বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে রিট তুলে নেবে গ্রামীণফোন

দেশে গ্রাহকসংখ্যায় শীর্ষ মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের ওপর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) জারি করা দুই বিধিনিষেধ কাল বুধবার থেকে কার্যকর হচ্ছে।

তার আগের দিন আজ মঙ্গলবার রাতে গ্রামীণফোন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা দুটি বিধিনিষেধ কার্যকর করবে। পাশাপাশি বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হাইকোর্টে করা রিট আবেদন তুলে নেবে, যা গত সোমবার করা হয়েছিল। 

বিটিআরসি গত ২১ জুন গ্রামীণফোনের দুটি বিধিনিষেধ জারি করে। যা হলো, গ্রামীণফোন আগাম অনুমোদন ছাড়া কোনো ধরনের নতুন সেবা, অফার বা প্যাকেজ দিতে পারবে না। এখনকার অফার অথবা প্যাকেজও আবার অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে।
এ ছাড়া নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলে গ্রামীণফোনের ক্ষেত্রে 'লকিং পিরিয়ড' হবে ৬০ দিন। অন্যদের ক্ষেত্রে যা ৯০ দিন। এর মানে হলো, গ্রামীণফোন সহজে ছাড়া যাবে।
এদিকে গত রোববার আরেকটি বিধিনিষেধ জারি করা হয়। সেটি হলো, কল আদান-প্রদানের আয়ে গ্রামীণফোনের ভাগ কমিয়ে দেওয়া। গ্রামীণফোন আগামী ১৬ জুলাই থেকে কল আদান-প্রদান বা টার্মিনেশন থেকে ক্ষেত্রে 'অরিজিনেটিং' অপারেটর হতে প্রতি মিনিটে ১০ পয়সার বদলে ৭ পয়সা করে পাবে। অন্যরা আগের মতো ১০ পয়সাই পাবে। এটি গ্রামীণফোনের আয়ের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
সূত্র জানায়, বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের বিষয়ে বিটিআরসির সঙ্গে গ্রামীণফোন কর্মকর্তাদের কথা হয়েছে। এ অংশ হিসেবেই রিট আবেদন তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি দিয়ে জানাল গ্রামীণফোন।
বিবৃতিতে গ্রামীণফোন বলেছে, তারা আরোপ করা বিধিনিষেধ নিয়ে একমত নয়। তারপরও বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন করছে। তবে কোম্পানি আশা করে, নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে তাদের বোঝাপড়ায় যে ঘাটতি রয়েছে, তা গঠনমূলক ও অর্থবহ সংলাপের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা সম্ভব। এর অংশ হিসেবেই গ্রামীণফোন রিট তুলে নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করছে।
বিটিআরসি তাৎপর্যপূর্ণ বাজার ক্ষমতা প্রবিধানমালার (২০১৮) অধীনে গত বছর ১০ ফেব্রুয়ারি গ্রামীণফোনকে তাৎপর্যপূর্ণ বাজার ক্ষমতাধারী (এসএমপি) অপারেটর হিসেবে ঘোষণা করে। কোনো মোবাইল অপারেটর গ্রাহকসংখ্যা, রাজস্ব অথবা তরঙ্গ—এ তিন ক্ষেত্রের একটিতে ৪০ শতাংশের বেশি বাজার হিস্যাধারী হলে এসএমপি অপারেটর হিসেবে ঘোষণা করা যায়।
অবশ্য গ্রামীণফোন সব সময় বলে আসছে, তারা বাজারে প্রতিযোগিতাবিরোধী কোনো আচরণ করছে না।
আজ গ্রামীণফোনের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাত প্রতিযোগিতাপূর্ণ। গ্রামীণফোন আজকের অবস্থানে পৌঁছেছে নিয়মিত বিনিয়োগ, উদ্ভাবন ও পরিচালন দক্ষতার মাধ্যমে। এসএমপির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক রীতি হলো, যথাযত পর্যালোচনার পরে বাজারের দুর্বলতা খুঁজে করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া। পদক্ষেপগুলো সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্র অনুযায়ী সীমিত রাখা।

এ বিষয়ে কমিশনের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য জানতে চাইলে সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) মো. জাকির হোসেন খান বলেন, গ্রামীণফোনকে কমিশন যে চিঠি দিয়েছিল, তাতে দুটি নির্দেশ বুধবার থেকে থেকে কার্যকর হওয়ার কথা বলা হয়েছিল। আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কমিশনের দায়িত্ব অপারেটরদের ভালো-মন্দ বিষয়গুলো দেখা। সে জন্য আলোচনার দরজা খোলা থাকে।