সপ্তাহে এক দিন হলেও খোলা থাকবে অধিদপ্তর, সঞ্চয়পত্রের মুনাফা পাবেন গ্রাহকেরা

অবশেষে ঘুম ভেঙেছে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের। সংস্থাটির নিষ্ক্রিয়তার কারণে সঞ্চয়পত্রের অনেক গ্রাহক তাঁদের মুনাফা পাচ্ছিলেন না। বিশেষ করে যাঁরা অধিদপ্তরের মনোনীত ব্যাংক থেকে (লিঙ্কড ব্যাংক) সঞ্চয়পত্র কিনেছিলেন, তাঁদের ব্যাংক হিসাবে মুনাফা যাচ্ছিল না

অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে অধিদপ্তর এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সপ্তাহে এক দিন হলেও অফিস খোলা রাখা হবে। ছুটির দিন হলেও আজ সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) এবং অর্থ বিভাগের পরামর্শে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের কিছু কর্মচারী অফিস করেছেন। সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রতি সপ্তাহে এক দিন করে হলেও অধিদপ্তরের কয়েকজন অফিস করবেন।

জানতে চাইলে সঞ্চয় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সামছুন্নাহার বেগম মোবাইল ফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‌‘আমাদের নজরেও এসেছে যে অনেকে মুনাফা পাচ্ছেন না। একটা ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা সপ্তাহে এক বা দুই দিন করে অফিস খোলা রাখব। আজই একটা নোটিশ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আশা করছি এরপর গ্রাহকদের আর কোনো সমস্যা থাকবে না।’

করোনাভাইরাসের এই দুর্যোগের সময়ে ব্যাংক খোলা, অতি জরুরি অনেক দপ্তরও খোলা। কিন্তু সঞ্চয়পত্রের অনেক গ্রাহক ব্যাংকে গিয়ে গিয়ে ফিরে আসছেন বলে গ্রাহকেরা অভিযোগ করে যাচ্ছিলেন। কারণ, তাঁদের হিসাবে কোনো মুনাফা জমা হচ্ছিল না।

সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকেরা মুনাফা পেয়েছেন ১৮ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। অধিদপ্তর থেকে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের হিসাব পাওয়া যায়নি। তবে গত জানুয়ারিতে মুনাফার পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২৪০ কোটি টাকা। সাত মাসের গড় করলে দাঁড়ায় প্রতি মাসে ২ হাজার ৬১১ কোটি টাকা করে মুনাফা পেয়ে আসছেন গ্রাহকেরা।

মোটাদাগে চার ধরনের সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকই দেশে বেশি। এগুলো হচ্ছে পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পরিবার সঞ্চয়পত্র এবং পেনশনার সঞ্চয়পত্র। বাংলাদেশ ব্যাংকের সব শাখা, সঞ্চয় ব্যুরো, ডাকঘর এবং নির্ধারিত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকেরা সঞ্চয়পত্র কিনে থাকেন।

২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে প্রতি মাসের শুরুতেই ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে গ্রাহকদের ব্যাংক হিসাবে আগের মাসের মুনাফার টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে জমা হয়ে আসছে। এখন আর কাউকে নগদ টাকা দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু এ মাসে গ্রাহকদের ব্যাংক হিসাবে কোনো টাকা জমা হয়নি।

জানা গেছে, পুরো টাকাই যে আটকে রয়েছে, ব্যাপারটা এমন নয়। স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা চালু হওয়ার আগে বা পরে বাংলাদেশ ব্যাংক, সঞ্চয় ব্যুরো থেকে যাঁরা সঞ্চয়পত্র কিনেছেন, তাঁদের অনেকেই টাকা পেয়ে গেছেন। কেউ লিঙ্কড ব্যাংক থেকে কিনে থাকলে সঞ্চয় অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকের নামে টাকা জমা হয় না। কিন্তু ছুটির কারণে অধিদপ্তরের কর্মচারীরা অফিসে আসছিলেন না, কাজটিও হচ্ছিল না।