রিটার্ন জমার সময় বাড়াতে পারবেন

ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা দেওয়ার সময় শেষ হয়ে গেছে। গতকাল রোববার ছিল আনুষ্ঠানিকভাবে রিটার্ন জমার শেষ দিন। তাই কর অঞ্চলগুলোতে দিনভর কর্মতৎপরতা বেশি ছিল। বিশেষ করে কর আইনজীবীদের মাধ্যমে রিটার্ন বেশি জমা পড়েছে।

গত ৩০ নভেম্বর ছিল রিটার্ন দেওয়ার শেষ সময়। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনা করে আরও এক মাস সময় বাড়ানো হয়। কিন্তু ৩১ ডিসেম্বর সাপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় গতকাল রোববার পর্যন্ত রিটার্ন জমার সুযোগ বাড়ে। তবে এ পর্যন্ত কতজন করদাতা রিটার্ন জমা দিয়েছেন, সেই হিসাব চূড়ান্ত করেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর বিভাগ। গত নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১৮ লাখ করদাতা রিটার্ন দিয়েছিলেন।
আচ্ছা, আপনি কি রিটার্ন জমা দিয়েছেন? যদি আজও রিটার্ন দিতে না পারেন, তবে কী করবেন, সেটি ভাবছেন? দুশ্চিন্তার কারণ নেই। আসুন, উপায়টা জেনে নিন। নির্ধারিত সময়ে রিটার্ন দিতে না পারলে আপনি যৌক্তিক কোনো কারণ দেখিয়ে সময় নিতে পারবেন। অবশ্য এ জন্য আপনাকে অবশ্য করের ওপর সুদ ও জরিমানা গুনতে হবে।

আয়কর অধ্যাদেশের ৭৫ ধারায় সময় বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়েছে। সে অনুযায়ী কোনো করদাতা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন দিতে না পারলে সংশ্লিষ্ট কর কার্যালয়ে যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে সময় বৃদ্ধির আবেদন করতে পারবেন। তখন তাঁকে উপকর কমিশনার নিজ ক্ষমতাবলে সর্বোচ্চ দুই মাস পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে দিতে পারবেন।
আপনি যদি ওই দুই মাসের মধ্যে রিটার্ন জমা দিতে না পারেন, তবে আবারও সময় বাড়ানোর আবেদন করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদন নিয়ে আরও দুই মাস সময় বাড়াতে পারবেন। সব মিলিয়ে একজন করদাতা নির্ধারিত সময়ে রিটার্ন জমা দিতে না পারলে সর্বোচ্চ চার মাস পর্যন্ত অতিরিক্ত সময় পাবেন।

মনে রাখবেন, বাড়তি সময় নিলে কিন্তু আপনাকে করের টাকার ওপর সুদ দিতে হবে। কারণ, আয়কর অধ্যাদেশের ৭৩ (এ) ধারায় করের টাকার ওপর সুদ আরোপের বিধান রাখা হয়েছে। এ ধারা অনুযায়ী, করদাতার ওপর যে কর নির্ধারিত হবে, সেই করের ওপরে প্রতি মাসে ২ শতাংশ সরল সুদ বসবে। অর্থাৎ কোনো করদাতার ওপর যদি এক লাখ টাকা কর আরোপ হয়, তবে তাঁর সুদের পরিমাণ হবে দুই হাজার টাকা। ওই করদাতা দুই মাস সময় নিলে চার হাজার টাকা সুদ দিতে হবে।