তরুণ স্থপতিদের পুরস্কৃত করল কেএসআরএম

রাজধানীর একটি হোটেলে সেরা তরুণ স্থপতিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পরে ফটোসেশনে অংশ নেন তরুণ স্থপতিরা। ঢাকা, ৮ জানুয়ারি। ছবি: আশরাফুল আলম
রাজধানীর একটি হোটেলে সেরা তরুণ স্থপতিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পরে ফটোসেশনে অংশ নেন তরুণ স্থপতিরা। ঢাকা, ৮ জানুয়ারি। ছবি: আশরাফুল আলম

স্থাপত্যবিদ্যার তরুণ শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজন। তাতে ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩০টি প্রকল্প অংশ নেয়। প্রকল্পগুলো নিয়ে হয় তিন দিনের প্রদর্শনী। বিশিষ্ট স্থপতিদের নিয়ে গঠিত বিচারকমণ্ডলী আধুনিক স্থাপত্য শৈলীর দূরদর্শিতা ও মেধার ভিত্তিতে এর মধ্য থেকে তিনটি প্রকল্পকে সেরা নির্বাচিত করেন।

রাজধানীর একটি হোটেলে বুধবার সেরা তরুণ স্থপতিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। তরুণ, সৃজনশীল ও মেধাবী স্থপতিদের উৎসাহিত করতে এই স্থাপত্য প্রকল্প প্রতিযোগিতার আয়োজন করে কবির স্টিল রি-রোলিং মিলস (কেএসআরএম)। ‘কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ডস ফর ফিউচার আর্কিটেক্টস: বেস্ট আন্ডার গ্র্যাজুয়েট থিসিস’ শীর্ষক এই আয়োজনে সহযোগিতা করে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট (আইএবি)।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ের নবীনেরা অপার সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। তাদের বিকশিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। নিরলস প্রচেষ্টা থাকলে সাফল্য আসবেই। অর্থনীতি, অবকাঠামোর দিক থেকে এগোলেও নৈতিকতা ও মূল্যবোধের সূচকে বাংলাদেশ এগোতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন রেজাউল করিম।

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, তরুণ স্থপতিদের টেকসই, পরিবেশসম্মত ও দুর্যোগ সহনশীল স্থাপনা গড়ার দিকে নজর দিতে হবে। স্থাপনা হতে হবে দেশের সংস্কৃতিকে মাথায় রেখে, অন্য কোনো দেশের অনুকরণে না।

অনুষ্ঠানে তরুণ স্থপতিদের উদ্দেশ্যে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভিত্তি স্থপতিবৃন্দের পরিচালক ইকবাল হাবিব। তিনি বলেন, টেকসই নগর উন্নয়নে অর্থনীতি, পরিবেশ, সাম্য—তিনটি বিষয় জরুরি। কিন্তু দেশের বর্তমান উন্নয়ন শুধু সবলের জন্য। অর্থনৈতিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে ও শারীরিকভাবে সবলদের জন্য। যেখানে বিশেষভাবে সবল ব্যক্তি (প্রতিবন্ধী), নারী ও শিশুদের স্থান কোথায়?

এই পুরস্কার স্থাপত্য শিক্ষার মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন আইএবির সভাপতি জালাল আহমেদ। তিনি বলেন, দেশের ২৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থাপত্যবিষয়ক শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। যারা তরুণ, মেধাবী, সৃষ্টিশীল তাদের অনুপ্রেরণা দেবে এই পুরস্কার।

এই পুরস্কার শুরুর পেছনের গল্প শোনান কেএসআরএম স্টিল প্ল্যান্ট লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান। তিনি বলেন, নতুন আধুনিক স্থাপত্য কাজ দেখলে অনুপ্রাণিত হই। ভবিষ্যৎ স্থপতিদের অনুপ্রেরণা দিতে কেএসআরএম এই কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছে। দীর্ঘ মেয়াদে এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।

কেএসআরএম ও আইএবি এই কর্মসূচির বিষয়ে গত ২৪ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে। এরপর ২৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর তিন দিনব্যাপী প্রকল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। তাতে আইএবির অধিভুক্ত দশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিনটি করে মোট ৩০টি সেরা গবেষণাপত্র প্রদর্শিত হয়। সেখান থেকে বিচারকেরা তিনটি প্রকল্পকে সেরা নির্বাচিত করেন।

সেরা তিন নবীন স্থপতির মধ্যে প্রথম হয়েছেন আরমান আলম, দ্বিতীয় বৃষ্টি সরকার ও তৃতীয় হয়েছেন রহমান গোলাম মাহমুদুর। এ ছাড়া ফাহিম হাসান ও শরীফুল আলমকে দেওয়া হয় বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার। পুরস্কার বিতরণের সময় অতিথিদের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন কেএসআরএমের পরিচালক সারোয়ার জাহান। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন আইএবির সেক্রেটারি (শিক্ষা) স্থপতি আরেফিন ইব্রাহিম।