যুক্তরাষ্ট্র নয় চীনের পক্ষে রায় দিল ডব্লিউটিও

ছবি: রয়টার্স

২০১৮ সালে চীন থেকে পণ্য আমদানিতে যে শুল্ক চাপানো হয়েছিল, যার কারণে বাণিজ্যযুদ্ধের সূচনা তা আন্তর্জাতিক বিধির সঙ্গেই অসামঞ্জস্য ছিল। গতকাল মঙ্গলবার এমন রায়ই দিয়েছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিশেষ প্যানেল। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ডব্লিউটিও বলছে, চীনের অযাচিত প্রযুক্তি চুরির যে অভিযোগ এনে শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল তার ন্যায়সংগত কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। চীনা কর্মকর্তারা এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে তারা দেখিয়েছে যে ডব্লিউটিও চীনকে মোকাবিলা করার জন্য একেবারেই প্রস্তুত না।

মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লেইটজার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই অন্যায্য বাণিজ্য পদ্ধতির বিরুদ্ধে নিজেকে রক্ষা করার অনুমতি দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ডব্লিউটিওর এই প্যানেল প্রতিবেদন নিশ্চিত করেছে যে চার বছর ধরে ট্রাম্প প্রশাসন যে বলে আসছে চীনের ক্ষতিকারক প্রযুক্তির অনুশীলন বন্ধ করতে ডব্লিউটিও পুরোপুরি অপ্রতুল তা সঠিক। এই বিশেষ প্যানেল চীন মেধাস্বত্ব চুরির বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে বিস্তৃত প্রমাণ জমা দিয়েছে তা নিয়ে বিতর্কে যায়নি। এই সিদ্ধান্ত থেকে বোঝা যায় যে ডব্লিউটিও এই ধরনের অপরাধের কোনো প্রতিকার দেয় না।

২০১৮ সালে ডব্লিউটিও-র কাছে এই মামলা নিয়ে এসেছিল চীন। ওই সময় ট্রাম্প প্রশাসন প্রথম ধাপে শুল্ক আরোপ করে। পরে যা ৩০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য পর্যন্ত চলে যায়। ওই অভিযোগে ২০১৮ সালের জুন এবং সেপ্টেম্বরে প্রণীত ২০০ বিলিয়ন ডলার পণ্যে যে শুল্ক আরোপ করা হয় তার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়।
চীনের রাষ্ট্রীয় অনুমোদিত প্রযুক্তি চুরি, ভর্তুকি এবং অন্য ‘অন্যায্য অনুশীলনের’ প্রতিক্রিয়ায় ওই শুল্ক আরোপ ঠিক ছিল।

১৯৭০ সালের বাণিজ্য বিধি অনুসারে তা অনুমোদিত। তবে চীন জানায় যে এই শুল্কারোপ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতির চেয়ে বেশি ছিল। কেবলমাত্র একটি দেশকে লক্ষ্যবস্তু করায় যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য বিধি লঙ্ঘন করেছে। ডব্লিউটিও বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল এই দাবির সঙ্গে একমত হয়েছেন। তারা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র প্রমাণ দেয়নি যে কোন ভিত্তিতে শুল্ক গুলো ন্যায়সংগত ছিল। কারণ তারা বলেনি যে পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল তা কীভাবে চীনের অন্যায্য আচরণ থেকে উপকৃত হয়েছিল। প্যানেলের বক্তব্য, যুক্তরাষ্ট্র প্রমাণ করতে পারেনি যে ওই শুল্কারোপ কার্যকরভাবে ন্যায়সংগত ছিল।

প্যানেল আরও জানিয়েছে যে তারা কেবল মার্কিন ব্যবস্থাগুলো খতিয়ে দেখেছে। চিনের পাল্টা শুল্কারোপ নয়, কারণ ওয়াশিংটন ডব্লিউটিওর কাছে এ বিষয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ দেয়নি।