যুক্তরাজ্যের ৫০ বিলিয়ন পাউন্ড হাওয়া

যুক্তরাজ্যসহ সারা পৃথিবীতেই নগদ টাকার ব্যবহার কমছে, এটা যেমন সত্য, তেমনি সত্য হলো, একই সঙ্গে আবার ব্যাংক নোটের চাহিদা আকাশ ছুঁয়েছে। কেউ জানে না, এই টাকা কোথায় যাচ্ছে।

ব্রিটেনের সাংসদেরা সম্প্রতি অভিযোগ করেছেন, এই প্রক্রিয়ায় ৫০ বিলিয়ন পাউন্ড লাপাত্তা হয়ে গেছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংক অব ইংল্যান্ডকে তাঁরা বিষয়টি তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এই টাকা অন্য কোথাও রাখা হয়েছে, কিন্তু কে এই টাকা কোথায় গচ্ছিত রেখেছে, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড তা জানে না। এমনকি এই টাকার ব্যাপারে তারা বিশেষ আগ্রহীও নয়, হাউস অব কমন্সের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান মেগ হিলিয়ার সিএনএনকে এ কথা বলেছেন।

এই টাকা অন্য কোথাও রাখা হয়েছে, কিন্তু কে এই টাকা কোথায় গচ্ছিত রেখেছে, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড তা জানে না। এমনকি এই টাকার ব্যাপারে তারা বিশেষ আগ্রহীও নয়, হাউস অব কমন্সের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান মেগ হিলিয়ার সিএনএনকে এ কথা বলেছেন।

বিবিসি জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এই বিপুল অর্থ হারানোর বিষয়টি গত সেপ্টেম্বরে প্রথম নজরে আনে দেশটির ন্যাশনাল অডিট অফিস। হিসাব থেকে হারিয়ে যাওয়া এই ৫০ বিলিয়ন পাউন্ড দেশটির মোট ব্যাংক নোটের তিন ভাগের এক ভাগ। ধারণা করা হচ্ছে, নোটগুলো পাচার হয়ে গেছে। বিপুল এই অর্থ এখন আর অর্থনীতির স্বাভাবিক প্রবাহে নেই।

ব্রিটেনের সাংসদেরা বলছেন, এই অর্থের খোঁজে ব্যাংকটিকে অবশ্যই আরও তৎপর হতে হবে। কারণ, বিপুল অঙ্কের এই অর্থ অবৈধ উদ্দেশ্যেও ব্যবহার হতে পারে, যার দায় সরকারের নীতি ও সরকারের কোষাগার এড়াতে পারবে নাG

২০১৮ সালে প্রকাশিত ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল সেটেলমেন্টসের একটি প্রতিবেদন জানা যায়, ডিজিটাল পেমেন্টের ব্যবহার দিন দিন বাড়লেও সিংহভাগ উন্নত অর্থনীতির দেশে নগদ অর্থের চাহিদা বাড়ছে। অক্টোবরে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের চিফ ক্যাশিয়ার সারাহ জন পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিকে বলেন, ‘আমরা লেনদেনের জন্য নগদের ব্যবহার বাড়তে দেখছি। ২০০৮ সালে আর্থিক সংকটের পর থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা নিয়ে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এ কারণেও এটি হতে পারে।’

উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো, মহামারির চূড়ান্ত সময়ে নগদ অর্থের ব্যবহার কমলেও পরববর্তীকালে আবারও বাড়তে শুরু করে। ঘরে বিপুল পরিমাণে নগদ সঞ্চিত রাখতে শুরু করে মানুষ।

দেশটির ন্যাশনাল অডিট অফিসের তথ্যানুসারে, জুলাই মাসে ব্রিটেনের বাজারে ৪৪০ কোটি ব্যাংক নোট ছিল, অর্থের হিসাবে যা ৭ হাজার ৬৫০ কোটি পাউন্ড। অথচ ২০০০ সালে বাজারে ছিল মাত্র ২ হাজার ৪০০ কোটি পাউন্ড সমমূল্যের ১৫০ কোটি নোট।
চূড়ান্ত অবস্থা পেরিয়ে আসার পর নগদ লেনদেনের ব্যবহার বাড়লেও এত পরিমাণ নগদের চাহিদা বাজারে নেই। ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের হিসাব হচ্ছে, বাজারে যত নোট আছে, তার ২০ থেকে ২৪ শতাংশ নগদ লেনদেনে ব্যবহৃত হয়, ৫ শতাংশ মানুষ বাসায় গচ্ছিত রাখে।

ন্যাশনাল অডিট অফিস বলেছে, ‘বাকি নোট সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায় না, যার পরিমাণ প্রায় ৫০ বিলিয়ন পাউন্ড। হতে পারে এই টাকার বড় অংশ বিদেশে পরিশোধের জন্য রাখা হয়েছে অথবা ছায়া অর্থনীতিতে সঞ্চালিত হচ্ছে, আবার পারিবারিক সঞ্চয় হিসাবেও থাকতে পারে, যে তথ্য আমাদের হাতে নেই।’