বেড়েছে মাছ ও ডিমের দাম

মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদা একটু বেড়েছে। সে তুলনায় সরবরাহ কম। দামও তাই বাড়তি। বাজারে ডিমের সরবরাহও পর্যাপ্ত নয়

রাজধানীর বাজারে মাছের দাম বেড়েছে। সব ধরনের মাছ কেজিতে ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। ঈদে বেড়ে যাওয়া গরুর মাংসের দামে কোনো পরিবর্তন নেই। মুরগির দাম ঈদের পরে এক দফায় কমেছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে আবার বেড়ে যায়। আপাতত ওই দামই বহাল রয়েছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে ডিমের দামও।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল, মহাখালী ও কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, এক কেজির কিছুটা বড় আকারের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকায়। ৮০০ গ্রাম বা এর চেয়ে কম ওজনের ইলিশের কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। আকারভেদে শিং মাছ প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, রুই ১৮০ থেকে ২৮০ টাকা, মৃগেল ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, পাঙাশ ১৩০ থেকে ১৭০ টাকা, কাতল ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, সিলভার কার্প ১২০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি করা হয়।

এ ছাড়া কাঁচকি ও মলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, দেশি ট্যাংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, দেশি চিংড়ি (ছোট) ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, আইড় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, চিতল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, বাইম ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়।

মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাছের চাহিদা একটু বেড়েছে। সে তুলনায় বাজারে মাছের সরবরাহ কম। দামও তাই বাড়তি। কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী তাইজুল ইসলাম বলেন, প্রতি কেজি পাঙাশের দাম ছিল ১১০ থেকে ১২০ টাকা। এখন পাঙাশের সর্বনিম্ন দাম ১৩০ টাকা। প্রতি কেজি ২০ টাকা বেড়ে তেলাপিয়ার দাম হয়েছে ১২০ টাকা।

মাছের পাশাপাশি হাঁস ও মুরগির ডিমের দাম হালিতে দুই টাকা বেড়েছে। মুরগির ডিম হালিপ্রতি ৩২ টাকা এবং হাঁসের ডিম হালিপ্রতি ৪০ টাকায় বিক্রি করা হয়। ক্রেতা একসঙ্গে এক ডজন বা এর অধিক ডিম কিনলেও আগের মতো আর ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। গতকাল এক ডজন মুরগির ডিম ৯৬ টাকা এবং হাঁসের এক ডজন ডিম ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হয়।

ডিম ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে মাছ-মাংসের দাম কিছুটা বাড়তি। এতে ডিমের চাহিদা স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছে। তবে চাহিদা অনুযায়ী বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডিম আসছে না।

কারওয়ান বাজারের ডিম ব্যবসায়ী ভাই ভাই এগ হাউসের মালিক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, কয়েক দিন আগেও সারা দিনে তিনি আড়াই থেকে তিন হাজার ডিম বিক্রি করতেন। এখন এক দিনেই প্রায় পাঁচ হাজার ডিম বিক্রি করছেন।

রোজার ঈদের আগেও রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে গরু মাংস প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকা দরে বিক্রি করা হতো। ঈদের কয়েক দিন আগে থেকে তা ৬০০ টাকা হয়ে যায়। ঈদের তিন সপ্তাহ পরেও বাজারে এখনো বাড়তি দরেই গরুর মাংস বিক্রি করা হচ্ছে।

গতকাল মোহাম্মদপুরের টাউন হল ও কারওয়ান বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হয়। ঈদের পর ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায় নেমেছিল।

চলতি অর্থবছরের বাজেটে মাছ ও মুরগির খাবারের উপকরণ আমদানিতে রেয়াতি সুবিধার প্রস্তাব থাকায় মুরগি ও মাছের খাবারের দাম কমার সম্ভাবনা আছে। জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা বলেন, খাবারের দাম কমলেও বাজারে এর প্রভাব পড়তে এক থেকে দেড় মাস সময় লাগবে।

চালের দাম স্থিতিশীল আছে। গতকাল মহাখালী ও কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি বিআর-২৮ চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়। এ ছাড়া মোটা চাল প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা, মিনিকেট ৫৮-৬০ টাকা এবং নাজিরশাইল ৬৫-৬৮ টাকায় বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা।

মহাখালী কাঁচাবাজারের জাকির ট্রেডার্সের বিক্রেতা জাকির হোসেন বলেন, ধানের দাম বেশি। তাই চালের বর্তমান যে দাম তা থেকে আপাতত কমার সম্ভাবনা নেই।

বাজারে সবজির দামে খুব বেশি পরিবর্তন নেই। পটোল, কাঁকরোল, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, পেঁপে, বরবটি, ঢ্যাঁড়স, করলা প্রভৃতি সবজিগুলো ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। তবে পেঁয়াজের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা কমেছে। গতকাল খুচরায় দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৫৫ টাকায় বিক্রি করা হয়।