তিন বিয়ে, সাত সন্তান ও বিতর্ক—এসব নিয়েই এলন মাস্ক

এলন মাস্ক
ছবি। রয়টার্স

টেসলা কর্ণধার এলন মাস্ক—সাফল্য ও বিতর্ক যেন তাঁর নিত্যসঙ্গী। সম্পদের নিরিখে সম্প্রতি মাইক্রোসফট কর্ণধার বিল গেটসকে টপকে বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ২ নম্বরে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। চলতি বছরে বিশ্বের ৫০০ জন কোটিপতির মধ্যে ২ নম্বরে চলে এসেছেন তিনি। ব্লুমবার্গ বিলিওনেয়ার ইনডেক্স সম্প্রতি এই খবর দিয়েছে

পেশাগত জীবনে সফলতার পাশাপাশি তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও বেশ বর্ণিল। এ পর্যন্ত বিয়ে করেছেন তিনবার—প্রতিবারই বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। বাবা হয়েছেন ৭ সন্তানের। নিজের এক ছেলের নাম রেখেছেন এক্স এই এ-১২ মাস্ক। এই নাম শুনে তো নেট দুনিয়ার চক্ষু চড়কগাছ। নাম নিয়ে তাই রসিকতাও হচ্ছে প্রচুর। কেউ বলছেন, ‘এ তো নাম নয়, যেন পাসওয়ার্ড!’ এটা সত্যিকারের নাম না কোডনেম?

তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে এলনের বিচ্ছেদ হয় ২০১৬ সালে। তারপর থেকে প্রেমিকা গ্রিমসের সঙ্গেই আছেন তিনি। এক্স এই এ-১২ মাস্ক প্রেমিকা গ্রিমসেরই ছেলে। পাশাপাশি ২০০৮ সালে নির্মিত আয়রন ম্যান ছবির টনি স্টার্ক চরিত্রটি তাঁর আদলেই তৈরি করা হয়েছে।

পেশাগত জীবনে সফলতার পাশাপাশি তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও বেশ বর্ণিল। এ পর্যন্ত বিয়ে করেছেন তিনবার—প্রতিবারই বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। বাবা হয়েছেন ৭ সন্তানের। নিজের এক ছেলের নাম রেখেছেন এক্স এই এ-১২ মাস্ক। এই নাম শুনে তো নেট দুনিয়ার চক্ষু চড়কগাছ। নাম নিয়ে তাই রসিকতাও হচ্ছে প্রচুর। কেউ বলছেন, ‘এ তো নাম নয়, যেন পাসওয়ার্ড!’ এটা সত্যিকারের নাম না কোডনেম?

বছরের শুরুতে তিনি ছিলেন শীর্ষ ধনীর তালিকায় ৩৫ নম্বরে। ২ নম্বরে উঠে আসতে তাঁকে সাহায্য করেছে শেয়ারের উচ্চ মূল্য। হু হু করে টেসলা মোটরের শেয়ারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এলনের মোট সম্পদের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার ৭৯০ কোটি ডলার।

এলনের জন্ম ১৯৭১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ায়। বাবা ছিলেন একজন প্রথিতযশা প্রকৌশলী। মা ছিলেন জনপ্রিয় কানাডিয়ান মডেল। আজ যে খ্যাতি, যে প্রতিপত্তি এলনের, তার ভিত তৈরি হয়েছে সেই শৈশবেই।

কৌতূহলী মন

ছেলেবেলা থেকেই এলন নিত্যনতুন জিনিস আবিষ্কারের কথা ভাবতেন। নানা কিছু নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করতেন। তাঁর কল্পনার মাত্রা ছিল বাঁধনছাড়া। সব সময় কল্পনায় এতটাই বুঁদ হয়ে থাকতেন যে অনেক সময় কারও ডাকে সাড়াও দিতেন না। সে জন্য একবার তাঁকে চিকিৎসকের কাছেও নিয়ে যেতে হয়েছিল। অন্য শিশুদের মতো তাঁর আচরণ স্বাভাবিক ছিল না। ফলে চিকিৎসক তাঁর ব্রেন থেরাপির পরামর্শও দেন। এমনকি এলন কানে শুনতে পান কি না, তা–ও পরীক্ষা করিয়েছিলেন সেই চিকিৎসক।

প্রেমিকা গ্রিমস–এর সঙ্গে এলন মাস্ক
ছবি: রয়টার্স
আরও পড়ুন

এলন যখন মাত্র ১০ বছরের, তখন তাঁর বাবা–মায়ের বিচ্ছেদ হয়। সে নিয়ে এতটুকু মাথাব্যথা ছিল না তাঁর। বরং তখন তাঁর মধ্যে কম্পিউটার নিয়ে অনেক বেশি কৌতূহল। ওই ১০ বছরেই শিখে ফেলেছিলেন প্রোগ্রামিং। তার দুই বছরের মধ্যে নিজের তৈরি সফটওয়্যার গেম ‘ব্লাস্টার’ বিক্রি করেছিলেন। সেটাই ছিল তাঁর জীবনের প্রথম উপার্জন।

ফলে পরিণত বয়সে তিনি যে সব ধরনের ভবিষ্যৎ–মুখী প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করবেন, তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই—একাধারে তিনি বৈদ্যুতিক গাড়ি কোম্পানি টেসলা ও মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্পেস এক্সের প্রধান নির্বাহী, দ্য বোরিং কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা, ওপেন এআই ও নিউরালিংকের সহপ্রতিষ্ঠাতা। তিনি এ–ও বলে থাকেন, মানুষ পৃথিবী ছেড়ে মঙ্গলগ্রহে বসতি না করা পর্যন্ত তিনি থামবেন না।

বিতর্ক

বৈদ্যুতিক গাড়ি, রকেট, সৌর ব্যাটারি নিয়ে কারবার করে শত শত কোটি টাকা কামিয়েছেন মাস্ক। বিতর্কও তাঁর পিছু ছাড়েনি। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সরকারি তদন্তও হয়েছে। এমনকি ট্রাম্পের মতো তিনিও করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন টুইটারে। ব্যবসা-বাণিজ্য খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

উচ্চশিক্ষা ও প্রতিষ্ঠান তৈরি১৯৮৯ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য এলন কানাডায় চলে যান। ওই বছরই তিনি কানাডার নাগরিকত্ব পান। পরে পদার্থবিদ্যায় পিএইচডি করার জন্য ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। কিন্তু সেই পড়াশোনা মাঝপথেই থামিয়ে দেন। মাত্র দুই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

তারপরই নিজের প্রথম সফটওয়্যার কোম্পানি ‘জিপ ২’ খোলেন। সেটা ছিল ১৯৯৫ সাল। ‘জিপ ২’ ছিল অনলাইন সিটি গাইড কোম্পানি।সেখাই থেমে থাকেননি। ১৯৯৯ সালে অনলাইন ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস কোম্পানি ‘পেপল’ গড়ে তোলেন। তাঁর তৃতীয় কোম্পানি ‘স্পেসএক্স’। ২০০২ সালে এই কোম্পানি গড়ে তোলেন তিনি। তার ৬ বছরের মধ্যেই নাসার সঙ্গে যুক্ত হয়ে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাঠাতে শুরু করে তাঁর সংস্থা। ২০০৪ সালে তিনি টেসলা মোটরের সিইও হন।

সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার