ব্যাংকে চাঁদা চেয়ে ফোন আসছে, সতর্ক থাকার পরামর্শ

ব্যাংকে চাঁদা চেয়ে ফোন

  • শীর্ষ সন্ত্রাসী পরিচয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে।

  • সরকারি সংস্থার কর্মকর্তা পরিচয়ে আমানত রাখার আশ্বাস দিয়েও টাকা চাওয়া হচ্ছে।

  • কর্মকর্তাদের সতর্কতা অবলম্বন ও ভীত না হওয়ার পরামর্শ

শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদাত ও আরমান পরিচয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। আবার সরকারি সংস্থার কর্মকর্তা পরিচয়ে আমানত রাখার আশ্বাস দিয়েও টাকা চাওয়া হচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও শাখা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে এমন ফোন আসছে।

এ জন্য কর্মকর্তাদের সতর্কতা অবলম্বন ও ভীত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে চিঠি দিয়েছে রূপালী ব্যাংক। চিঠিতে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির মধ্যে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত হওয়ায় প্রতারণার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে।

শাখা পর্যায় ও বিভিন্ন বিভাগে পাঠানো রূপালী ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির কারণে বেসরকারি খাতের ছোট, মাঝারি ও বড় বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপুলসংখ্যক মানুষ কাজ হারিয়েছেন। কাজ হারানো এসব মানুষ সংসার চালানোর জন্য প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছেন বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে। প্রতারণার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন

চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রতারকেরা ব্যাংকের কোনো একটি শাখা থেকে নির্দিষ্ট জোন কিংবা বিভাগের সব শাখা ব্যবস্থাপকদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করেছে। এসব নম্বরে বিভিন্ন পরিচয়ে ফোন করে প্রতারণার চেষ্টা করছে। বিভিন্ন শাখায় টেলিফোন করে নিজেকে সরকারি সংস্থার কর্মকর্তা পরিচয়ে বড় অঙ্কের আমানত রাখার লোভ দেখানো হচ্ছে। এর বিনিময়ে অগ্রিম টাকা দাবি করার ঘটনাও ঘটেছে। চিঠিতে এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কোনো অপরিচিত ব্যক্তিকে শাখার ফোন নম্বর প্রদানে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

রূপালী ব্যাংকের চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রতারকেরা বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকের শাখায় টেলিফোন করে ভরাট কণ্ঠে নিজেদের শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদাত, আরমান নামে পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবি করা করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিশ্চিত করেছে, এসব ফোন প্রতারকদের। এ বিষয়ে ভীত না হয়ে এবং টাকা না দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া এমন কোনো ঘটনার মুখোমুখি হলে দ্রুত ভিত্তিতে আঞ্চলিক ব্যবস্থাপককে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

করোনাভাইরাসের মধ্যে আমাদের কর্মকর্তাদের কাছেও আমানত দেওয়ার প্রলোভন এসেছিল। এর বিপরীতে টাকা চেয়েছিল।
সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এমটিবি

জানতে চাইলে রূপালী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি শাখা এ নিয়ে সাধারণ ডায়েরি করেছে। এ জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
শুধু রূপালী ব্যাংক এমন পরিস্থিতিতে পড়ছে না, এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে দেশের প্রায় সব ব্যাংক।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের মধ্যে আমাদের কর্মকর্তাদের কাছেও আমানত দেওয়ার প্রলোভন এসেছিল। এর বিপরীতে টাকা চেয়েছিল। আমরা এসব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি। এরপর আর কেউ আসেনি।’