জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার দ্বিগুণ ছাড়াবে দুই বছরের ব্যবধানে

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল
ফাইল ছবি

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২ শতাংশ অর্জন করার ব্যাপারে আশাবাদী অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আজ বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে এমন আশাবাদের কথা জানান।

জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ২ শতাংশ ধরে বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট করা হয়েছিল। অর্থবছরজুড়ে ছিল কোভিড-১৯–এর প্রভাব। সাময়িক হিসাব করে পরে এটি করা হয় ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

তার আগের ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে প্রবৃদ্ধির হারও ধরা হয়েছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ। এ অর্থবছরের শেষ তিন মাস ছিল করোনাক্রান্ত। সরকারের পক্ষ থেকে ওই অর্থবছরের সাময়িক প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ বলা হয়েছিল। কিন্তু গত সপ্তাহের আগে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) চূড়ান্ত হিসাবে জানা গেল, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার আমরা ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ অর্জন করতে পেরেছি, যা এশিয়ার সব দেশের ওপরে। আপনারা জানেন, সেই অর্থবছরের একটা বড় অংশ আমরা অস্বাভাবিকভাবে পার করেছি এবং শুধু আমরা না, অন্যান্য দেশও সেভাবে পার করেছে। আর এ মুহূর্তে আমাদের জিডিপির যে অবস্থা, তাতে আমরা এটি (৭ দশমিক ২ শতাংশ) অর্জন করতে পারব বলে আশা করি।’

অর্থমন্ত্রীর আশাবাদকে আমলে নেওয়া হলে ২০১৯-২০ অর্থবছরের চূড়ান্ত প্রবৃদ্ধির হার ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ থেকে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে দ্বিগুণ ছাড়িয়ে ৭ দশমিক ২ শতাংশ হবে।

প্রবাসী আয়ের (রেমিট্যান্স) জাদু শেষ হতে চলেছে বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রবাসী আয় কোনো জাদু নয়। তাই এটা যে জায়গায় ছিল সে জায়গায়ই থাকবে। ২০১৯ সালে যখন আমরা এ বিষয়ে প্রণোদনা দেওয়া শুরু করি, তখন থেকেই একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। তারা বলে আসছিল, প্রণোদনা দিয়ে প্রবাসী আয় বাড়ানো যাবে না। যখন বাড়ল, তখন তারা বলল এটা সাময়িক, কখনো টেকসই হবে না।’

এদিকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান কার্যক্রম চালাতে ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ডিজিটাল ক্লাসরুম কনটেন্ট’ কেনার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়–সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সামসুল আরেফিন সাংবাদিকদের জানান, শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়েছে করোনার কারণে।

ঘাটতি পূরণে শিক্ষার্থীদের অনলাইন পদ্ধতিতে পাঠদান কার্যক্রম চালাতে একটি উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সে জন্য সরকারি মালিকানাধীন কম্পিউটার কাউন্সিলের কাছ থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ১৭ কোটি ৪৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ডিজিটাল ক্লাসরুম কনটেন্ট কিনবে। তা কেনার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বৈঠকে।

এ ছাড়া কোভিড-১৯ মহামারিতে আক্রান্ত রোগীর জীবন রক্ষার্থে দ্রুততম সময়ে পিসিআর টেস্ট কিট, অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট, পিসিআর ল্যাব সরঞ্জাম, সিপিএপি, বিআইপিএপি মেশিনসহ বিভিন্ন মালামাল জরুরি ভিত্তিতে ডিপিএমে কেনার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।