দ্বিগুণ দামে ‘স্থিতিশীল’ পেঁয়াজের বাজার

চাহিদা অনুযায়ী বাজারে জোগান কম থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেশি পড়ছে। অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে পেঁয়াজসহ অন্যান্য পণ্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন এক খুচরা বিক্রেতা। বুধবার রাত ১২টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে
ছবি: জাহিদুল করিম

পেঁয়াজের দাম আর কমছে না। ঢাকার খুচরা বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশি পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। বিক্রেতারা পাবনা, রাজশাহী ও মানিকগঞ্জের পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজিতেও বিক্রি করেন। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয় প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, এক মাস আগের তুলনায় এখন পেঁয়াজের দর ১১৯ থেকে ১৭২ শতাংশ বেশি।

ভারত ১৪ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার পর সরকার বাজারে ব্যাপকভাবে অভিযান চালায়। ব্যবসায়ীদের জরিমানা করে। পেঁয়াজ আমদানির শুল্ক তুলে নেওয়া হয়। সরকারি উদ্যোগে অর্ধেকেরও কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি বাড়ানো হয়। কিন্তু দাম সেভাবে কমেনি।

ভারত রপ্তানি বন্ধের পরের দিন লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে দাম যে পর্যায়ে উঠেছিল, তার চেয়ে পাইকারি বাজারে দর প্রতি কেজি ১৫ টাকার মতো কমেছে। চার-পাঁচ দিন ধরে বাজারে তেমন কোনো পরিবর্তন নেই। খুচরা বাজারে দাম তেমন একটা কমেনি বললেই চলে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের একজন ব্যবসায়ী বলেন, দেশি পেঁয়াজের এখন আর কোনো প্রতিযোগী নেই। পাকিস্তান, মিসর, তুরস্ক বা চীন থেকে পেঁয়াজ আমদানির ঋণপত্র বা এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খোলা হলে ৩০ থেকে ৪৫ দিন সময় লাগে। আমদানি করা পেঁয়াজ না এলে দাম সেভাবে কমার সম্ভাবনা কম। ওদিকে মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আসছে না।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) ৯ সেপ্টেম্বরের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে পেঁয়াজের মজুত রয়েছে সোয়া পাঁচ লাখ টনের মতো। কমিশনের সদস্য শাহ মো. আবু রায়হান আলবেরুনী বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেগুলো এলে দাম স্বাভাবিক হবে।

পেঁয়াজের মতোই বাজারে আদার দাম চড়া। ঢাকার খুচরা বাজারে চীনা আদা ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। আর ভারতের কেরালার আদা বিক্রি হয় ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা দরে। বাজারে স্বাভাবিক সময়ে আদা সাধারণত ১০০ টাকা কেজির আশপাশে থাকে।

বাজারে এখন চাল, ভোজ্যতেল, সবজি, আলু ও ডিমের দাম বেশ চড়া। সবজির দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। চালের বাজারও বাড়তি।