বাংলাদেশকে ১,৫০২ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে ফ্রান্স

অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সরকার ইতিমধ্যে ১ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।

করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিপর্যস্ত দেশের অর্থনীতি। কমেছে রাজস্ব আদায়। অনানুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকেরা কাজ হারিয়ে ফিরে গেছেন গ্রামে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। তাই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সরকার ইতিমধ্যে ১ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ইউরোপীয় দেশ ফ্রান্স।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য অনুযায়ী ফ্রান্স সরকারের অর্থায়নকারী সংস্থা এজেন্সি ফ্রান্সেস ডেভেলপমেন্ট (এএফডি) বাংলাদেশকে ১৫ কোটি ইউরো ঋণ দিচ্ছে, যা বাংলাদেশের প্রায় ১ হাজার ৫০২ কোটি টাকা। ‘বাজেট সহায়তা’ হিসেবে এই ঋণ পাওয়ায় সরকার তা যেকোনো খাতে খরচ করতে পারবে। তবে ইআরডির কর্মকর্তারা বলছেন, করোনার প্রভাব মোকাবিলায় সরকার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছে, ফ্রান্সের ঋণ সেই খাতে খরচ হবে। ব্যয় করা হবে টিকা আমদানিতেও। এএফডির এই ঋণের সুদের হার দেড় শতাংশ।

গত আট মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। ২৬ মার্চ থেকে টানা দুই মাসের লকডাউন চলে। করোনার কারণে সরকারের আয় কমেছে, বেড়েছে ব্যয়। ইআরডির তথ্য বলছে, করোনা মোকাবিলায় সরকার গত জুন মাসে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থার কাছে ঋণ চেয়ে চিঠি দেয়। ইআরডির কর্মকর্তারা বলছেন, ঋণ নিয়ে শিগগিরই এএফডির সঙ্গে চুক্তি হবে। আশা করা হচ্ছে, এপ্রিলের মধ্যে টাকা ছাড় শুরু হবে।

জানতে চাইলে অতিরিক্ত সচিব খোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, এএফডির কাছ থেকে যে দেড় হাজার কোটি টাকা পাওয়া যাচ্ছে, এটি ‘বাজেট সহায়তা’ হিসেবে দেওয়া হচ্ছে। তাই সরকার চাইলে এই টাকা যেকোনো খাতে খরচ করতে পারবে। সেটা প্রণোদনা খাতেও করতে পারবে, আবার টিকা আমদানিতেও।

করোনা মোকাবিলায় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সরকার এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। প্যাকেজের সংখ্যা করা হয় ২১। অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে প্যাকেজের আকার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৪ শতাংশের বেশি, যা দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে জিডিপির বিবেচনায় সর্বোচ্চ। আরও ১০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের ঘোষণা আসছে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে বিশ্বব্যাংকের ঋণে নেওয়া ক্যাশ ট্রান্সফার আধুনিকায়ন প্রকল্পেও এএফডির দেওয়া ঋণ ব্যবহার করা হতে পারে। প্রকল্পটি নেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল, সামাজিক সুরক্ষার আওতায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ব্যাংকের মাধ্যমে না দিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেওয়া। সেটি এখন চলমান।