বাংলাদেশে দূতাবাস চালুর চিন্তাভাবনা আছে: আর্জেন্টিনার আন্ডার সেক্রেটারি

বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক বাড়াতে বাংলাদেশে দূতাবাস চালু করতে চায় দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনা। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের সঙ্গে এক বৈঠকে এমন তথ্য জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক নীতি বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি ক্লডিও রোজেনওয়েইগ।

ক্লডিও রোজেনওয়েইগ ঢাকা সফররত আর্জেন্টাইন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে বৈঠকে রোজেনওয়েইগ বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সব ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদার করার ব্যাপারে আর্জেন্টিনা আন্তরিক। এ জন্য ঢাকায় দূতাবাস খোলার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে তাঁর দেশ। এ সময় তিনি এফবিসিসিআইকে আর্জেন্টিনায় ব্যবসায়িক সফরের আমন্ত্রণ জানান।

বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার দূতাবাস নেই। এ জন্য নিকটতম দূতাবাস হিসেবে ভারতে অবস্থিত আর্জেন্টিনার দূতাবাসের মাধ্যমে কাজ করতে হয়। বাংলাদেশসহ নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের জন্য ভারতে অবস্থিত দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত করেছে আর্জেন্টিনা।

এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে বৈঠকে আর্জেন্টিনার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আর্জেন্টিনার ভারতীয় দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত হুগো গ্যাবি, দূতাবাসের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য বিভাগের প্রধান ফ্রাঙ্কো অগাস্টিন সেনিলিয়ানি মেলচিওর ও দূতাবাসের অ্যাগ্রিকালচার অ্যাটাশে মারিয়ানো বেহেরান।

বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) সাব্বির আহমাদ চৌধুরী, মহাপরিচালক (আমেরিকাস) নায়েম উদ্দিন আহমেদ, সহকারী সচিব (আমেরিকাস) তারিক মাহমুদ পাশা, এফবিসিসিআই সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, পরিচালক আবুল কাশেম খান ও আমজাদ হোসাইন, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।

বৈঠকে বাণিজ্য পরিস্থিতির উন্নয়নে দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারের সুপারিশ করেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। এ জন্য এফবিসিসিআই ও আর্জেন্টিনার শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রস্তাব দেন তিনি। একই সঙ্গে দক্ষিণ আমেরিকার বাণিজ্য জোট মারকোসারের সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্তবাণিজ্য চুক্তি সইয়ের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে আর্জেন্টিনার সহায়তা চান তিনি।

মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে, উরুগুয়েসহ মারকোসারভুক্ত দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ওষুধ, প্লাস্টিক পণ্য, সিরামিক ও তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারে। পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে আর্জেন্টিনার উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করতে পারেন।

তবে মুক্তবাণিজ্য চুক্তির আগে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি করার প্রস্তাব দেন আর্জেন্টিনার ভারতীয় দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত হুগো গ্যাবি। তিনি বলেন, মুক্তবাণিজ্য চুক্তিতে অনেক সময় লাগে। তাই মারকোসারের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি করা যেতে পারে।

বৈঠকে আর্জেন্টিনার ভারতীয় দূতাবাসের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য বিভাগের প্রধান ফ্রাঙ্কো অগাস্টিন সেনিলিয়ানি মেলচিওর বলেন, এশিয়া থেকে অনেক পরিমাণে টেক্সটাইল পণ্য আমদানি করে আর্জেন্টিনা। এ জন্য বাংলাদেশও বস্ত্র ও প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানির জন্য আর্জেন্টিনাকে সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে বিবেচনা করতে পারে।

দূতাবাসের কৃষিবিষয়ক অ্যাটাশে মারিয়ানো বেহেরান বলেন, আর্জেন্টিনা থেকে তুলা, গুঁড়া দুধ, রসুন আমদানি করতে পারে বাংলাদেশ। পাশাপাশি বাংলাদেশের কৃষি খাতের সক্ষমতা বাড়াতে কৃষিপ্রযুক্তি সরবরাহ করতে পারে আর্জেন্টিনা।