প্যান্ডোরা পেপারসের নতুন তালিকায় বাংলাদেশের আট ব্যবসায়ীর নাম

বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলা প্যান্ডোরা পেপারসের দ্বিতীয় ধাপের তালিকা প্রকাশ করেছে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক জোট ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস বা আইসিআইজে। গতকাল সোমবার গভীর রাতে প্রকাশ পাওয়া এ নথিতে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত আটজনের নাম পাওয়া গেছে। এবারের তালিকায় বিশ্বের মোট ৭ লাখ ৪০ হাজার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে।

করস্বর্গ হিসেবে পরিচিত বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের অফশোর কোম্পানিতে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অর্থ ও গোপন লেনদেনের তথ্য ফাঁস করা হয়েছে প্যান্ডোরা পেপারসের নথিতে। এর আগে গত ৩ অক্টোবর ফাঁস করা হয় প্যান্ডোরা পেপারসের প্রথম ধাপের নথি।

দ্বিতীয় ধাপের প্যান্ডোরা পেপারসে নাম আসা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা হলেন নিহাদ কবির, সাইদুল হুদা চৌধুরী, ইসলাম মঞ্জুরুল, মোহাম্মদ ভাই, সাকিনা মিরালী, অনিতা রানী ভৌমিক, ওয়াল্টার পোলাক ও ডেনিয়েল আর্নেস্তো আইউবাত্তি।

তাঁদের মধ্যে নথিপত্রে নিহাদ কবিরের বাংলাদেশে ঠিকানা হিসেবে দেখানো হয়েছে ঢাকার ইন্দিরা রোডের একটি বাড়িকে। তালিকায় নাম আসা অন্যদের মধ্যে ইসলাম মঞ্জুরুল, সাইদুল হুদা চৌধুরী, সাকিনা মিরালী ও মোহাম্মদ ভাই গুলশানের এবং অনিতা রানী চকবাজারের ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। আর ডেনিয়েল আর্নেস্তো আর্জেন্টিনার পাশাপাশি বাংলাদেশ এবং ওয়াল্টার রাশিয়ার ঠিকানা ব্যবহার করেছেন।

নাম প্রকাশ পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে মঞ্জুরুল ওরিয়েন্টাল অ্যাগ্রি কেমিক্যাল কোম্পানি, সাইদুল বেবেন ইন্টারন্যাশনাল ইনক, অনিতা আনটেরিস হোল্ডিংস লিমিটেড, সাকিনা মুনরেকার সার্ভিসেস করপোরেশন, মোহাম্মদ ভাই ১৯৩৬ হোল্ডিংস লিমিটেড, ওয়াল্টার পোলাক ফ্লিন্ট এন্টারপ্রাইজেস এসএ এবং ডেনিয়েল আর্নেস্তো কুডেল লিমিটেড নামের কোম্পানির মালিক। এই সব কোম্পানি ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে নিবন্ধিত।

প্যান্ডোরা পেপারস ফাঁসের মধ্য দিয়ে বিশ্বের অনেক ধনী ও ক্ষমতাবান ব্যক্তির অর্থ পাচার, কর ফাঁকি ও গুপ্ত সম্পদের তথ্য সামনে এসেছে। ১১৭টি দেশের ৬ শতাধিক সাংবাদিক কয়েক মাস ধরে ১৪টি উৎস থেকে নথিগুলো সংগ্রহ করেছেন।

নথি ফাঁসের সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকেরা জানিয়েছেন, প্যান্ডোরা পেপারসে নাম এলেই কেউ বেআইনি কাজে জড়িত বলে নিশ্চিত হওয়া যায় না। প্যান্ডোরা পেপারস প্রকাশের পর গত অক্টোবরে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ভিনদেশে অর্থ ও সম্পদ রাখতে চাওয়ার পেছনে কিছু বৈধ কারণও রয়েছে। এসব কারণের মধ্যে আছে অপরাধীদের আক্রমণ কিংবা অস্থিতিশীল সরকার থেকে সুরক্ষা। গোপনে অফশোর কোম্পানির মালিকানা থাকা অবৈধ কিছু না হলেও অর্থ ও সম্পদ সরিয়ে নেওয়ার কাজে এ ধরনের গোপন কোম্পানির ব্যবহার ভালো কিছু নয়; বরং তা অপরাধের প্রক্রিয়া গোপন রাখার একটি যথাযথ উপায়।