বিজিএমইএর সভাপতি হচ্ছেন ফারুক হাসান

বিজয়ী হওয়ার পর বক্তব্য দিচ্ছেন সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা ফারুক হাসান।
ছবি: সংগৃহীত

তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরবর্তী সভাপতি হচ্ছেন জায়ান্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক হাসান। তাঁর নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত পরিষদ ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৩৫ পরিচালক পদের মধ্যে ২৪টিতে বিজয়ী হয়েছে। অন্যদিকে এ বি এম সামছুদ্দিনের নেতৃত্বাধীন ফোরাম ১১ পরিচালক পদে বিজয়ী হয়েছে।

বিজিএমইএর ২০২১-২৩ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন গতকাল রোববার শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হয়। দশ ঘণ্টার ভোটে সংগঠনটির ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৮৬ শতাংশ ভোটার বা ১ হাজার ৯৯৬ জন নিজেদের রায় দিয়েছেন। সন্ধ্যা সাতটায় ভোট গ্রহণ শেষে গণনা শুরু হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে অনানুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ীদের তালিকা প্রকাশ করে সৈয়দ ফরহাত আনোয়ারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন বোর্ড।

নির্বাচনে সর্বাধিক ১ হাজার ২০৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন ফারুক হাসান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ফোরামের প্রার্থী বিজিএমইএর বর্তমান সভাপতি রুবানা হক। তাঁর ছেলে নাভিদুল হক বিজয়ী হয়েছেন। তবে ফোরামের দলনেতা এ বি এম সামছুদ্দিন ৯০৪ ভোট পেয়ে হেরেছেন।

ঢাকায় সম্মিলিত পরিষদের বিজয়ীরা হলেন, ফারুক হাসান, এস এম মান্নান, আরশাদ জামাল, শহীদউল্লাহ আজিম, শেহরীন সালাম, আসিফ আশরাফ, মহীউদ্দিন রুবেল, তানভীর আহমেদ, খসরু চৌধুরী, আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, হারুন অর রশীদ, রাজীভ চৌধুরী, মিরান আলী, খন্দকার রফিকুল ইসলাম, ইমরানুর রহমান, নাছির উদ্দিন ও সাজ্জাদুর রহমান মৃধা। এখানে ফোরামের বিজয়ীরা হলেন-রুবানা হক, এম এ রহিম, মাহমুদ হাসান খান, আসিফ ইব্রাহিম, ফয়সাল সামাদ, নাভিদুল হক, ভিদিয়া অমৃত খান, ইনামুল হক খান, মিজানুর রহমান।

অন্যদিকে চট্টগ্রামে সম্মিলিত পরিষদের বিজয়ীরা হলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তানভীর হাবিব, এ এম শফিউল করিম, মো. হাসান, এম আহসানুল হক, রকিবুল আলম চৌধুরী, মোহাম্মদ মেরাজ-ই-মোস্তফা। আর ফোরামের বিজয়ীরা হলেন মো. এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও মোহাম্মদ আবদুস সালাম।

বিজয়ী পরিচালকেরা আগামী ১৬ এপ্রিল সভাপতি ও সাতজন সহসভাপতি নির্বাচিত করবেন। তারপর সবকিছু ঠিক থাকলে ২০ এপ্রিল আগামী দুই বছরের নতুন কমিটি বিজিএমইএর দায়িত্ব নেবে।

দীর্ঘ আট বছর পর বিজিএমইএর নেতৃত্ব নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোট হয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে সংগঠনের ৩৫ পরিচালক পদের জন্য লড়েছেন নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরামের ৭০ জন প্রার্থী। স্বাধীনতা পরিষদ নামের আরেকটি জোট সম্মিলিত পরিষদ সঙ্গে যৌথভাবে নির্বাচন করেছে।

মহামারি করোনার উচ্চ সংক্রমণের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব মেনে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন বোর্ড ভোটের সময় আট ঘণ্টার পরিবর্তে দশ ঘণ্টা করা হয়।

তবে ঢাকার র‌্যাডিসন হোটেলের ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি কিছুটা মানা হলেও বাইরে সম্ভব হয়নি। কারণ সম্মিলিত পরিষদের বিপুলসংখ্যক সমর্থক সকাল থেকেই ভোটকেন্দ্রের বাইরে গলায় কার্ড পরে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণে নেমে পড়েন। ফোরামের সমর্থক থাকলেও তা ছিল হাতেগোনা। বিষয়টি নিয়ে ফোরামের নেতারা একাধিকবার ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সর্বশেষ ২০১৩ সালে সাধারণ সদস্যদের ভোটে বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচিত হয়েছিল। তারপর নেতৃত্ব নির্বাচনে সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম দুই মেয়াদের জন্য সমঝোতা করে। সেই সমঝোতার প্রথম দফায় অর্থাৎ ২০১৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বরে সম্মিলিত পরিষদের সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে কমিটি হয়। সেই কমিটি নানা অজুহাত দেখিয়ে ৪৩ মাস দায়িত্ব পালন করে। পরের মেয়াদে সমঝোতার কমিটি করার উদ্যোগ নেয় দুই জোট। তবে বাগড়া দেয় স্বাধীনতা পরিষদ। নির্বাচনে তাদের নিবৃত্ত করতে নানামুখী চেষ্টাও হয়। তবে শেষপর্যন্ত স্বাধীনতা পরিষদ খণ্ডিত প্যানেলে প্রার্থী দেয়। সে কারণে ঢাকায় নিয়ম রক্ষার ভোট হয়।