সম্পূরক শুল্ক কমানোয় ৭৭০ পণ্যের দাম কমতে পারে

আমদানি পর্যায়ে ৭৭০টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক কমানো হয়েছে। তাই এসব পণ্যের দাম ভোক্তা পর্যায়ে কমতে পারে।
সম্পূরক শুল্ক কমানোর ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) একটি পদ্ধতি অবলম্বন করেছে। সেটি হলো, যে পণ্যটি সম্পূরক শুল্কের যে স্তরে রয়েছে, সেই পণ্যটিকে বর্তমান স্তর থেকে নিকটতম নিম্নতম স্তরে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ১৫ ও ২০০ শতাংশের দুটি শুল্ক তৈরি করে, সেই স্তরেই কিছু পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, বিপুলসংখ্যক পণ্যে আমদানি পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক কমানোর ফলে আনুমানিক ৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হবে।
যেসব পণ্যের সম্পূরক শুল্ক কমানো হয়েছে তার মধ্যে ভোগ্যপণ্য, প্রসাধন সামগ্রী, আসবাব ও এর যন্ত্রাংশ, মোটর গাড়ি ও এর যন্ত্রাংশ, ইলেকট্রনিক পণ্য ও এর যন্ত্রাংশ বস্ত্র, গয়না, দুই ও চার স্ট্রোক অটোরিকশা, বাতি, কয়েন, ব্যাংক নোট, ব্যাংক কার্ড উল্লেখযোগ্য।
প্রস্তাব অনুযায়ী, ২০ থেকে ১০ শতাংশ ৫১টি, ১৫ শতাংশে ৪২১টি, ৩০ থেকে ২০ শতাংশে ৫২১টি, ৪৫ থেকে ৩০ শতাংশে ২১৫টি, ৬০ থেকে ৪৫ শতাংশে ৯১টি, ১০০ থেকে ৬০ শতাংশে ৯১টি, ১৫০ থেকে ১০০ শতাংশে ২৯টি, ২৫০ থেকে ২০০ শতাংশে ৭টি, ২০০ শতাংশে ৯টি, ৩৬০ থেকে ২৫০ শতাংশে ৩টি, ৫০০ থেকে ৩৫০ শতাংশে ২৪টি এবং ৫০০ শতাংশে সাতটি পণ্যের সম্পূরক নামানো হয়েছে।
সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয় পণ্যের আমদানি মূল্য ও আমদানি শুল্কের যোগফলের ওপর। উদাহরণ দিয়ে বলা যেতে পারে, কোনো পণ্যের আমদানি মূল্য ১০০ টাকা ও আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ। তাহলে নতুন প্রস্তাবে ওই পণ্যের ওপর সম্পূরক শুল্ক যদি ১০ শতাংশ হয়, তাহলে সম্পূরক শুল্ক দিতে হবে ১১ টাকা। আগে ওই পণ্যের বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক দিতে হতো ২২ টাকা। সম্পূরক শুল্ক কমানোর ফলে আমদানিকারককে ১১ টাকা কম দিতে হবে।
আবার আমদানি পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আরোপিত থাকলে সেখানেও আগের চেয়ে কম মূসক দিতে হবে। সম্পূরক শুল্ক কমানোর ফলে এসব পণ্যের আমদানি ব্যয় কমবে, যা ভোক্তা পর্যায়ে দাম কমাতে সহায়তা করবে। এর ফলে চীন থেকে সস্তা পণ্য আমদানি অনেক বেড়ে যাতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে৷
তবে আমদানি মূল্য বাড়লে বা বেশি দামে পণ্য আমদানি করা হলে সম্পূরক শুল্কে প্রভাব ভোক্তা পর্যায়ে পড়বে না।
অর্থমন্ত্রী তাঁর বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ আগামী ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। ওই আইনে সম্পূরক শুল্কের খাত ও হার সম্পর্কে যে বিধান করা হয়েছে, তার আলোকে এবং স্থানীয় শিল্পের সহনীয় ক্ষমতা বিবেচনায় রেখে অসম ট্যারিফ যৌক্তিকীকরণের লক্ষ্যে আমদানি পর্যায়ে বিদ্যমান শুল্কহারসমূহ হ্রাস করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান সম্পূরক শুল্ক হার সহনীয় মাত্রায় কমিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে।