ডিজিটাল বাণিজ্যের জন্য প্রযুক্তি সক্ষমতা জরুরি

ডিজিটাল সেবা খাতের বাণিজ্যের বাজার বড় থাকলেও বাংলাদেশ এ ব্যাপারে ভালোভাবে প্রস্তুত নয়।

প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)
প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য ডিজিটাল মাধ্যম শুধু সহজ নয়, সাশ্রয়ীও। প্রবৃদ্ধির জন্যই চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এই যুগে প্রযুক্তি সক্ষমতা বৃদ্ধি জরুরি। এর মাধ্যমেই অনেক গুণ বাড়ানো সম্ভব বাণিজ্য তথা ডিজিটাল সেবা খাতের বাণিজ্য। এ জন্য অবশ্য কিছু কাজ করতে হবে বাংলাদেশকে। সবার আগে করতে হবে সেবা খাতের বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত ডিজিটাইজেশনের নীতিগুলোকে যুগোপযোগী করা।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ফ্রিডরিচ-এবার্ট-স্টিফটংয়ের (এফইএস) যৌথ আয়োজনে গতকাল সোমবার ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত ‘ডিজিটাল যুগে সেবা খাতের বাণিজ্য’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলা হয়েছে।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সাবেক জ্যেষ্ঠ গবেষণা অ্যাসোসিয়েট মো. কামরুজ্জামান। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন এফইএস বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি ফেলিক্স কলবিজ।

প্রবন্ধে বলা হয়, বস্ত্র ও পোশাক খাতে বাংলাদেশের রপ্তানি ব্যাপকভাবে কেন্দ্রীভূত হয়েছে। নতুন বাজারে প্রবেশের জন্য দরকার এখন কৌশলগত উন্নয়ন ও সেবা বাণিজ্যের প্রচার। এখন ডিজিটাল যুগ। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। প্রতিবন্ধকতাও দূর করতে হবে। পাশাপাশি দরকার এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), তথ্য বিশ্লেষণ, মেশিন লার্নিং এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে সেবা গ্রহণের পদ্ধতিকে সবল করা। আরও বলা হয়, বাংলাদেশে ডিজিটাল বাণিজ্য গত কয়েক বছরে বহুগুণ বেড়েছে। করোনা মহামারি বাংলাদেশের গ্রাহকদের অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পণ্য ও পরিষেবা গ্রহণ করতে উত্সাহিত করেছে। তবে ব্যবসায়ের পরিবেশ এখনো সন্তোষজনক নয়। বাণিজ্য সম্প্রসারণকে বাধাগ্রস্ত করে এমন অনেক বাধা রয়ে গেছে। বিশেষত ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের উদ্যোগের (এসএমই) ক্ষেত্রে।

আলোচনায় অংশ নেন এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব উর রহমান, জাতিসংঘ বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থার জ্যেষ্ঠ অর্থনৈতিকবিষয়ক কর্মকর্তা রেশমি বঙ্গ, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সৈয়দ আলমাস কবীর, বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মো. মেজবাউল হক, শ্রীলঙ্কার ইনস্টিটিউট অব পলিসি স্টাডিজের (আইপিএস) নির্বাহী পরিচালক দুশনি ওয়েরাকুন, সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে যে ডিজিটাইজেশন চলছে, তা এই মহামারি চলাকালীন ত্বরান্বিত হয়েছে। উল্টোভাবে বলতে গেলে জাতীয় অর্থনীতি এবং ব্যক্তি খাতের জন্য নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। সেবা খাতের বাণিজ্যে ডিজিটাল পদ্ধতির যে সুবিধা রয়েছে, সে জন্য বাংলাদেশকে প্রস্তুত থাকতে হবে। ডিজিটাল যুগে বাংলাদেশকে এই নতুন বাণিজ্য ব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে, তা–ও খুঁজে বের করা জরুরি বলে মত দেন বক্তারা। বলেন, চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা দূর করতে কিছু কার্যকর পরিকল্পনা নিতে হবে। পাশাপাশি সম্পর্কিত নীতিগুলোকে যুগোপযোগী করা দরকার।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক যথাযথ নীতিমালা করতে হবে। তদারকি ব্যবস্থাও শক্তিশালী করা প্রয়োজন। কর্মসংস্থানে নারীর অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে তাঁদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে হবে।