পাচারের অর্থ ফেরানোর সুযোগ অনৈতিক

বৈদেশিক মুদ্রা সংকটের যুক্তিতে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ রেমিট্যান্স আকারে ও স্বল্প জরিমানা দিয়ে ফেরানোর সুযোগকে অনৈতিক আখ্যা দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, এ ধরনের সুযোগ আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও পাচারকারীদের পৃষ্ঠপোষকতার শামিল। অন্যদিকে এ থেকে প্রত্যাশিত ফল পাওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ।

গতকাল সোমবার টিআইবি এক বিবৃতিতে জানায়, সরকার ঢালাওভাবে যে সুযোগের ঘোষণা দিয়েছে, তাতে পাচারকারীরাও প্রবাসীদের মতো আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা পাবেন। এদিকে বাজেটে স্বল্প জরিমানা দিয়ে বিদেশে অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের ঘোষণা এবং তাতে কর ছাড় দেওয়ার যে আভাস অর্থমন্ত্রী দিয়েছেন, তা অনৈতিক এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতির সম্পূর্ণ বিপরীত-অসাংবিধানিকও বটে।

আইনের পরিপন্থী এসব সুযোগ বাতিলের দাবি জানিয়ে টিআইবি বলছে, নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে এই প্রক্রিয়ায় পাচার করা অর্থ ফেরত পাওয়ার যে প্রত্যাশা করা হচ্ছে, বাস্তবে তার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী গর্হিত এই অপরাধের জন্য শাস্তির বদলে পুরস্কার দেওয়ার ব্যবস্থা অর্থ পাচারকারী ও দুর্নীতিবাজদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার শামিল।

বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে এবং দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সংকটকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে অর্থ পাচারকারীদের অনৈতিক ও বৈষম্যমূলক সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।

দুর্নীতি ও অর্থ পাচারকে এভাবে রাজক্ষমা ঘোষণায় চলমান মামলাগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘বাজেটে বারবার কালোটাকা সাদা করার অন্যায্য, অসাংবিধানিক, বৈষম্যমূলক ও দুর্নীতিসহায়ক সুযোগ বাস্তবে কোনো ফল বয়ে আনবে না; বরং অর্থ পাচারকারীরা আরও উৎসাহিত হবে।