মসুর ডাল ও খোলা তেলের দাম বেড়েছে

ভোজ্য তেল
ফাইল ছবি

মসুর ডালের দাম কেজিতে আরও পাঁচ টাকা বেড়েছে। এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে খোলা সয়াবিন ও পাম সুপার তেল। লিটারপ্রতি বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা। লেয়ার মুরগির ডিম, ব্রয়লার মুরগি ও কাঁচা মরিচের দামও বেড়ে গেছে।

আজ শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর ৬ নম্বর সেকশন, উত্তরা ৬ নম্বর সেকশন কাঁচাবাজার ও কারওয়ান বাজারে বিভিন্ন নিত্যপণ্য ও সবজির দামের এ চিত্র দেখা গেছে।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা যায়, দেশি মসুর ডাল ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ছিল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা। মাঝারি দানার মসুর ডালের কেজি ১০৫ থেকে ১১০ টাকা এবং মোটা দানার মসুর ডাল ১০০ থেকে ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, গত বছরের এ সময়ে মোটা দানার মসুর ডালের কেজি ছিল ৭০ টাকা। এক বছরে তা প্রায় ৫২ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া মাঝারি দানার মসুর ডালের দাম সাড়ে ২৬ শতাংশ ও সরু দানার মসুর ডালের দাম সাড়ে ৯ শতাংশ বেড়েছে।

কারওয়ান বাজারের মুদিপণ্যের পাইকারি বিক্রেতা আবু বক্কর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, আগে এক বস্তা মোটা দানার মসুর ডালের দাম ছিল ২ হাজার ২৪০ টাকা। এখন তা ২ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

উত্তরা ৬ নম্বর সেকশন কাঁচাবাজারে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী মাহমুদ আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাজারে এলেই শুনি প্রতি সপ্তাহে নতুন নতুন পণ্যের দাম বাড়ছে। কিন্তু আয় তো আর প্রতি সপ্তাহে বাড়ছে না।’

বাজারে খোলা সয়াবিন ও পাম সুপার তেলের দাম লিটারে ৩ থেকে ৫ টাকা বেড়ে গেছে। আজ মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের বাজারে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৫২ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি করা হয়। আর প্রতি লিটার পাম সুপার তেল বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩২ টাকায়।

বিক্রেতারা বলছেন, এক ড্রাম (২০৪ লিটার) তেলের দাম ছিল ৩০ হাজার ১০০ টাকা। এখন তা ৩০ হাজার ৬০০ টাকা হয়েছে। টিসিবির হিসাবে, এক বছরের খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ২৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ ও পাম সুপার বেড়েছে ৩২ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

বাজারে লেয়ার মুরগির ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েছে। আজ রাজধানীর বাজারগুলোতে লেয়ার মুরগির ডিম প্রতি হালি ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে পরিমাণে বেশি, অর্থাৎ একসঙ্গে এক ডজন কিনলে দাম রাখা হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৮৫-১৯০ টাকায় বিক্রি হয়, যা আগের সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ৫ টাকা বেশি। সাধারণত প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১৩০ থেকে ১৪০ টাকার মধ্যে থাকে। তবে সোনালিকা (কক) মুরগির দামে কোনো পরিবর্তন নেই।

ধরনভেদে বাজারে কাঁচা মরিচের দামও কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে গেছে। ভারতীয় এলসি জাতের মরিচ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। এ জাতের কাঁচা মরিচ এক সপ্তাহ আগেও ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছিল। তবে ঝাল কিছুটা কম, এমন অন্য জাতের কাঁচা মরিচ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ওই সব কাঁচা মরিচ ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

দীর্ঘদিন ধরেই বাজারে চালের দাম বেশ চড়া। এক সপ্তাহ আগে মোটা, মাঝারি ও সরু চালের কেজিপ্রতি দাম এক থেকে তিন টাকা বেড়েছিল। আজ খুচরা দোকানে মোটা চাল (গুটি-স্বর্ণা) মানভেদে প্রতি কেজি ৪৬ থেকে ৫০ টাকা, মাঝারি বিআর-২৮ চাল ৫৩ থেকে ৫৫ টাকা, সরু মিনিকেট চাল ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা এবং নাজিরশাইল ৭২ থেকে ৭৫ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বাজারের শীতের সবজির দামও খুব বেশি কমেনি। প্রায় দেড় শ গ্রাম ওজনের এক আঁটি ধনেপাতা বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়। শিম, টমেটো, মুলা, গাজর ও শসার কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। মাঝারি আকারের প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপির দামও ৩০-৪০ টাকা। প্রতিটি লাউ, মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। বরবটি ও করলার প্রতি কেজির ৫০-৬০ টাকা।

মিরপুর ৬ নম্বর সেকশন কাঁচাবাজারের মুদিদোকানি সালেহ আহমেদ বলেন, নিয়মিত ক্রেতারা পণ্য কেনার পরিমাণ ৩০ থেকে ৪০ ভাগ কমিয়ে দিয়েছেন। যেসব ক্রেতা আগে মাসে ১৫ হাজার টাকার বাজার করতেন, এখন ওই ক্রেতারাই ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার পণ্য কেনেন।