ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি।

সভাপতি ও সহসভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর এফবিসিসিআইয়ের পরিচালকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছেন ৭০-এ। তার মধ্যে অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে ৩৫ জন। বাকিরা চেম্বার গ্রুপ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। যদিও দুটি পরিচালক পদ শূন্যই থাকছে।

এফবিসিসিআইয়ে সর্বশেষ ভোট হয় ২০১৭ সালে, তা-ও আংশিক। ওই সময় সভাপতি হন শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। পরিচালক পদেও চেম্বার অংশে ভোট ছাড়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হন। তবে পণ্যভিত্তিক সংগঠন বা অ্যাসোসিয়েশন অংশে তখন ভোট হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছিলেন অনেক ব্যবসায়ী।