শহরের চেয়ে গ্রামের মানুষ বেশি ভুগছে

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উচ্চ দাম মানুষকে ভোগাচ্ছে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষ বেশি ভুগছে। চাল, ডাল, আটা থেকে শুরু করে প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি। পরিবহন, চিকিৎসা ও আসবাবের জন্য গ্রামের মানুষকে বেশি অর্থ খরচ করতে হয়।

সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হালনাগাদ প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য মিলেছে। গতকাল রোববার বিবিএসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত নভেম্বর মাসে গ্রামাঞ্চলে গড় মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৬ দশমিক ২০ শতাংশে উঠেছে। একই সময়ে শহরে গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ। অর্থাৎ গত মাসে গ্রামাঞ্চলের একজন মানুষ যেখানে একটি পণ্য কিনেছেন ১০৬ টাকা ২০ পয়সায়, সেখানে একই পণ্য শহরের একজন গ্রাহক কিনেছেন ১০৫ টাকা ৫৯ পয়সায়। আবার শহরাঞ্চলে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি যেখানে ৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ, সেখানে তা গ্রামে ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ। অবশ্য খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি গ্রামের তুলনায় শহরে বেশি। নভেম্বরে শহরাঞ্চলে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৯৯ শতাংশে উঠেছে, যা গ্রামে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বরে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশে উঠেছে, যা আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। এ ছাড়া খাদ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ, যা অক্টোবরে ছিল ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে বাজারে। নভেম্বরের শুরুতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটারে ১৫ টাকা বাড়ায় সরকার। ফলে সব পরিবহনের ভাড়া বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে সার্বিক মূল্যস্ফীতিতে।

জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজারে। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবহন খরচও বেড়েছে। ভাড়া যা বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি ভাড়া জোর করে নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বাজারে চাহিদা বাড়ছে। এসব কারণে দেশে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে।